কোথায় কি!

22 August 2017

অপরাহ্ণ সুসমিতো



আমার মৃত্যু সংবাদ লিখছি। খটাখট টাইপ করছি। নামের বানান লিখতে গিয়ে উত্তেজনায় অপরাহ্ন লিখে ফেলছি যেমন অধিকাংশ বন্ধুজন লেখেন। আবার টাইপ করতে গিয়ে নিজের কাছেই দ্বন্দ্ব হচ্ছে। কম্পিউটারে বানান ভুলে সমস্যা নেই,মুহূর্তে ঠিক করতে পারছি।
অগ্রিম দেখতে পাচ্ছি নূরজাহান চক্রবর্তী লাইক দিচ্ছেন। জাহ্নবী মাসী সংক্ষেপে আরআইপি লিখছেন। যে সূচালু আহমেদের কাছে ১৪৩০০ টাকা পেতাম,তিনি সবচেয়ে বড় কমেন্ট লিখছেন বিনিয়ে ইনিয়ে। মধু ভাই এখনো জানেন না। উনি প্রতি মাসের ২৮ তারিখ বেতন পান,সেদিন ফেসবুকে লগইন করেন। উনি খুব কষ্ট পাবেন ভাবতেই একটা কষ্ট কাবেরী নদীর মতো তিরতির করল বুকের হিমালয় পাদদেশে ।
আমি যে মন্ত্রণালয়ে কাজ করি,সেখানে বেশুমার ঘুষ। সহকর্মীরা চটজলদি চাঁদা দিতে শুরু করেন স্মরণ সভার । ঘুষখোর লোকজন খুব উদার হয় এরকম দান খয়রাতে। বেতনের টাকায় গয়া কাশী যায়,হজ্ব করে আর ঘুষের টাকায় বউকে বাদামী ব্রা কিনে দেয়। ফেসিয়াল করে, এবেনটি বায়স্কোপ করে ।
আমার ড: যে হাসপাতালে কাজ করেন সেখানে ৮০% কর্মকর্তা কর্মচারী পরষ্পর প্রেম করেন। ড: আমার ডেথ সার্টিফিকেট খসখস লিখতে লিখতে খিকখিক হাসেন ;
: প্রেমের আবার প্রথম শেষ কি?
সামরান হুদা মাথা নিচু করে গল্প লিখছেন পাতার পর পাতা। মনটা রাজশাহী আমের মতো টুপলু হয়ে আছে; আহা সামরানের লেখা আর পড়বো না। মৃত্যুর পরেও আমার ইমেইল একই পাসওয়ার্ড থাকবে। খনাকে কি পাসওয়ার্ড দিয়ে যাব ? সে আমার হয়ে জবাব দিবে ।
খনা ছলছল কাঁদতে কাঁদতে বলবে;
: এই আমি মানস কন্যা,কতো মানুষ স্বপ্নে নদীর ছবি আঁকে। তুমি এঁকেছিলে ছায়ায় ছায়ায় আমাকে। দাও রক্ত দাও এক প্রভু জীবন।

হাঁটতে হাঁটতে পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম,বাসার চাবির রিং,ফোনে অণু টেক্সট। তুমি ঘরে ফিরছো। কচুর লতি দিয়ে হাপুস হুপুস ভাত খাচ্ছো। খাবার সময় কাউকে সুন্দর লাগে না কেবল ছোট দুধের শিশু ছাড়া।

মৃত্তিকা নতুন ছবি পোস্ট করেছে। এতো মুটিয়েছে তবুও শরণার্থী ভক্তের থকথকে দল কমেন্টের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। এতো কবি আমাদের বাংলা ভাষায়। টেলিভিশনে কবিতা, গুলিস্তানে কবিতা, রিক্সায় জড়াজড়ি কবিতা, আওয়ামী বিএনপি কবিতা, ফালতু কবিতা, নমোশুদ্র কবিতা, সৈয়দ কবিতা...

এইসব পাঠ করে করেই নিজস্ব মৃত্যুর নোট লিখছি...
আহা..

No comments:

Post a Comment