বর্ণহীন
ধূসর দেয়াল জুড়ে কে আঁকে বর্ণহীন চিত্র?
বুক- পিঠ জাপটে ধরেছে দীঘল কালো রাত
বুকের মাঝ বরাবর ভেদ করে যাচ্ছে অন্ধকার।
পড়ে আছি নিঃস্তব্ধ যেন ডায়নোসারের ফসিল!
জলের স্রোতে ভেসেছে অহঙ্কার—আমিত্ব,
কালের ভাঙনে গেছে সংসার—সুখের বসত ভিটা।
টিনের চুলো, পোড়া মাটির পাতিল, পাতার থালা...
বাঁধের ওপর সংসার।
কাকের চোখের মতো কালো রাত জড়িয়ে ধরে
তৃষ্ণার্ত শরীর, বিষাক্ত চুমু আঁকে পরম মমতায়!
সারা রাত কেটেছে সংশয়ে—আলোহীন,
জীবনের স্বাদ যেন বিষাক্ত, রূপ বর্ণহীন।
জীবিত লাশ—মৃত লাশ
কোন এক তপ্ত দুপুরে,
মানবতার শরীর ছেড়ে গিয়েছিল আত্মা
ডুকরে কেঁদে উঠেছিল চালতা ফুল,
নিমগাছ, পাখি, বুনো শুয়োর সবকিছু;
শুধু কাঁদেনি মানুষ।
ক’দিন পর শরীরে পঁচন ধরলে
চোখের সামনে ছিড়ে খেয়েছিল
শকুন আর শিয়ালের দল
তবুও কাঁদেনি মানুষ!
কেউ করেনি সৎকার সে দেহের।
সেই বিভৎস্য দৃশ্য আমাকে করেছিল
জীবিত লাশ।
সেই থেকে আমি আর আমার মন
বুক ভরে নিচ্ছি অন্ধকারের ঘ্রাণ।
পাখিরা ভুলে গেছে মধুর কলরব
নগরের দেয়ালে আঁকা হতাশার চিত্র,
নারী আর ভালবেসে বাহুডোরে বাঁধে না
কপট—শূন্য বুলিতে
ভালবাসা সরব।
মানুষের নাম বদলে হয়েছে শরনার্থী,
প্রজা, মৌলবাদী আরও কত কি!
কালের কপাট খোলেনি গৃহকর্তা
শুধু জানালায় আসে শুকনো রুটি।
দু’টো শকুন চেয়ে দেখে—
কালের ধুলোয় মিশেছে মানবতার ফসিল।
বিবেক কাঁদতে পারেনা শুধু গোঙানি আসে
জীবিত লাশের নগরে মৃত লাশ ভাসে।
নীল বাস্তবতা
ইন্দ্রিয়ের প্রতি পরতে জমা হচ্ছে আত্মনাদ
দু’চোখ নিষ্পলক ক’ফোঁটা জলের পসরা নিয়ে,
বিধাতাও যেন চুপ থাকে দেখতে বিবাদ
রঙিন স্বপ্ন বিচূর্ণ হয় বেদনার নীল রঙে।
কখনো কি দেখেছ, ভালবাসা ধূসর হতে?
কিম্বা অসহায় অস্তিত্বের ভাঙন...
মৃত স্বপ্নের কঙ্কাল পড়ে থাকে মহাকালের বক্ষে,
তুমি আর আমি অবিরত ঘুরি নিয়তি নক্ষত্রের কক্ষে।।
No comments:
Post a Comment