উড়ছে মেঘের পালক শ্রাবণের মাঠে
উড়ছে মেঘের পালক শ্রাবণের মাঠে, আঁধারে পুড়ছে আলো বৈকালিক
প্রিয়টানে
সবকটি জানালা খুলে গেলে রোষাবেশে, মুঠো ভরা আর্তি ঢুকে
পড়ে কঙ্কণ সুরতানে
ঝরে গেলে দগ্ধ অশ্রু বিষাদ অনুরণনে, ঝাঁক সাজবাতি জোনাক
কুড়িয়ে আনে
অমন করে ফেলে গেলে চিহ্ন হৃত-পাথরে, শুধু ছুঁয়ে দ্যাখ
রক্ত-রঙ দীপ্ত অভিমানে
ও চোখের উদ্যানে সবুজ গাছালি মৃদুমন্দ পায়ে, বহুকাল
পরে সে খুলেছে মন বিচরণে
একদল হরিণ শাবক দাঁড়ায় সচকিত চোখে, ভোরের ভেজা তৃণ মেখে
খোঁজে সমীরণে
রুপোলী মাছ শিকারের কৌশল রেখে গেলে, স্রোত এসে খুঁজে
যায় তিথির অবলম্বনে
এক মাঘী পূর্ণিমায় আকাশ পাশে হাঁটলে, পাল তুলে হৃতমনা
নৌকা বয়ে যায় উজানে
শৈশবের সব ফুল স্মৃতির পৃষ্ঠা ভুলে গেলে, শুকনো পাতায়
লেগে থাকে ধুপ সন্ধ্যা নভমনে
কুয়াশা কাল পেরুলে হঠাৎ উজ্জ্বল আঁধারে, জপে যাবে এক
শুক্লপক্ষ সে নাম প্রাণমনে
এক মরু মিছিল রেখে মৃদু সুবেহসাদিকে, এক ভীরু খরগোশের
মতো লুকিয়ে যাবে সন্তর্পণে
সিক্ত বেহালার ভৈরবী সাজ
তুমি চাইলে
কতটা মেঘ পথিক হয়ে ওঠে
এক বৃষ্টি-বারান্দা
হঠাৎ নদী হয়ে বইলে
অমন সিক্ত
বেহালা উজানেতে বাইলে
সব অভিমান
শীতের পেয়ালা ভ’রে ওঠে
তুমি গাইলেই
বাদল, রাগিণীর সুরে বাজে
উদ্যান;
পাইনের বাকল আঁচল হয়ে উঠলে
জল কল্লোল
সোনালি বৈভব মুছে ফেললে
নকশি হাতে
আলোরা ছোটে ভৈরবী সাজে
তুমি ভেড়ালে
ঢেউ, যাতনা নদী হয়ে নাচে
পাথর জল
হরিৎ শরতের কোনো মহাকালে
বৃষ্টি
মাখা সফেদ পারাবাত সামনে দাঁড়ালে
আরেকবার
অনঘ পরান পাগল হয়ে বাঁচে
রংতুলির জলসায় আনন্দ মহল
হেমেন মজুমদারের
ক্যানভাসেই এমন সিক্ত বসনারা ঝরিয়ে যায় বহুমাত্রিক
রামধনু।
সমুদ্র শরীরে জড়িয়ে অঙ্গনা কখনও হয়ে ওঠে অবিরাম ইরোটিক
প্লাবিত
ঝর্ণারাশি গতিপথ বদলে ন্যায়, রুপালি লিরিল বালিকাদের সৌম্য
দেখে। ঝুলন্ত
মেঘ সলিটারি রিপারের গুঞ্জন শুনে আরও কাছাকাছি ভৌম
নেমে এলে,
অন্তর্বাসের গোপন চৌকাঠে ছাপ ফেলে যায় বয়ঃসন্ধি বালিকা
জিবনানন্দীয়
পুকুর ঘাট এখন শোবার ঘরেই। কৃত্রিম জলজ ধারায়
শুধু সিক্ত
এখন ত্রিমাত্রিক তনু। ভ্যানগগ পিকাসো; চকচকে রং মেখে
হয়েছিল
পশ্চিমের। রূপের বাঙলায় সুলতান দেখেছিলেন বিশালকায়
রংসিক্ত
রমণী। অঙ্গে জমে ছিল হিম পুলক। উন্মাদনা ফুটেছিল চিবুকে
এখন নগ্ন
পুকুর-জল আর সিক্ত আঁচলে সাজবে কোন সে পোড়ামুখি
কোন বেহায়াপানা
এখন দুরন্ত পায়ে; ঝংকার মনে রাখবে জল দাপানি
পরাগ মাখা শাশ্বত বিকেল
...তবু
শীত ঝরা বিকেল গুলো অন্যরকম ছিল, বসন্ত আগমনী ভাব ছিল।
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় পলাশ পরাগ - উড়তে উড়তে
রাজপথ পেরিয়ে যেতে চাইলে - এক ঝাঁক শকুন শ্যেন দৃষ্টি
ছড়ায়। বাতাসের শরীরে আটকে যায় তাপের দগ্ধ ছোঁয়া।
এখন ভোর হলে নিঃসঙ্কোচে বেরিয়ে পড়ে মুঠো ভরা ফুলেল শৈশব,
মায়াবী ঘাসের রং মেখে হেঁটে যায় স্নাত শিশির। প্রভাত ফেরীর সুর গুঞ্জন আত্মার শ্রান্তি
গুলো লিখে রাখে আরেকটি অধ্যায়ের সৃজনলিপি।
অধ্যায় পার হতে হতে পাণ্ডুলিপি খুঁড়ে বেরিয়ে পড়ে শাশ্বত
ইতিবৃত্ত। মুঠোভরা সূর্যগুড়ো উড়ে যায় শ্রান্তির চূড়োয়। অবনত মনের দেয়াল সাদা বক ছড়িয়ে
দিয়ে যায় প্রশান্তির হিমেল আলোছায়া।
No comments:
Post a Comment