বিষণ্ণ অর্কেস্ট্রার সুর
‘চাঁদের উপর
জোনাকির জ্বালে জ্বালে সেদ্ধ হচ্ছে আউসের রাঙা চাল’–
অস্বচ্ছ পুরনো ক্যানভাসে আঁকা নানারঙের মায়াবী স্নান! সাদা মৃত্তিকার
ভিতর ঘুমিয়ে থাকা পুণ্যবতী মায়া গাছগুলো কৃষ্ণপক্ষের জ্যোৎস্নায় গান গায়। নীলনদ
পাড়ে ত্রিপল টাঙ্গিয়ে বসে আছে একটি জিপসি জাদুকর! একশ বছরের নিরবতা ভেঙে বাজিয়ে চলেছে বিষণ্ণ অর্কেস্ট্রার
সুর ; আর দাঁড়িকমা সমেত নিজের আলখেল্লা পরে ডুবে যাচ্ছে এক গোলাপি সভ্যতা...
হঠাৎ
বৃষ্টির মতো মিহিস্মৃতি এনে
ঝরাপাতা
বনে হেঁটে যায় কোন কালোছায়া আর আমি উইথড্রয়াল সিনড্রোমে ভুগে ভুগে
ডায়রির পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে পড়ে চলেছি এমনই সব জাদু-বাস্তবতা ;
যারা সব
বন্দী হয়ে ছিল সময়ের দেয়ালের ভিতর।
নিজেকে খুঁজে ফিরি
শামুকের বিলম্ব লয়ে কুঞ্জের
পথে চলেছে রাজহাঁস! আর আমার রোদেলা নিদ্রায়
জড়ানো দুচোখে সুরমার টান। অলস বিকেলগুলো পা ছড়িয়ে বসে থাকে রোয়াকে যখন;
তুমি স্কচ হাতে স্কেচ করে
চলেছো, পিঙ্গল বাদাম বনের ভেজা বাকলের গায়।
আমার হৃদয়ে গোপন বৈঠকীখানায় অঝোরে ঝরে পড়ে উষ্ণ কুয়াশার জল
এই মধুমাসে মহুয়াবনের ভিতর; কুন্দল পায়ে নাচে পানকৌড়ির দল!
এমনই কোনদিন রিফিউজি ক্যাম্প থেকে
আমি তাকিয়ে থেকেছি অবিরাম অতীতের দিকে,
আর প্লাটফর্ম ছেড়ে গেছে আমাকে।
আর প্লাটফর্ম ছেড়ে গেছে আমাকে।
সুদীর্ঘ
অনুপস্থিতির পর
চেনা পথগুলো
শূণ্যে ভেসে থাকে
অথচ আমি তো হেটে চলেছি ঘোরের ভিতর নিয়ত সেদিকেই...
চেনা পথগুলো
শূণ্যে ভেসে থাকে
অথচ আমি তো হেটে চলেছি ঘোরের ভিতর নিয়ত সেদিকেই...
অনলের দাবদাহ
এ বিমূর্ত সকালের গায়ে ঢেউ তোলে রঙধনুর
স্বপ্ন ক্যানভাসের গ্রীবার রেখায়। গমরঙা মায়াবী সংঘাত ভেসে থাকে নাভিপদ্মে । সূর্যকনার মতোই মানবজন্ম হয়েছে বিশুদ্ধ
মধ্যরাতে।
এভাবে হৃদয় নিংড়ানোর মতো ফোঁটা ফোঁটা অহংকারে আকুলমায়া জমে আছে
ডাহুকডাকা অনাদি ভোরের বিষণ্ণ আলোর কণার উৎসমুখে !
তুমি কী দেখেছো ?
কতো জলজ কন্যারা যেখানে নিরুদ্দেশ হয় মহাশূন্যের স্ট্রাটোস্ফিয়ারে....!
নীল চৈতালি বাতাসে মুখ লুকায় বারবার কুয়াসা মানবীর মতো ;
আমিও তখন নদীর অলস সে নীরবতায় ভেসে থাকি......
তীব্র অনলের দাবদাহে।।
অব্যক্ত দহন
শীতের বিস্তীর্ণ মাঠ পের
হয়ে দূরে একা জেগে থাকে একটি বিষণ্ণ কুঁড়েঘর। শুঁকনো বাদাম পাতায় পাতায় ছেয়ে গেছে
গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে থাকা উঠোন।
বেদনা-আনন্দ-অশ্রুর নহর সব একসাথে অভ্রের মতোই মাখামাখি হয়ে থাকে। আনন্দের খোসা
খুলতেই দেখা যায় বেদনার নীল বীজ। আর বেদনার পরতে পরতে ছড়িয়ে পড়েছে
নিত্যদিনের অব্যক্ত শ্লোক। ঘুমের ভিতরে কখনো
কখনো হারায় অদেখা স্বপ্ন! এর মাঝে রোজই ভোর হয়। মন কেমন কেমন করা দুপুর গড়িয়ে
সোনালি আলোর সন্ধ্যা নেমে আসে দুচোখের পাতার উপর। ফি বছর আসে উদাস হাওয়ায় হেমন্ত-বসন্ত,
শীতের শ্রাবণ। নুনের প্রলেপ মাখে রঙহীন বেওয়ারিশ মন!
আমি দূর থেকে দেখি–
বাতাসে ফুলের সৌরভ, অথচ
কী ভীষণ গম্ভীর! করুণ আর্তনাদ! আর
হাহাকার ছড়ানো জীবন।
No comments:
Post a Comment