কোথায় কি!

20 September 2017

মুহাম্মাদ সানি





বেশ কিছুক্ষণ ধরেই শুক্রাবাদ পার্কে বসে আছি! নাদিয়া আসতে বলেছে। জরুরী তলব। কিছু একটা বলবে হয়তো! ফোনে বললো, 'খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা, সামনাসামনি বলতে হবে!'
কিছুটা বুঝতে পারছি, সে কী বলতে চায়। তাই আমি একটু আগেভাগেই এসে বসে আছি! অবশ্য নাদিয়া ডাকলে আমিই আগে আসি। কারন আপাতত আমার কোনো কাজবাজ নেই! আমি আগে আসি আর নাদিয়া পরে এসে দেরী করার কারন বর্ণনা করে। যদিও আমি কখনোই কোনো কারন জানতে চাই না!
তিনমাস আগে এক শপিংমলে নাদিয়ার সাথে আমার সিনেমেটিক পরিচয় হয়েছে! আসলে পরিচয়ের পর থেকে সবকিছু যেন সিনেমেটিক ভাবেই চলছে! প্রথমে শপিংমলে অপ্রস্তুত ভাবে হাঁটার সময় নাদিয়ার সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে গেছিলাম! প্রচুর মানুষ ছিলো সেখানে, ভরা মজলিসে ওভাবে পড়ে যাওয়া আসলেই লজ্জাজনক ছিলো! আমারচে' নাদিয়ার দোষটাই বেশি ছিলো, তাই হয়তো ও সে নিজেও অনেক লজ্জা পেয়েছিলো! এবং সেদিন তার লজ্জারাঙ্গা-মুখ সত্যিই দেখার মত ছিলো! 

পরবর্তী দেখা হয়েছিলো ধানমন্ডি লেকের পাড়ে!  একা বসে বাদাম খাচ্ছিলাম, পেছন থেকে নাদিয়া নিজে এসেই কথা বলেছিলো এবং সেদিনের ঘটনার জন্য কয়েকবার সরি বলছিলো! তারপর আমরা আস্তে-আস্তে ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম!
নাদিয়ার মত এমন মেয়ে আমি সত্যিই আগে কখনো দেখিনি! স্কুল,কলেজ বা ভার্সিটিতে যখনই বন্ধুদের,বান্ধবীদের সাথে আড্ডায় বসি, তখন মেয়েদের ভেতর শাড়ী-চুড়ি, গহনাগাঁটি বা কোন ছেলে আজ রঙচটা টিশার্ট পরে ভার্সিটিতে এসেছে এসবের গল্পই চলতে থাকে!
নাদিয়া খুব চঞ্চল! অনেক কথা বলে!  তবে তার কথার অধিকাংশই হলো, বই, সমাজ,পরিবেশ বা পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে! নাদিয়াকে যতই দেখি মুগ্ধ হই! তাকে ভালো লাগার অন্যতম কারন হলো, সে কবিতা খুব পছন্দ করে!  আমি মাঝেমধ্যে যে ভাঙ্গা-ভাঙ্গা শব্দ লিখি, তা নাদিয়াকে শুনাই আর সে অনেক মনোযোগ দিয়ে শুনে এবং সেখান থেকে কিছু পরিবর্তন-পরিবর্ধন করে দেয়!  কবিতার ব্যাপারে তার দখল সত্যিই অভাবনীয়!

আজকের অপেক্ষা একটু বেশিই দীর্ঘ হচ্ছে। এপর্যন্ত চার কাপ চা খেয়ে ফেলেছি, পাঁচ নম্বার কাপের জন্য চা-ওয়ালাকে বললাম তখনি পেছন থেকে ডাক আসলো,
-'আবির! আমি অনেক সরি! অনেক দেরী হয়ে গেলো। আসলে, আগেই বেড়িয়েছি কিন্তু রাস্তায় একটু দেরী হয়ে গেছে!' একদমে কথাগুলো বলে থামলো নাদিয়া।
আমি তাকে কিছুই বললাম না। অপলক তাকিয়ে -তাকিয়ে তার কথা শুনছিলাম! 
-'কী হয়েছে আবির?' প্রশ্ন করলো নাদিয়া।
-'কই, নাহ!  কিছুই হয়নি!' সোজা হয়ে বসলাম আমি!
-'তাহলে অমন করে বসে আছো কেনো?'
-'এমনি!  আচ্ছা, তুমি যেনো কী বলতে চেয়েছিলে!'  উৎসুক হয়ে জানতে চাইলাম!
-'ও হ্যাঁ! আমরা বন্ধুরা মিলে কক্সবাজার যাচ্ছি। তুমি যাবে?' উৎসাহি কণ্ঠে জানতে চাইলো নাদিয়া!
আমি কিছুটা ভড়কে গেলাম!  একটু নড়েচড়ে বসলাম, হয়তো আমার চেহারায় একটু পরিবর্তন হয়েছে!  তা দেখেই নাদিয়া জানতে চাইলো,
-'কী ভাবছো আবির?!'
- 'কিছুই ভাবছি না! আসলে সামনে তো এক্সাম!  তাছাড়া.....
-'ওসব বাদ!  এক্সাম এখনো অনেক দেরী। তোমার কথা বন্ধুদের বলে রেখেছি!  তাই তুমি যাচ্ছো!' আমাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই কথাগুলো বলে ফেললো নাদিয়া!
-'আচ্ছা, কবে যাচ্ছো?' 
- 'আগামী দশ তারিখ!  তুমি প্রস্তুত থেকো। আমি এখন যাই।' বলেই উঠে দাঁড়ালো নাদিয়া। এবং কিছু বলার আগেই হাঁটা শুরু করলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
নাদিয়াকে কিভাবে কথাগুলো বলবো বুঝতে পারছিনা! কিন্তু বলতে হবেই, যেভাবেই হোক!  তাই ভাবলাম, সমুদ্রের কাছে যেহেতু যাচ্ছি তাহলে সমুদ্রকে সাথে নিয়েই বলবো!
.
-হ্যালো আবির, তুমি কোথায়? এত দেরী করছো কেনো?
ফোন রিসিভ করেই নাদিয়ার প্রশ্ন শুনতে পেলাম।
- আমি বাস্ট্যান্ডে ঢুকছি, মাত্র দু'মিনিট লাগবে!
- আচ্ছা তাড়াতাড়ি আসো। সবাই বসে আছে।
ফোন রেখে দিলো নাদিয়া! 

কাল থেকে কয়েকবার ফোন করেছে নাদিয়া। 'সব গুছানো হয়েছে, সময়মত স্টেশনে চলে আসবে,প্রয়োজনীয় জিনিস মনে করে নিয়ে নিও ইত্যাদি ইত্যাদি!' তার বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার যাচ্ছি। আজ আগেই বেড়িয়েছি, কিন্তু ঢাকার যানজট ঠেলে পৌঁছতে দেরী হয়ে গেলো।
.
এ-মা! সবাই তো উপস্থিত!  আমি একাই দেরী করেছি!  নিজেকে খুবই লজ্জিত মনে হলো!  যদিও বাস ছাড়তে এখনো ৪৫ মিনিট বাকি। 'সরি সরি সরি, একটু দেরী হয়ে গেলো!' বললাম আমি!
-আরে এখনো অনেক দেরী, চিন্তা নেই। বললো নাদিয়া! 
নাদিয়া সহ তার বন্ধুরা মোট ছ'জন। তুহিন,সা'দ,শাওন,রুহি,মেঘা আর নাদিয়া। ওদের সবার সাথে গত পরশু নাদিয়া আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। তাই আজ পরিচয় পর্ব নিয়ে সময় নষ্ট হলো না! 
-আচ্ছা রাহুল কি আসবে?!  প্রশ্ন করলো মেঘা।
-ওর কথা বলিস না তো! সবখানে দেরী না করলে ওর পেটের ভাত হজম হয় না! বিরক্তি নিয়ে কথাগুলো বললো রুহি।
-আরে এসে পরবে। প্রতিবাদ করে বললো শাওন।
তারপরই দেখা গেলো রাহুল রিক্সা থেকে নামছে। ও একটু মোটা, অবশ্য ওর শরীর অনুযায়ী দেরী করাটা স্বাভাবিক। 
.
কাল রাতে বাসে বসে একটুও ঘুম হয়নি। শেষ রাতে কক্সবাজার হোটেলে এসে উঠেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে মোটেই ইচ্ছে করছে না! কিন্তু সবাই সমুদ্র দেখতে যাচ্ছে তাই আমিও দ্বিমত করলাম না!
.
কী অদ্ভুত! সমুদ্রের জল নোনা- বিস্বাদ হলেও তার প্রেমিকের অভাব নেই! কতদূর থেকে মানুষ এই সমুদ্র, নোনাজল আর তার পরিবেশের প্রেমে পড়ে ছুটে আসে! তবে, সমুদ্রের উপর বয়ে চলা হিমেল হাওয়া সত্যিই মুগ্ধকর! শরীরের প্রতিটি পশমকে জাগিয়ে তুলে!  ভাবিয়ে তুলে নতুন অনেককিছু!
.
দু'দিন ধরেই ভাবছি, নাদিয়াকে ভালোগার কথা বলে ফেলবো!  কিন্তু, সাহস সঞ্চয় করতে হিমশিম খাচ্ছি! কক্সবাজারে আমরা আর একদিন থাকবো তারপর দু'দিনের জন্য সেন্টমার্টিন, সেখান থেকে ঢাকা।
.
সন্ধের একটু আগে বিচে গেলাম। নাদিয়াকে বললাম,
-নাদিয়া, তোমার সাথে একটু কথা আছে!  
-এখানে বলবে নাকি দূরে যেতে হবে!?
-একটু এদিকে এসো।
নাদিয়াকে নিয়ে সরে আসলাম! সূর্যটা লাল থালার মত তাকিয়ে আছে, সমুদ্রের পানি থেকে ভেসে আসছে মাতালকরা সুবাস, তাজা মাটির সুঘ্রাণ, মন মাতানো বাতাস বইছে, হয়তো প্রেম নিবেদনের এটাই উপযুক্ত সময়! যেন প্রকৃতি সময়টাকে এগিয়ে দিয়ে বলছে, "বলে ফেলো!" 
-আবির, কিছু বলবে?! কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থাকার পর প্রশ্ন করলো নাদিয়া!
আমি নাদিয়ার চোখের দিকে তাকাতেই সব ভুলে গেলাম! শব্দগুলো এলোমেলো হয়ে গেলো! মুখ থেকে কিছুই বের করতে পারছি না!  যেন কেউ গলা চেপে ধরে আছে! নিজের প্রতি খুবই রাগ জন্মালো! সেই রাগেই হয়তো বলে ফেললাম, 'আমি কাল ঢাকায় ফিরে যেতে চাই!' 
নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে ফেললো! তারপর বললো, 'দেখো আবির, আমি তোমাকে সাহসী এবং বিচক্ষণ মনে করতাম!  কিন্তু এমন বোকামি তোমার মাঝে জন্ম নেবে এটা কখনো ভাবিনি! সাধারণ একটা কথা বলতে তোমার যদি এ-অবস্থা হয় তাহলে তুমি যুদ্ধক্ষেত্রে গেলে তো সেখান থেকে পলায়ন করতে বাধ্য হবে!' 
আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি!  কিন্তু কিছুই বলতে পারছি না! ভাবছি, নাদিয়া কি তাহলে ওর পছন্দের কথা জেনে ফেলেছে! 
নাদিয়া আবার আমার দিকে তাকালো, 'আবির, তুমি বড্ড বোকা! তোমার সাথে আমার অল্প কিছুদিনের পরিচয়, তোমাকে আমি দেখেছি, জেনেছি,আপন মানুষ হিসেবে কক্সবাজার নিয়ে এসেছি! ভেবেছিলাম,এখানে এসে তোমার একটু সাহস হবে! কিন্তু,তুমি এখনো ভিতুই রয়ে গেলে!'
কথাগুলো বুঝতে আমার কিছুটা সময় লাগলো!  তারপর নিজের কাছে আনন্দ অনুভব করলাম।সেই সাথে বোকামির জন্য কিছুটা লজ্জা বোধও কাজ করলো! অতঃপর আর এক মুহূর্তও দেরী না করে বললাম,
-নাদিয়া! আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি! কাব্যিক অনুভূতি হয়তো এটাকে ভালোবাসা বলবে!  
কথাগুলো বলে নাদিয়ার চোখের দিকেই চেয়ে রইলাম!
একটু হেসে নাদিয়া বললো,
-আচ্ছা! তুমি না হয় কক্সবাজার এসে বলে দিয়েছো! তাহলে আমি  উত্তরটা সেন্টমার্টিন গিয়েই দিবো!সবাই তো একই রকম প্রেম নিবেদন করে!  আমরা না হয় কিছুটা নতুনত্ব দিয়েই শুরু করলাম! 
কথাটা বলেই নাদিয়া চলে গেলো! আমি তাকিয়ে রইলাম তার চলার পথে! তার বুদ্ধি,জ্ঞান,সরলতা ও সহজতা আমাকে সত্যিই প্রতিনিয়ত বিমুগ্ধ করে তুলে!
.
এখন অপেক্ষা আরো একটি দিনের...!
.
নিয়তি বলতে একটা বিষয় আছে! যা আমরা মাঝেমাঝে ভুলে যাই! যখন দুর্ঘটনা বা অপ্রস্তুত কোনো জিনিশে আক্রান্ত হই তখন মনে হয় যে,"ভাগ্য বা কপাল নামে কিছু আছে!" হাসপাতালের করিডোরে দাঁড়িয়ে কথাগুলো নিজের মনেই আওড়াতে লাগলাম! কেনো যেন কথাগুলো খুব মনে পড়ছে!
কাল রাতে সেন্টমার্টিন আসার পর নাদিয়া হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়! অতঃপর তাকে এখানকার এক হাসপালে ভর্তি করা হয়! কী হয়েছে আমরা কেউ জানিনা! তবে এখনো তার জ্ঞান ফিরে নি! ডাক্তারের কথাবার্তায় তেমন কিছুই জানা যায়নি।
বুকে হাত বেধে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি! মনে মনে নানান কথা উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে! তখন পেছন থেকে রুহী এসে ডাকলো, 'আবির ভাইয়া'!
- হ্যাঁ বলুন!  আমি পেছন ফিরে তাকালাম!
-নাদিয়ার জ্ঞাল ফিরেছে! সহজ কণ্ঠে বললো রুহী!
-আচ্ছা আপনি যান আমি আসছি! আবার জানালা দিয়ে বাহিরে চোখ রাখলাম!
.
হাসপাতালে থাকলে বাহিরের জগতটা ভিন্ন কিছু মনে হয়! ভেতরে বাহিরের মত প্রাকৃতিক হাওয়া নেই; সব যান্ত্রিক! চারিদিকে কেমন ঔষধি গন্ধ! অবশ্য এখানকার ছোটখাটো হাসপাতালে ঢাকা মেডিকেল বা পিজি হসপিটালের মত মানুষের গাদাগাদি, হুড়োহুড়ি নেই! বাকি সবই প্রায় এক! 
.
বালিশে হেলান দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে নাদিয়া! আমি রুমে ঢুকতেই রুহী, মেঘা এবং শাওন আমাকে দেখে উঠে দাঁড়ালো! আমি বিছানার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
-'কেমন আছো নাদিয়া?'
-' ভালো আছি! তুমি?' একগাল হেসে উত্তর দিলো নাদিয়া!
-আচ্ছা ভাইয়া! আপনি বসুন আমরা হোটেল থেকে ঘুরে আসি। বললো শাওন! তারপর ওরা রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো!  রুমে আমি নাদিয়ার বেডের পাশে একটি চেয়ারে বসে আছি! 
-কী হয়েছে আবির!  তোমার চেহারা এমন লাল হয়ে আছে কেনো?! প্রশ্ন করলো নাদিয়া! 
-না কিছু হয়নি তো! তড়িঘড়ি করে উত্তর দিলাম আমি!
-সকালে কিছু খেয়েছো?!
-হ্যাঁ! আচ্ছা, তোমার কী হয়েছিলো?
- 'তেমন কিছুই না!  কাল রাতে খুব মাথাব্যথা করছিলো! তাই বেশি পাকামো করে দু'টো ঔষধ একসাথে খেয়ে ফেলেছিলাম! তারপর আমি এখানে!' হাসলো নাদিয়া!
- ঔষধ আর ছিলো না?!
- হ্যাঁ ছিলো তো!
- তাহলে সেগুলো খেলে না কেনো!?
আমার কথায় কিছুটা অভিমানের সুর ছিলো!  নাদিয়া উত্তর না দিয়ে কিছুক্ষণ হাসলো!  তারপর বললো,
- আচ্ছা পরে আবার মাথাব্যথা হলে সব খেয়ে নেবো! 
আমি কী বলবো খুঁজে পেলাম না! তাই নিশ্চুপ তাকিয়ে রইলাম নাদিয়ার দিকে! বুঝতে পারলাম না, নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কেনো! কিছু না বুঝে আমিও ফিকফিক করে হেসে ফেললাম!
.
বিকেলের লাল রোদে হাঁটতে ভালোই লাগছে!  রোদের তাপ নেই!  হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে, আর আমার পাশাপাশি হাঁটছে নাদিয়া! সাগরের তীর ধরে কিছুক্ষণ হেঁটে নাদিয়া থামলো!  আমিও কিছু না বলেই দাঁড়ালাম!
 -আবির, তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?! বললো নাদিয়া!
- হ্যাঁ বলো!
- না থাক! মুখে না বলে বরং লিখে দেই!..  
ব্যাগ থেকে একটি কাগজ বের করে আমার হাতে দিলো নাদিয়া!
আমি অবাক হয়ে তা খুললাম, 
" আবির, তুমি কি আমায় তোমার, মুখোমুখি বসিবার, বনলতা সেন করে নেবে?! কবিতা শোনাবো, ছন্দময় কিছু বাক্যখেলা খেলবো তোমার সাথে!"
কাগজটা খোলার সময় যতটা মুগ্ধবোধ করেছিলাম, পুরোটা পড়ে তারচে' বেশি মুগ্ধ হয়ে গেলাম! কিছু বলার ভাষা খুঁজে পেলাম না! নাদিয়া আমার থেকে একটু দূরে গিয়ে সাগরের পানিতে পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! আমি কাছে গেলাম, নাদিয়া হাসছে!  আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আওড়াতে লাগলাম,
"তুমি মোর বনলতা সেন মুখোমুখি বসিবার,
তোমাকে তো করেই নিয়েছি, 
সুযোগ চাইছো কেনো আবার "!
.
নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আবারো হেসে উঠলো! সত্যিই, নাদিয়ার এই হাসিহাসি চেহারা দেখার মত! যেন, গোলাকার একটি চাঁদ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে!

No comments:

Post a Comment