নীরা প্রতিমা দেবীর এক মাত্র কন্যা। নীরার বয়স যখন দুই বছর নীরার
বাবা ওদের ছেড়ে অন্য সংসার করেন।ছোট্ট নীরা কিছু বোঝার আগেই তার জীবন মাতৃতান্ত্রিক
হয়ে যায়।ভালোবাসার বিয়ে নির্মম পরিহাসে প্রতিমা দেবী সম্বিত হারায়।বাবার অমতে বিয়ে
করার জন্য বাপের বাড়ির চৌকাঠ মাড়ানোর কথা ভুলে যায়।সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে হয়ে
ও বাঁচার লড়াইটা একাই লড়বে মনে মনে এই শপথ নেয় প্রতিমা দেবী।বুকে জগদ্দল পাথর চাপা
দিয়ে সব অনুভূতিগুলোকে পা দিয়ে হত্যা করে।সেলাই স্কুল, গানের টিউশন ছোট্ট নীরা এই
ছিল প্রতিমা দেবীর জীবন।নীরা একটু একটু করে বড় হয়ে ওঠে।পারিপার্শ্বিক প্রশ্নগুলো
নীরার মাথায় দানা বাঁধতে শুরু করে।
নীরার পাঠ্য জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন প্রতিমাদেবী নিজস্ব পরিচয় দিয়ে।নীরার বাবার নামটি কোন ভাবেই জুড়ে দিতে চাননি নীরার নামের সাথে।কোনো স্কুল তা মেনে নেয়নি। হঠাৎ দেখা হয় রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের প্রধানা শিক্ষিকা প্রবাজিকা অমলা প্রাণার সাথে।সব কথা শুনে প্রতিমা দেবীকে তিনি বলেন, "নীরাকে নিয়ে যেন স্কুলে এক দিন আসেন" প্রতিমা দেবী নীরাকে নিয়ে হাজির হন স্কুলে একদিন৷ গেটের মুখে আসতে বাঁধা দেয় দ্বাররক্ষী I পরে ভিতর থেকে অনুমতি আসায় তারা মাতাজীর কাছে হাজির হয়
নীরার পাঠ্য জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন প্রতিমাদেবী নিজস্ব পরিচয় দিয়ে।নীরার বাবার নামটি কোন ভাবেই জুড়ে দিতে চাননি নীরার নামের সাথে।কোনো স্কুল তা মেনে নেয়নি। হঠাৎ দেখা হয় রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের প্রধানা শিক্ষিকা প্রবাজিকা অমলা প্রাণার সাথে।সব কথা শুনে প্রতিমা দেবীকে তিনি বলেন, "নীরাকে নিয়ে যেন স্কুলে এক দিন আসেন" প্রতিমা দেবী নীরাকে নিয়ে হাজির হন স্কুলে একদিন৷ গেটের মুখে আসতে বাঁধা দেয় দ্বাররক্ষী I পরে ভিতর থেকে অনুমতি আসায় তারা মাতাজীর কাছে হাজির হয়
-বসুন,বলুন
কি ব্যাপার?
-মাতাজী আমার এই ছোট্ট মেয়েকে
আপনাদের সাহচর্যে মানুষ করতে চাই। ওর বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।আমি চাই ও আমার পরিচয়ে
মানুষ হোক।
-দেখুন আমাদের এখানে একটা রুলস আছে আমি সেটার বাইরে গিয়ে কতটা কি করতে পারব জানি না তবে আমি চেষ্টা করব।আপনি পরশু আসুন আমি কথা বলে আপনাকে জানাব।
-দেখুন আমাদের এখানে একটা রুলস আছে আমি সেটার বাইরে গিয়ে কতটা কি করতে পারব জানি না তবে আমি চেষ্টা করব।আপনি পরশু আসুন আমি কথা বলে আপনাকে জানাব।
-অজস্র ধন্যবাদ মাতাজী। আজ তবে আসি।
রাস্তায়
আসতে আসতে মনের মধ্যে অদ্ভুত জোর পেলেন প্রতিমা দেবী।
পুরো বিয়য়টা দেখে নীরা হতবাক।মাকে ছেড়ে সে থাকবে কি ভাবে? সেই প্রথম বার মাকে প্রশ্ন করে।
পুরো বিয়য়টা দেখে নীরা হতবাক।মাকে ছেড়ে সে থাকবে কি ভাবে? সেই প্রথম বার মাকে প্রশ্ন করে।
-তোমাকে ছেড়ে আমি থাকব কি
ভাবে মা? আমার যে ঘুমই আসবে না তোমায় ছাড়া।কেন আমাকে এত দূরে একটা স্কুলে ভর্তি করছো?
আমাদের বাড়ির পাশের স্কুলটায় দাও না মা।
-না
বাবা কত ভাল স্কুল জানো এটা? ওই স্কুলে সবাই ভর্তি হতে পারে না। তা ছাড়া আমি তো তোমার
সাথে সপ্তাহে সপ্তাহে দেখা করে যাব তোমার চিন্তা কি? কত বন্ধু পাবে ওখানে। দেখো তোমার
ঠিক ভালো লাগবে।
অবশেষে নীরাকে স্কুলে ভর্তি নেবে বলে জানান মাতাজী।প্রচন্ড অভিমান নিয়ে নীরা স্কুলে যায়। সে দিন মার সাথে একটি কথাও বলেনি নীরা।প্রতিমা দেবী নীরাকে পিতৃ পরিচয় নিয়ে কখন ও জানাননি কোনো কথা।নীরা ও কখনো জানতে চায় নি তার বাবার কথা। পিতৃপরিচয় নিয়ে নানা বঞ্চনার মধ্যে পড়লেও সে কথা কখনও মার কাছে জানায়নি।
নীরা
কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছায়।প্রতিমা দেবীর শারীরিক অবস্থা ক্রমে খারাপ
হতে থাকে।কলেজের গন্ডি শেষ করে নীরা চাকরীর চেষ্টা করে।মার শরীরের কথা ভেবে নীরা মাস্টার্স
পড়ার কথা ভাবেনি।নিজের পছন্দমতো পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়ে প্রতিমা দেবী জীবেনর প্রথম
হাসিটা হাসেন।নীরার স্বামীর চাকরি সূত্রে, নীরা ব্যাঙ্গালোরে যেতে বাধ্য হয়।একাকিত্বকে
সঙ্গী করে প্রতিমা দেবীর পথ চলা আবার শুরু হয়।
হঠাৎ একদিন প্রতিমা দেবীর বাড়িতে এসে উপস্থিত হয় সুনেত্রা দাস। তাঁর কাছে জানতে পারে কিছু দিন আগে নীরার জন্মদাতা বাবা মারা গেছেন।রাগে, তীব্র অভিমানে চোখে জল আসলেও কঠোর ভাবে নিজেকে সামলিয়ে নেন প্রতিমা দেবী। সুনেত্রা দেবীর জরাজীর্ণ চেহারা,পরনে ছিন্ন বস্ত্র দেখে কেমন যেন মায়া হয় প্রতিমা দেবীর।প্রতিমা দেবী সুনেত্রা দেবীকে বললেন,-আপনি আমার ঠিকানা পেলেন কি ভাবে?
–আমি ওনার ব্যাগ ঘাটতে গিয়ে এক দিন আপনাদের বিয়ের ছবি পাই।পিছনে আপনার বাড়ির ঠিকানা লেখা ছিল। নিজের বলতে আমার কেউ নেই।হঠাৎ আপনার কথা মনে হল তাই বাড়ি খুঁজে চলে এলাম।আমার টাকা পয়সা সর্বস্ব ভোগ করে উনি পালিয়ে যাবার সময় পথ দুর্ঘটনায় মারা যান।
সুনেত্রা
দেবীর মুখে এই কথা শুনে বুকের মধ্যে অস্বস্তি অনুভব করেন প্রতিমা দেবী।কোথাও যেন তাদের
দুজনের না পাওয়া গুলো এক স্রোতে মিশে যায়।প্রতিমা দেবীর পর্ণকুঠিরে দক্ষিণা বাতাস
নিয়ে আসে সুনেত্রা দেবী।দুই সইয়ের বন্ধুতের নাম হয় বকুলফুল।জীবনের অন্তিম দিন পর্যন্ত
তারা এক সাথে থাকবে এই শপথ নেয়।
নীরা তার স্বামীর সাথে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটায়।হঠাৎ সেখানে নামে ঝড়।নীরার স্বামী পেটে ক্যান্সার ধরা পড়ে।নীরা তাঁর মাকে এই কথা জানাতে
পারেনি।নীরা মনে মনে ভাবত সারা জীবনে তাঁর মা কোন সুখ পায়নি।এই কথা শুনলে মার কষ্টের সীমানা থাকবে না।হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও নীরা তার স্বামীকে বাঁচাতে পারেনি।ব্যাঙ্গালোরে সব পাট মিটিয়ে সাদা শাড়ি পড়ে ফিরল নীরা। মেয়ের এই দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রতিমা দেবী।মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রতিমা দেবী নিজেকে সামলিয়ে নেন।
নীরা তার স্বামীর সাথে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটায়।হঠাৎ সেখানে নামে ঝড়।নীরার স্বামী পেটে ক্যান্সার ধরা পড়ে।নীরা তাঁর মাকে এই কথা জানাতে
পারেনি।নীরা মনে মনে ভাবত সারা জীবনে তাঁর মা কোন সুখ পায়নি।এই কথা শুনলে মার কষ্টের সীমানা থাকবে না।হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও নীরা তার স্বামীকে বাঁচাতে পারেনি।ব্যাঙ্গালোরে সব পাট মিটিয়ে সাদা শাড়ি পড়ে ফিরল নীরা। মেয়ের এই দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রতিমা দেবী।মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রতিমা দেবী নিজেকে সামলিয়ে নেন।
-মা উনি কে? আগে তো কখন ও দেখিনি?
প্রতিমা
দেবীর কাছে সব কথা শুনে নীরা হাত দুটো বাড়িয়ে দেয় সুনেত্রা দেবীর দিকে।
-এখন থেকে আমি আপনাকে মাসিমনি বলে ডাকব।
-মাসিমনি
বললে আপনি বলা চলে না একটু হেসে নীরা
নতুন করে জীবন শুরু করার কথা ভাবতে শুরু করে।চাকুরীর চেষ্টায় নীরাকে আবার বেড়িয়ে
পড়তে হয় অতীতের সব গ্লানি মুছে।তখন নীরা জানতে পারে সে মা হতে চলেছে। আবার তার জীবন
মাতৃতান্ত্রিক হয়ে পড়ে। তার সন্তান কে একাই মানুষ করবে এই শপথ নেয় মনে মনে।
আমার চোখে স্বপ্ন ভেজা রাত,
দুঃস্বপ্নের লাল আগুন
:
হাতের নতুন প্রাণের অঙ্কুর আজ নিঘগ্ন
স্লিপিং পিলের স্ট্রিপে
:
পায়ে ভালোবাসার মিছিল আজ
পরিণত জীবন যুদ্ধে হেরে
যাওযার ক্ষত চিহ্নে
:
ভালোবাসার সময় গেছে ফুরিয়ে
মনস্তাত্বিক প্রয়োজনে কেঁপে
ওঠে হৃদয় তন্ত্রী
:
কলমবন্দী অক্ষর গুলো আজ জীবনের নিস্তরঙ্গ প্রয়োজনে
ভাবনার দেওয়ালে আঁচড় কাটে
অভিযাত্রার নিষ্প্রভ জারকে
ডোবানো চাহিদাগুলো বড় অবাধ্য
:
জীবনের মূল্যবোধটুকু ডিসি
কারেণ্টের তারে ছিন্ন
:
পাখার ব্লেডে ভাবনার জালে জড়িয়ে দেহজ ক্রিয়া
:
যান্ত্রিকতার বেষ্টনীতে অবরুদ্ধ
মনের দুয়ার
:
পশ্চিম জানলায় উঁকি দেয়
মুঠো ভরা রোদ্দুর ...
No comments:
Post a Comment