কোথায় কি!

22 August 2017

এ কে এম আব্দুল্লাহ



আধুনিক দু:খের গল্প
আমাদের চিন্তা বড় হতে হতে ছোট হয়ে আসে পৃথিবী আর যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে এখন হাতের মুঠোয়
এখন রেডিয়েশনে পুড়ে আমাদের অন্তর আর ফিডারে অভ্যস্ত করি ভবিষ্যত ফিগার আর বৃদ্ধাশ্রমে ঝুলাই আয়ুর দর্পন আমরা ঈশ্বরকে দাফন করি বাসনার কাফনে
অত:পর ট্রাফিক সিগন্যালের পাশে হাত পেতে দাঁড়ায়,লালফিতায় বাঁধা দাসত্বের স্বপ্ন তন্দ্রার আল্পনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হয়
আর এভাবে নামহীন লাশের ভিড়ে রচিত হতে থাকে দু:খের নতুন গল্প

পুড়া হাত
ধর্ষিতার চিৎকারগুলো মিলিয়ে গেলে ট্রাকের ডগায়; কিছুক্ষণ রোদে পুড়ি আর মানবতার খোলস পরে ফিরি বাড়ি
হোয়াটস্আপে সেলফিগুলো আপলোড হতে হতে কুকার থেকে নেমে আসে একজোড়া পুড়া হাত হাতগুলো এখন কিচেনের ল্যাবে, ডি এন এ টেস্ট হচ্ছে
রক্ত,ঝোল আর লবণ সনাক্ত হবে আজ


ভুলে যাচ্ছি নেশাতুর সম্পাদকীয়
যে ফুলটি তীব্র অভিমানে
ঝরে গেলো অথবা আত্মহত্যা করলো
নিতে পারিনি তার সাক্ষাৎকার
সময়ের ব্যাকুল চ্যাপটারে
ভুলে যাচ্ছি নেশাতুর সম্পাদকীয়

এখন বিজ্ঞাপনি কলামের ফাঁকে খুঁজি
একটি নিশিগন্ধা আর চাঁদের সংলাপ


পাথরকাল
প্রিয়তমার সিঁথি ধরে
মৃত্যুরা হাঁটে কাস্তের দানায় 
আর রাত্রি হত্যা করে জন্ম নিলও যে ভোর
তার কান থেকে নিম্নশ্রেণীর ছিনতাইকারি
কেড়ে নেয় সোনালী দুল

লতি থেকে ঝরে পড়া ফোঁটা ফোঁটা প্রার্থনা
আমরা সন্ধ্যা-উনুনে পুড়াইআর মাগরিব শেষে 
ঘামে মিশিয়ে ছাই ;

প্রিয়তমার কপালে এ্যঁটে দিই নিয়তির টিপ 
 
দীর্ঘশ্বাসের দামাইল
পৃথিবীর খোলা মাথায় আজকাল যেনো খেলা করে,কালবোশেখি ঝড় আমরা ঝড়ের ব্যাকুল আগুন মেখে দিব্যি করি অফিসবাজার করি,খেলা করি,স্কুল-কলেজও... 
পথে-প্রান্তরে পিতৃপুরুষের হাড্ডি পুড়িয়ে করি- কার্তিকা উৎসব 

এখন আমরা উৎসব পছন্দ করি নানারঙ উৎসব : মৃতের উৎসব পোড়ার উৎসব - রক্তের উৎসব চারদিকে উড়ে উৎসবের ফুলঝুরি দিন-রাত পৃথিবীতে আলো ঝরে,নদী বহে ; তবু আমাদের ভিতরটা অন্ধকার, গতিহীন

একদিন স্পর্শ করবে সূর্য,এই ভেবে টেবিলে সাজিয়ে রাখি দীর্ঘশ্বাসগুলো গহিন রাতে চমকে ওঠি- দেখে দীর্ঘশ্বাসের দামাইল
আমাদের দীর্ঘশ্বাসগুলো বনোয়া মশার মতো উড়ে উড়ে কামড়ায় 
আর আমরা দশকের পর দশক - এভাবেই বেঁচে থাকি



No comments:

Post a Comment