কোথায় কি!

30 July 2018

গুচ্ছ কবিতা — দাউদুল ইসলাম



বিবর্তনবাদ 
আমরা প্রতিদিন স্বাগত জানাচ্ছি বিবর্তনবাদকে, প্রতি মুহূর্তে গত হচ্ছে আমাদের বর্তমান, প্রতি নিয়ত গম ন করছি নবীন পটেআমরা যা শিখেছি পাঠক্রমে, যা কিছু আমাদের মুখস্থ, জানা অজানায় , ঘুরে ফিরে হাজির হচ্ছি স্মৃতিপটে...সোজা পথ হেঁটে যাচ্ছি,
হেঁটে যাচ্ছি বাঁক- বক্র, ভিন্ন সীমানায়...
সব ছেড়ে একাকী পৌঁছে যাচ্ছি একান্ত ঠিকানায়সব বুঝেও ভুলে যাচ্ছি চিরন্তন বাণী, আপন চোখ বুজে ডুব দিচ্ছি নিষিক্ত রাতের বুকে, অন্ধকার রহস্যে, গোলকধাঁধায়! অশনি জেনেও হাত বাড়াচ্ছি স্বৈরিণীর ডাকে! যেমন খুঁজে বেড়াচ্ছি অজানা সুখ শশিকান্ত নির্বাণে, বিপন্ন অসুখে, শরীরী সঙ্গমে, স্থবির অক্ষে...
মুহূর্ত গুলো এমনিইপলকে পলকে বিগত হয়ে যায়, স্মৃতি হয়ে যায়, তিক্ত স্বাদে মিশে যায় স্খলনের একেক একটি ফোঁটা...পুনরায় খুঁজে বেড়াই পুরনো কোন ভোর- শিশির সিক্ততায়
কবিতার মত নরম রোদ্দুরের হাসি, খুঁজে বেড়াই ঝড়ো হাওয়া, নিগূঢ় সন্ধ্যা যাপন!
  

গল্প: বান—নিবেদিতা আইচ



উঠোনটা একটা ছোট খাটো পুকুরে পরিণত হয়ে গেছে। খুব সাবধানে পা ফেলে হাঁটছে দুলি। অন্য সময় হলে একছুটে ঘরের দাওয়ায় গিয়ে ওঠা যেত কিন্তু এই শরীর নিয়ে এখন ওর সে সাহস হয় না। উঠোনে মেলে দেওয়া কাপড়গুলো শুকিয়ে এসেছিল, এখন সব এদিক ওদিক পড়ে কাদায় মাখামাখি হয়ে গেছে। দুলির আঁচলের ভেতর আধ গামলা চাল, গোটা চারেক আলু আর কাঁচামরিচ। ভেজা আঁচল দিয়ে গামলাটাকে ভালো করে ঢেকে রেখেছে সে।
দাঁতে দাঁত চেপে উঠোন পেরোয় দুলি। বুকটা ঢিপঢিপ করে ওর। দাওয়ায় গিয়েই শরীরটা ছেড়ে দেয়। উঃ এত পানি! বান আইতে আর দেরি নাই রে..নিজেকেই নিজে সতর্ক করে সে। আর এই শঙ্কাকে সত্যি করতেই যেন বৃষ্টির তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। ভেজা শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে ওর। একহাতে শাড়ির নিচের অংশটুকু থেকে হাত দিয়ে নিংড়ে নিংড়ে পানি ঝেরে ফেলে । আঁচল দিয়ে মাথাটাকে বাঁচাতে চেয়েছিল, লাভ হয়নি, ভিজে চুপসে গেছে পুরো শরীর। হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে ঘরে গিয়ে ঢোকে দুলি।

10 July 2018

গুচ্ছ কবিতা — রিকি দাশ


 

দিগন্ত
ছুঁয়ে দেখার লোভে!
চর জেগে উঠেছে বিস্তৃত সব মেঘে,
খসে পড়ছে অ্যাংলোস্যাক্সন ইতিহাস
পার করে আসা সহস্র ভূগোল
ফেলে চলেছি এতকালের গুছানো সব সন্ধ্যা, মুগ্ধ নগর।

কোন শব্দ নেই থমথমে নিমতলার মতন নিঃসাড় শহরের কর্পোরেট গলি ছেড়ে;
হেঁটে চলেছি ক্রমশ গ্যালাক্সি জুড়ে।
কবিতার ক্ষেতে বুনে চলা রসায়ন চুষে শরীরে রাঙিয়ে নিবো যাযাবরের ব্যাধি।

উষ্ণ ঠোঁটে আলিঙ্গন করে শাণিত সব সকাল, একদিন যেন এক ঋদ্ধ আমি!
চিবুকের বা-পাশে রবীন্দ্রনাথ জপ-তপে ডানা মেলে ইট-কাঠের তান্ডব নীলকমলে।
গতির তীব্রতায় ছিটকে যাবে ভিসুভিয়াস।
ভূ-খন্ড ভেসে উঠবে পৃথিবীর লাভায়। ঠাই দাঁড়িয়ে শিল্প ছোঁয়ার তাড়নায় হেঁটে যাবো অদৃশ্যে।
দু-চোখ ভরে দিগন্ত ছোঁয়ার লোভে...