ঠোঁটের
আদরে
কোন
এক নিশুতি রাতে যে তুমি ধরেছিলে হাত
তোমার
তুমিকে আমার আমিতে চেয়েছিলাম সারারাত
তুমি
বললে কপালে এঁকে দাও চাঁদ
আর আমি
চাঁদাঙ্কন শেষে ঠোঁটের আদরে
পাহাড়
চিড়ে নামিয়ে আনি ঝর্ণা।
তুমি
বললে তোমার চোখে দেখে নিই আকাশ
বলি
কী আমি- এক সেকেন্ড! চোখ বন্ধ।
তুমি
বললে কল্পনায় নয়!
কী করে
মিশে গেছি তোমার অস্তিত্বে
বড় বড়
নখ, এলোচুল, অবাক চাহনি
জানো
ধ্রুব আমি আকাশ দেখি নি-
দেখেছি
এক উদভ্রান্ত তোমায়!
আমি
বলি- চোখের চাহিদা যদি ধরতে না জানো
পড়তে
না জানো আমায়। অবুঝ ক্রন্দন যদি না শোনা যায়?
কল্পনা
সে অলীক। আর মুহূর্তেই দেখি তুমি পেঁচিয়ে ধরো আমায়।
এতোটা বেলা গেল
উত্তাল যৌবনে বাড়ির
পাশে লাগানো আম গাছে
বছর বছর মকুল আসে,
ফুল ফোটে
প্রাপ্তির নোঙরে
ওঠে, সবার মুখে হাসি
এ কী কাচা পাকা আম।
কী সুন্দর ফুল। আর
সেইসব লেবুতে চলে যায়
ছোট্ট পরিবারের প্রতি
বছরের চাহিদা।
পুকুরে ছাড়া মাছগুলোও
বেশ বড়
বাড়ছে তরতর করে।
অথচ এতোটা বেলা গেল!
ভালোবাসার বীজ বুনা
এই হৃদয়ে
এখনও মাটি ভেদ করে
জেগে ওঠে নি প্রেম।
চারদিক থেকে ওড়ে
আসে না মিস্টি কোন সুর
কানেকানে ফিসফিসিয়ে
কেউ বলে নি-
এই! ও মা!
কেউ বলে নি- আজ ফিরবে
সকাল সকাল!
পায়ের নাচনে
কুড়িয়ে আনি নি নতুন
কোন ফুল
বিল থেকে তুলে আনি
নি শাপলা
ঢাকা থেকে নিয়ে যাই
নি কড়া কোন পারফিউম
অথচ এ-কী গন্ধ তোমার
শরীরে জুড়ে-
ছুঁয়ে দেয়ার পর মৌ
মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছিল ঘরময়
নগ্নতায় নেচে উঠা
প্রকৃতির আদরে
আকাশ ভেঙে আসা বজ্রপাতে
দ্রিমদ্রিম
দুলে ওঠছিল বুক,
বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ে ঐকান্তিক সুখ
আর আমিও পায়ের নাচনে-
চাষের লাঙল হয়ে,
তুলে ধরি শষ্য।
সেদিন খুব করে কেঁদেছিল
আকাশ
খুব করে হেসে উঠে
দখিনা বাতাস
পশ্চিমে হওয়ায়ও মিষ্টি
সুর
স্মৃতি! স্মৃতিরা
সব ভেসে যায় দূর। বহুদূর!
চলে আসার পর ভুলে
গিয়েছো সব, ভুলে গেছি গন্ধক
যেমন ভুলেছে স্মৃতি,
স্মৃতির অন্তরালে লুকিয়ে থাকা ইতি।
অরুর চোখ দুটি চাঁদ
সমুদ্রের স্পর্শ
পেয়ে নদী হয় অরু
নির্জন পাহাড়ে তার
একাকীত্বের শুরু
রাতের প্রার্থনাই
একাকিত্বই চেয়েছে অরু
একান্তে ছুঁয়ে দেয়
গুল্ম লতা সাজানো তরু।
অরু এখন পাহাড়ে থাকে-
পাহাড়ি তরুণের স্পর্শে
পেয়েছে ছোট্ট ঘর
সে ঘরে রোজ রাতে
মেঘ এসে ছুঁয়ে যায় অরুর গাল
ভোরের আলোতে ঠোঁটে
তার ঝিলিক দেয় এক ফোঁটা শিশির।
ব্রহ্মপূত্র পাড়ের
ছেলে আমি, অরু পদ্মার পদ্মবতী
সেদিনের সেই রাতে
সমুদ্রে নেমে অরু হয় নদী
থামে নি আর- বইছে!
বাতাসের মতো, পাল
তোলা নৌকার মতো।
পাহাড় থেকে কল আসে
অরুর। ও প্রান্তে চিরচেনা সুর।
প্রশ্নে বিস্ময়!
কেমন আছো? কতোদিন?
উত্তরে বলি- বইছে
বাতাসের মতো। তোমার মতো।
বাহ! ভবিষ্যৎ? পরিকল্পনা
নেই।
ছক আঁকায় বৈরি বাতাসে
কেবল শূন্যতা।
বলে অরু, নদীর মতো
বয়ে যাও। বইতে দিয়েছো যেমন।
অরু! এই অরু। শুনছি-
বলো।
আকস্মিক মনে হয় তোমার
চোখ দুটি চাঁদ
অর্ধেকটা নয়, হৃদয়ের
পুরোটা জুড়ে তুমি
এখনও সেই সমুদ্রপাড়ের
উত্তাল রাতের মতো
পাহাড়ে কাটানো কোন
এক রাতের মতো
নৈ:শব্দ্যের অন্ধকারে
বুনে যাওয়া শব্দের মতো
উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকা
তোমার স্থির দেহের মতো
আমি তুমি মিশে আছি
উত্তাল বাতাসে
নদীর বয়ে যাওয়ায়,
সমুদ্রের উত্তাল গর্জনে
মিশে আছি বিপদ সংকেত
ছাড়িয়ে প্রবলভাবে ধেয়ে আসা মহাপ্রলয়ে।
সঙ্গীহীন
পতিত সূচকে
নিয়ম
করে ভোর আসে
নিয়মেই
রাত দিন প্রত্যহ
সবকিছু
ঠিকঠাক
অথচ
কী অগোছালো এই বুক সেলফ
ফাঁকেফাঁকে
জমেছে ধূলো
ল্যাম্পটাও
নষ্ট হলো বেশ ক'দিন
অন্ধকারে
আমি কেবল অন্ধকার হাতড়ে বেড়াই
রাতভোর
প্যাঁচা হয়ে জেগে থাকি কার্নিশে
দেখে
যাই ঘুমিয়ে যাওয়া শহর
স্বপ্ন
দেখে যাওয়া আমাদের এই শহরে জেগে থাকা অগণিত কুকুর
জেগে
থাকা নাইট গার্ড
সম্মুখের ব্যালকনিতে আঙুলের ফাঁকে উড়তে থাকা ধোয়া
নাক
বন্ধ হয়ে আসা গাজার গন্ধ
সবকিছুই
ঠিকঠাক
বরং
চারদিকে ফুঁসে উঠছে অর্থনীতি
ক্রমবর্ধমান
সকল সূচক
আমিই
কেবল শেয়ার বাজারের মত
কোন
দৈব চালই আসছে না কাজে
কোন
ক্রমেই বাতাস বয় না রঙিন সাজে
কেবল
নিকষ অন্ধকার, সাদাকালো, বিমর্ষ
যেন
এক ভঙ্গুর অর্থনীতি, সঙ্গীহীন পতিত সূচক!
__________________________________
No comments:
Post a Comment