[ কবি সেলিম রেজা
এই সময়ের একজন প্রতিশ্রুতিশীল কবি। দীর্ঘদিন
ধরেই তিনি সাহিত্য সাধনা করে আসছেন, লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সম্পাদনাও করেন ইতোমধ্যে
বেশ কিছু সাহিত্য কাগজ তিনি সম্পাদনা করেছেন। কবি’র জন্মদিনে সংবেদ্য’র পক্ষ থেকে রইলো
আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং প্রকাশিত হলো কবি’র লেখা
একগুচ্ছ কবিতা]
কী হবে আর বেঁচে!
কী হবে আর বেঁচে!
তুমিই যদি হারাও নিকষ অন্ধকারে;
চোখের আড়াল হবেই যখন
এত্ত স্মৃতি কেনই বা দিলে ?
তুমিই যদি হারাও নিকষ অন্ধকারে;
চোখের আড়াল হবেই যখন
এত্ত স্মৃতি কেনই বা দিলে ?
পরাজয়
একদম মানায় না তোমাকে
জানি
দুঃখ পুষে রাখো অহোরাত্রি
নিঝুম
রাতে জেগে থাকো একা একা
নিভৃতে
খুলে বসো কথার পুরান সিন্দুক
মনে হয়
ভুলে আছো মিলনের ঠিকানা
প্রথম
যেদিন চোখাচোখি ছুটির শেষ প্রহরে
জিজ্ঞেস
করলে—দেখছেন
কী!
তদুত্তরে
বললাম কাজল কালো স্বপ্নিল দু’চোখ
কী হবে
আর বেঁচে!
যদি টের
না পাও আমার উপস্থিতি
বুঝতে না
পার জীবন বৃক্ষের শেকড় আমি
এত্ত
ভালোবাসা কেনই বা বাসলে ?
দিনলিপি-২০০
চশমাটা
ভুল করেই ফেলে এসেছি
ঝাপসা
চোখে ভেঙেছি সিঁড়ি—পথ
চোখ
মুছতে মুছতে অসহ্য ঝাপসায়
বৃষ্টিজলে
ভেজা ফুটপাথ; রিমোটে—
ঘুরে
স্টার জলসা, জি-সিনেমা
শেষমেশ
বাজারের ব্যাগ হাতে
পেঁয়াজের
ঝাঁজ কিনতে হিমশিম;
বিকিকিনি
চলে হরদম বিবর্ণ প্যাকে
হালের
ক্রেজ ফগ বডি স্প্রে আর
বিগার
ডটেড কনডম...
শরীর ছোঁবো না , হৃদয় ছোঁবো
টিনের ছাউনিটা ঠিক
আমগাছের নিচে
পাশেই কমনরুম তার
বিপরীতে শৌচাগার
ক্লাসের ফাঁকে দৃষ্টি
অদম্য এক চাহনি
পড়তে-পড়াতে একে অন্যের
দিকে তাকানো
আশেপাশের পড়ার টেবিলে
লজ্জাবতী লতা
যেন খিলবিল করে লজ্জায়
শরমে নুয়ে পড়া কেউ ;
ক্রোমোজম এক্সএক্স
কিংবা এক্সওয়াই বংশ বিস্তার
উজানের ঢেউ আছড়ে পড়ে ভীষণ
লাজুকতায়
নিটোল শরীরে শাড়ির
আঁচল মাথায় স্কার্ফ
স্বপ্নাতুর চোখে
তাকিয়ে শুধুই স্বপ্নবোনা
আর না ছুঁয়েই টপকে
যাওয়া সুখের দেয়াল
তখনকার ভালোবাসা বলতে
তোমাকেই বুঝি
সেই অনেক বছর পেরিয়ে
ইচ্ছেঘুড়ি বলতে এখনো
সেই তুমি;
সেদিনের অবুঝ মন এখন
বয়স্ক বালক
অতীতে ফিরে যাওয়া বার
বার
দেহতত্ত্বে নয়
মননতত্ত্বে তুমি এখনো
সেই অসহ্য সুন্দরী
নিঃশব্দ বলয়
বেহিসেবি ভালোবাসার
একমাত্র স্বপ্ন সারথি
খুব জানতে ইচ্ছে করে—
ক্যামন আছে স্মৃতির
সুতোয় আটকে পড়া
নিষেধের সীমানা!
এখনো কী মাদকতায় ভরা
সুগন্ধি সাবান
শরীরের আমোদী ঘ্রাণ !
নাকে তখনো উঠেনি
নাকফুল;
শুধুই তর্জনীর আংটি, চিকন বেল্টের হাতঘড়ি
শরীর ছোঁবো না , হৃদয়
ছোঁবো
কোন এক পড়ন্ত বিকেলে
ঝাউসারি পেরিয়ে আলপথ
দূরে কাশবন মুঠোভর্তি
ঘাসফুল
যদি চাও এনে দেবো
মেঘের পালক।
পোড়ানো সিগারেট
একটা সিগারেট দেবে! দাও
দীর্ঘদিন ফুঁক দিই না
সুখটানে পুষিয়ে নেবো
মেলাদিন ঠোঁটে ঠোঁট বসাও না
আদরে চুমো এঁকে দাও না
ছাই হয়ে ঝরে যাক
বিরহের অনিবার্য বেদনা
নেশায় তৃষ্ণায় মাতাল হই
প্রেম নাই বা দিলে
একটা জ্বলন্ত সিগারেট দাও
জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাই
দীর্ঘদিন ফুঁক দিই না
সুখটানে পুষিয়ে নেবো
মেলাদিন ঠোঁটে ঠোঁট বসাও না
আদরে চুমো এঁকে দাও না
ছাই হয়ে ঝরে যাক
বিরহের অনিবার্য বেদনা
নেশায় তৃষ্ণায় মাতাল হই
প্রেম নাই বা দিলে
একটা জ্বলন্ত সিগারেট দাও
জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাই
দিনলিপি—১২৩
আজ একা—একাই না হয় কাঁদুক বেদনার ভারে
হাউমাউ করে কেঁদে অশ্রুনদীতে ভাসালে বুক
নৈঃশব্দ্যেই আজ না হয় থাকুক আমার ভাগে
স্বপ্ন ছাড়াই না হয় বাঁচুক প্রতিদিনের বিশ্বাস
ইদানীং- ৯৮
যাবে? যাও
চুম্বনের দাগ মুছে যেও
যেতে যেতে—
শিখিয়ে গেলে ছলাকলা
আর ভুলে যাওয়ার মন্ত্র।
চুম্বনের দাগ মুছে যেও
যেতে যেতে—
শিখিয়ে গেলে ছলাকলা
আর ভুলে যাওয়ার মন্ত্র।
ফেরা হলো না আর
ফিরে যেতে বললেই কী ফেরা যায়!
এত্ত সাহস কী করে পায়— বড়ো দুঃসময়;
এত্ত সাহস কী করে পায়— বড়ো দুঃসময়;
সময় লাগে
বুঝতে-বুঝাতে, নিখোঁজ বেবাক কিছু
মনে হয়
দূরের আকাশ—পরিচয়, বৃক্ষ-পাথর
বিদীর্ণ বুকে কাগজে আঁকা সরুপথের চিহ্ন
হেঁটে যায় তাতানো দুপুর বেদনার ঠোঁট জুড়ে
বিদীর্ণ বুকে কাগজে আঁকা সরুপথের চিহ্ন
হেঁটে যায় তাতানো দুপুর বেদনার ঠোঁট জুড়ে
ফিরে যেতে বললেই কী ফেরা যায়!
সন্ধ্যায়
পাখি নীড়ে ফিরলেও দিন তো ফিরে না!
আলোর
খোঁজে বেরিয়ে ভীষণ অন্ধকারে
দ্বিধায়
হতাশার কোমর জড়িয়ে আছে ভবিতব্য
আশা
জাগানিয়া স্বপ্নে করে জিজ্ঞেস—
সুদিন আর
কতদূর!
কতদূর
কৃষ্ণচুড়া সুখ!
দিনলিপি—১০৮
টিনএজ
সময় বিলবোর্ড জুড়ে বুকের চশমা
হরেকরকম রঙে এক একটি উদোম শরীর
মডেলিং বালিকা নয় যেন শিকারী সি—গাল
অন্তর্বাস খুলে তাকিয়ে আছে স্বপ্নের চারা।
হরেকরকম রঙে এক একটি উদোম শরীর
মডেলিং বালিকা নয় যেন শিকারী সি—গাল
অন্তর্বাস খুলে তাকিয়ে আছে স্বপ্নের চারা।
_____________________________________________________
পরিচিতিঃ
সেলিম রেজা
কবি ও সম্পাদক
জন্ম: ২ জানুয়ারি, চট্টগ্রাম জেলার পতেঙ্গা থানার দক্ষিণ পতেঙ্গা- নাজির পাড়া, ৪১নং ওয়ার্ড।
পৈতৃক ও মাতৃনিবাস একই। স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা: ইউনুছ ভিলা, আছদ আলী সারাং এর বাড়ী,
দক্ষিণ পতেঙ্গা-নাজির পাড়া, ৪১নং ওয়ার্ড, থানা- পতেঙ্গা , জেলা- চট্টগ্রাম। পিতা: মোহাম্মদ
ইউনুছ। মাতা : মোছাম্মৎ জয়নাব খাতুন। পেশা: চাকরি, কুয়েত প্রবাসী (প্রজেক্ট ম্যানেজার, তানজিফকো কোম্পানি,
সুবহান-কুয়েত)।
সম্পাদিত
পত্রিকা- ৭ :মৃত্তিকা- (একটি সাহিত্যের কাগজ, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি
২০০৯); বৈশাখ- (বাংলাদেশ দূতাবাস,-কুয়েত,
প্রকাশকাল: বাংলা নববর্ষ-১৪১৪); অভিষেক-
(প্রথম প্রকাশ ২০১০; স্লোগান- (প্রতিবাদী কবিতায় প্রজন্মের বজ্রকণ্ঠ- ফেব্রুয়ারি
২০১৩ ইং , কুয়েত থেকে প্রকাশিত ); দেশান্তর- (প্রথম প্রকাশ অক্টোবর
২০১৩, কুয়েত থেকে প্রকাশিত); মেলবন্ধন- (অশোক দেব-এর সঙ্গে যৌথ, প্রথম প্রকাশ সেপ্টেম্বর ২০০৯); বর্ণমালা- (প্রথম প্রকাশ ডিসেম্বর- ২০১৮)।
লেখার বিষয় : কবিতা ও গল্প।
প্রকাশিত গ্রন্থ -৯ : সপ্তর্ষী নক্ষত্রমালা (কবিতা, ২০০৫); উত্তরণ (কাব্যসংকলন, বইমেলা-২০০৬); কাল উত্তরণ
(কাব্যসংকলন, বইমেলা- ২০০৭); স্বপ্ন
মৃত্তিকায় নবীন ঘাসফুল (কবিতা, বইমেলা- ২০০৯); কবিতা ভেসে আসে বহিমিয়ান বাতাসে (কাব্যসংকলন, বইমেলা-২০১০); ইদানীং এবং অনিন্দিতা
(যৌথ কাব্যসংকলন-২০১২); তবুও কবিতা
(কাব্যসংকলন, বইমেলা- ২০১২); সাত তারার ময়ূখ (যৌথ কাব্যসংকলন-২০১৬); কবি ও কবিতার পড়শি ( কবিতা,বইমেলা-২০১৬)।
পুরস্কার : প্রবাসী সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (কুয়েত-২০০৬)।
বৈশাখী ও মরমী বাউল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পুরস্কার (কুয়েত-২০১২)।
বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েত পুরস্কার (কুয়েত-২০১৫)।
বাংলাদেশ সাহিত্য অঙ্গন পুরস্কার (কুয়েত-
২০১৫)।
মোবাইল :: +৮৮ -০১৮৪৬৪৬৮৬৪৬, +৯৬৫ –
৬০০৫৭৩৭৩।
No comments:
Post a Comment