কোথায় কি!

22 August 2017

পরিতোষ হালদার




দ্বিবীজপাতা
অথচ- মৌন ঝরে পড়ে। পাতার আড়ালে যে বসন্ত ছিল তার পালিশ লেগে থাকে বুকে।
উঁচু উঁচু আলতো বিকেল, আরও নীচে জলরঙ।
যেখানে স্নান নিলে সমুদ্রও পথ পেয়ে যায়।

আমরা ছবিওয়ালা, পরস্পরের প্রচ্ছদ হতে চাই।

অকস্মাৎ পাহাড় থেকে পড়ে যায় বর্ষাকাল, শিরোনামহীন কিছু নূপুর জীবন।
বাষ্পের মতো আমরাও যাই,
গন্ধ পেরিয়ে দেখি, পড়ে আছে বাগানবিলাস।

এবার উষ্ণ কর, ঈষৎ ঝুকে এসে দেখ- আমি এক শান্ত দ্বিবীজপাতা।
জোড় খুলে দাও, প্রার্থনা থেকে মুক্ত কর ছায়া।
আমি অক্ষর হয়ে যাই,
যার গায়ে অনিবার্য রোদ লেগে থাকে।


ওইজাবোর্ড
ধ্যানস্থ রবীন্দ্রনাথ....
 
প্লানচেটে ডাকা হয়েছে পুত্র শমীন্দ্রকে। কাল এসেছিল কন্যা মাধুরীলতা, তারও আগে দাদা সত্যেন্দ্রনাথ।
বোর্ডের ওপর আরও তিনজনার হাত- স্ত্রী মৃণালিনী, ভ্রাতুষ্কন্যা ইন্দিরা ও পুত্র রথীন্দ্র্রনাথ।
উল্টো করে রাখা বোলের নীচে আগরবাতি জ্বলছে।
একসময় বোর্ডের চাকতি ঘুরতে শুরু করে.....
উমাকে মাধ্যম করে শমীন্দ্র এসে যায়, আত্মা কথা বলে-
বাবা....
রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানের মতো নির্বাক।
প্লানচেট শেষ হয়- পরে থাকে একটি নিষ্প্রাণ ওইজাবোর্ড।

সপ্তম
তুমুল ফুটে থাকো- এইসব মুহূর্তরেখার পাশে প্রাচীন জাদু।
বর্ষামুখর মৃগয়ায় প্রদীপ্ত হাসি তোমার।
আগুনের পাশে ভায়োলিন বাজাও, একটানা স্বর ও ব্যঞ্জন।

সপ্তমে এসো- উপহাসগুলো গোলগোল একা।

হেমন্তে নুয়ে পড়া শীত, সম-ঈরণে দীর্ঘ করো নিঃশ্বাসধারা।
উত্তরের খুব কাছ থেকে বেঁকে যাওয়া তুমি- শিল্পের আর এক নাম।
আঙুলে ভাসিয়ে দেও রঙ, দশমূদ্রার বাগানবিলাস।
আমাদের কোন সেতু নাই, অথচ প্রতিদিন ভেঙ্গে পড়ে অজস্র উড়াল।



শ্রুতি
অজস্র শ্রুতির যোগফল- ভ্রান্ত রোদ্দুরের কাছে হেলে পড়া বিকালবেলা।
কি নামে ডাকো তারে, জন্ম নাকি জলপাই ছায়া।

সারস খুলে দেখো, এক অদ্ভূত বর্ষাকাল।
ডানায় তামাটে মেঘ, অভিনন্দনের মতো অসমাপ্ত বাঁশি।

অন্তিম ফলের কাছে যে স্তব্ধ থাকে তার মোহ পতনেই শেষ। শুধু অন্ধকার ভর্তি শব্দের শৈশব।
ছুঁয়ে যায় পাপ ও পতঙ্গপাতা।
 
আত্মোৎসর্গের শেষে পরে থাকে প্রাচীন অপেরা।
তুমি তার প্রথম মিথ্যুক।
চারদিকে দৃশ্য খোলা, তবু চোখ জুড়ে অনন্ত অপ্সরা।



ত্রিভূজ
তৃতীয়জন প্রেম নিবেদন করে প্রথমজনকে।
প্রথমজন তা ফিরিয়ে দেয় কারন সে ভালবাসে দ্বিতীয়জনকে, যে একজন মানুষ।

প্রত্যাখ্যিত তৃতীয়জন উদ্যানটিকে ধ্বংস করে দিতে থাকে; সে মনে করে সে যা সৃষ্টি করেছে
তা ধ্বংস করার অধিকার তার আছে।
এমনকি সে প্রথম ও দ্বিতীয়জনকে সৃষ্টি করেছে অতএব তাদের ভোগ করার মালিকও সে।

একটি ফলবান বৃক্ষের তলে প্রণয়পর্ব শেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয়জন দেখে উদ্যানটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
তারা তৃতীয়জনকে অভিশাপ দেয়- সে বীর্যহীন হয়ে পরে।
শাপগ্রন্থ তৃতীয়জন সেই থেকে ব্যাপক সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করে।



No comments:

Post a Comment