কোথায় কি!

09 April 2017

চন্দনকৃষ্ণ পাল




ভ্রমণ, যান্ত্রিক আর্তনাদ নিয়ে
আনন্দময় শুভযাত্রা মুখ থুবড়ে পড়ে এই দীর্ঘ হাইওয়েতে, থেঁতলানো ট্রাক বাস কান্নায় ভেঙে পড়ে- যান্ত্রিক সুরে সুরে আমরা অবাক হই, মর্মভেদ করে এক তীব্র আর্তনাদ ঘেন্নায় আরেকবার অভিশাপ বর্ষণ মানুষের প্রতি।
 থকথকে রক্ত ঐ জমে আছে পিচের শরীরে। জল নেই,কালো রক্তের দাগ যাচ্ছেনা মোছা, রক্তাক্ত মানুষের ছবিগুলো হেঁটে যায় অজানা গন্তব্যে। আমাদের নিশ্চুপ অভিব্যক্তি দেখে দেখে বিমর্ষ আকাশ বাতাস।
রিং টোন চমক ভাঙালে কেউ সচেতন হই, নিজেদের বাস্তবের পথিক ভাবতেই চিন্তাস্রোত গতিশীল হয়- হর্ণ চেপে ট্রাফিক সচেতন করি, অনেক দূরের যাত্রা, অপেক্ষায় অজস্র সুজন....।
যান্ত্রিক আর্তনাদ পিছনে ফেলে রেখে কালো পিচে চোখ মেলে রাখি- সবুজ আজ একা একা বিষণ্নতার গাঢ় খোলসে দেখি নিজেকে জড়ায়!




রহীম শাহ, প্রিয়জন তোমার আমার
কাশফুল ভেবে ভুল করি আজকাল
আসলে মাথার চুল ভুল করে হয়ে গেছে শাদা,
চেহারায় তীব্র যুবক তিনি কপালে পড়েনি কোন ভাঁজ
কলমের নিব থেকে ঝরছেই অবিরল গদ্য-পদ্য-ছড়া
আরো কত কিছু, কি করে হচ্ছে সব সেও এক ধাঁধাঁ!

দিব্যি উড়ছেন আকাশে বাতাসে, সাথে
রঙিন সেলফিতে মোহময় হাসি
শিশু-তরুণ আর যুবক-যুবতি সব্বাই
ঝুকছেন তার কাছে,হাসিতে দিগন্ত ছোঁয়া ভালোবাসা-
আসরেও মধ্যমণি,স্মৃতিতে হাজারো কবিতা
গেঁথে রেখেছেন অদ্যাবধি-
কি করে সম্ভব বলতেই হাসিতে বুঝিয়ে দেন
আছে কোন গূঢ় রহস্য যা কেউই জানে না।
জানবার প্রয়োজনও নেই প্রিয় গাল্পিক,ছড়াকার
প্রিয়জন আমার তোমার,শুধু ছায়াতেই রেখো গ্রীষ্মকালে-
তীব্র ঐ শীতে দিও একটু উত্তাপ.......

আর এই মৃদু হাসি লেগে যেন থাকে সারা মুখে।



সে আসুক ,না হয়...
আমাদের শীত ছিলো বরফ ছোঁয়ার মতো নীল
সকালে কুয়াশার বিন্দু হয়ে ঘাসেতে করতো ঝিলমিল
শত্রুর মতো তার দাঁত এসে কামড়ে ধরতো দুই কানে
বিকেলের পুরো মাঠ স্তরে  স্তরে সাদা তার গানে
আমরা অবাক হলে তার কিছু আসতো যেতো না
 সে খুব সাহসী ছিলো আমাদের মতো সে হুমড়ি খেতো না
শেয়ালেরা ভয় পেতো, মাঝরাতে কান্নার রোল
সন্ধ্যেয় কীর্তন শেষ, বন্ধ হতো ঘন্টা আর ঢোল
শীতের জিহ্বায় ধার ছিলো, শুষে নিতো ডোবাদের জল
বিষাদিত পুকুরের শত চোখ করতো শুধুই ছলছল
শরীরে খড়িচিহ্ন এঁকে দিত শীত হতভাগা
লাল চোখ মেছুয়ার হাঁক, ঢুলু ঢুলু চোখ রাতজাগা
ছোট মাছ খুব মজা, ভাগা কিনে বাড়ি যায় সব
ফুল গাছ ম্রিয়মাণ, বিবর্ণ  ফুলদের টব
গাছদের পাতারা বিষাদে বিষাদিত ঠিক
দুপুরের পরপরই সব পাখি ঘরে ফিরে,অন্ধকার পশ্চিম দিক
ছোট দিন বড় রাত, মাঝরাতে শিশিরের ঝরে পড়া টিনে
আকাশ বাতাস জোড়া বিষণ্ণতা ছুঁয়ে থাকে রাত আর দিনে।

তোমাদের শীত কই আজ? কোন দেশে পালিয়েছে সে?
শৈত্য প্রবাহ মানে শীত,আজকাল বলে যায় যে-
তাকে বলো সাইবেরিয়া থেকে আসুক সে ঘুরে
গেয়ে আসুক গান সাদা সাদ ভালুকের সুরে!
লেপ মোড়ানো সেই শীত দাও পৌষ সংক্রান্তির খোলা ভোরে
সে না আসলে তুমি আমাকে পৌঁছে দাও তার সেই দোরে।


No comments:

Post a Comment