কোথায় কি!

25 January 2017

বীরেন মুখার্জী




সংকল্প
প্রতি ছুটিবার- সংকল্প করে, ছোঁবে-
প্রচ্ছদ উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে-
ঐতিহ্যের গলিপথ কী শিহরণে টুইটুম্বর দেখে নেবে;

নাগরিক সন্ধ্যা, ঝরে যায় ঋতু-ও, ছুটিবার কাঁপে
ফোটে মুগ্ধরঙ, যার মর্মরেও শোভিত- দূরদর্শন;

এমন রণক্ষেত্র- চারু, সরে যায় দূরে- ক্রমশ
অনুদিত রাত্রিপুষ্প তবুও; ছোঁবে-
বিকল্প বাক্যবাণ আর বিরহব্যঞ্জনা উড়িয়ে
যখন জেগে উঠবে আমাদের স্মৃতিতীর্থভূমি-  

কামরুজ্জামান কাজল







বালিশদুটি পাশাপাশি চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে। ধবধবে সাদা কাভারে ঢাকা, শিমুল তুলায় পেট বাঁধানোধরলেই মনে হয় হাত গলে যাবে ।
.
লাল রঙের ফুল আঁকানো চাদর । টানটান হয়ে বিছানার সাথে লেপ্টে আছে । ঠিক সামনেই একটা ড্রেসিং টেবিল । পর্দাটা সরানো । আয়না দিয়ে বালিশ দুটি দেখা যায় । ভরাট বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে থাকে ।
.
বালিশদুটির মধ্যে অনেক অনেক কথা হয় । অনেক কথার মানে আছে,আবার অনেক কথারই নাই । অনেক কথা বলার আগেই, দুইজনই হেসে কুটিকুটি 

নয়নিকা সেন





(১)

চেয়ারে বসে ঝিমোচ্ছি । টেবিলের উপর এটোমিক মলিকুলারের শীট... ইতস্তত সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে ।
আগামী সপ্তাহ থেকে ফাইনাল একজাম, অথচ...
-
ঘটনাটা শুরু হয়েছিল মাস খানেক আগে।
রোজ সকালে কলেজ যেতে গেলে যাদবপুর - ডালহৌসি মিনিটাই ধরি । সেদিনও ব্যতিক্রম হয়নি... হঠাৎ অচেনা গলার স্বরে ঘুরে তাকালাম ,
"আপনি কি অত্রি?"
প্রশ্নটা যিনি করলেন তাঁকে অবশ্যই আমি চিনি না , কস্মিন কালেও দেখিনি , তবে ? তিনি জানলেন কি করে আমিই অত্রি সেন ?

জ্যোৎস্না রহমান






সবে নাইনে উঠেছে পৃথা। মিষ্টি ও নিটোল চেহারা। বাবা মা এর একমাত্র মেয়ে সে...  তাই ওকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। ওর পড়াশুনা নিয়ে দু'জনে খুব চিন্তিত থাকে সবসময়। তবে দু'জনেই নিজের কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকে… ফলে সারাদিন পৃথাকে একাই থাকতে হয় একা একা পড়াশুনা করতে হয়।

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য






একটি সুধাকর
হারিয়ে যাওয়া সমুদ্রের তৃষ্ণায় চর জাগে
সোমত্ত জোয়ারের বেলা ক্রমশ রক্তকে জাগায়
নোনতা স্বাদ পরিব্যাপ্ত পথের রেখাকে বৃত্ত বানায়
সমুদ্র কি সদেহ হারায়
একটি সুধাকর ঘুরে
ঘুরে ঘুরে খুঁজে মরে রাতনীল শেষ অধ্যায়
কতক্ষণ খুঁজে

বিলাল হোসেন



ভাদ্র মাসের একদিন 


শেফালি বললমানিকভাই, আমারে কয়টা কলমিশাক তুইল্লা দিবা?
ডালিম গাছের তলে মানিক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাদ্র মাসের পানি দেখছিল । বর্ষা শেষ হয়েছে, কিন্তু থই থই করছে পানি । পায়ের কাছে ছলাত ছলাত শব্দ ।
ডালিম গাছের বয়েস হয়েছে । তিরিশ। ফুল নাই তার । ফলও নাই । কিন্তু  সামনে এসে যে দাঁড়িয়েছে তার গাল দুটি ডালিমের মতই রংধরা । মানিক দেখে আবার দেখে না ।

সুমী সিকানদার




তাকে দাও যৌথ আদল
যেতে চাই তোমার সবটাতে
নিতে চাই যতটুকু পৌছাতে চাও দুর্ভেদ্য।
একমাত্র চুমুতে এক শতাব্দী সঙ্গম পাওয়া হয়ে গেলে
ভোরের ঘন্টা ধ্বনি সাড়া দেয় আলোচেরা সহমতে।
সাবধানে আলগা করি আমারও পরে ছড়িয়ে থাকা
তোমার উপুড় শরীর।

মোঃ জাহিদ হোসেন ফাহিম






.১.
লোকে আমাকে ঠান্ডা মেজাজের মানুষ হিসেবে জানে। তবে সকালে অফিসে যাওয়ার সময় বাসে উঠতে না পেরে, ভিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে, জ্যামে কাবু হয়ে আমার স্ক্রু-গুলো যখন খুলতে শুরু করে, তখন আমি মনেমনে বকা দেই। জ্যাম কে বকা দেই, ঢাকায় এত লোক কেন- সে জন্য বকা দেই (বকাটা যে ঠিক কাকে দেই সেটা অবশ্য জানি না), জ্যামে বসে তা’দেয়ার সময় নিজের কপালকেও বকা দেই। সব বকাই অবশ্য মনে মনে দেই। এই পোড়া শহরে একটা বাস পাওয়া-না পাওয়ার উপরে যখন চাকরির থাকা- না থাকা নির্ভর করে, তখন একটা প্রাইভেট কম্পানির এক্সিকিউটিভের মনেমনে বকা দেয়া- মনে হয় খুব একটা দোষের কিছু না! 

আজও আমি বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। বাসের তো আর অভাব নেই। কিন্তু বাসের চাকার উপরেও দাঁড়ানোর জায়গা নেই; ভেতরের কথা তো বাদই দিলাম। বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে কঠিন একটা বকা দিব কিনা ভাবছিলাম... আর ঠিক তখনই একটা বাস দেখতে পেলাম; ঠিক মতো ‘ফাইট’ দিতে পারলে ওটার দরজায় ঝোলার একটা চান্স হয়ত পেয়ে যাব। বাসটা কাছাকাছি আসতেই বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো মানুষগুলোর মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে গেল। লাথি মেরে, কণি মেরে, গুতো মেরে যে যেভাবে পারছে, সেভাবে সবাইকে টপকে বাসে ওঠার চেষ্টা করছে। মনে হচ্ছে যেন, এটা কোন বাস না, স্বর্গে যাওয়ার প্লেন। এই প্লেনে যেই উঠবে, সেই বিনা হিসেবে স্বর্গে চলে যাবে! যা হোক, অন্য সবার মতো আমিও জান প্রাণ দিয়ে বাসে ওঠার চেষ্টা করছিলাম; অফিসে তো যেতে হবে! আমি অনেক চেষ্টা করে কোনমতে আমার ডান পায়ের আঙ্গুলের দিকের একটু অংশ বাসের দরজার পাদানিতে রেখেছি, কিন্তু মানুষের চাপ এবং ক্রমবর্ধমান বাসের গতির জন্য আমি বাসের দরজার হ্যান্ডেলটা ধরতে পারলাম না। আরেকটা পা মাটিতে ঘষা খাচ্ছে... আমি তারপরেও হ্যান্ডেল টা ধরার চেষ্টা করলাম; কিন্তু ব্যার্থ হলাম। এর ফল হলো খুব মারাত্মক! আমি চলন্ত বাস থেকে রাস্তায় পড়ে গেলাম, তবে বাসের গতি কম থাকায় আমি আমার ব্যালেন্স ধরে রাখলাম। তাই মাটিতে গড়াগড়ি না খেয়ে মোটামুটি দৌড়ের মতো করে আমি সামনে এগিয়ে গেলাম। কয়েক ফুট সামনে যেয়ে আমি একজন মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলাম এবং মেয়েটিকে নিয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম, মেয়েটি আমার নিচে চাপা পরে রইল... ঘটনাটা ঘটল ঠিক বাংলা সিনেমার মতো। তবে এটা বাংলা সিনেমা হলে এতক্ষণে আমাদের প্রেম হয়ে যেত, শুধু তাই না! বৃষ্টিতে নাচা নাচি করে  হয়ত এতক্ষণে আমরা---- থাক আর না বলি!

সেবক বিশ্বাস




কৃষ্ণপাথর
ক্রমশঃ জ্বলে ওঠে অন্ধকার!
মৃত্তিকার মর্মন্তুদ বুকে
জন্ম নেয় অজস্র অমানিশা,
থেমে যাওয়া অচল আগামী যেন
কী আশায় মেলে দেয় সুতোর রুমাল
কলাপী হাতে,

বশির আহমেদ






হাই!
এক মিনিট পর-  হ্যালো !
দুই মিনিট পর- এত দাম দেখান কেন?
আরও দুই মিনিট পর -দাম দেখালাম কোথায় রে ভাই ?
দশ মিনিট যাবৎ নক করছি আর এতক্ষণে জবাব দিলেন ।
স্যরি ভাই আমি ওয়াশরুমে ছিলাম ।
সে যাক ! কোথায় থাকেন ?
ঢাকায়।
কি করা হয়?
ওরে বাবা এ আবার কার পাল্লায় পড়লাম! দেখাই যাক কি বলতে চায়? ভাই দিনে আনি দিনে খাই।
পরিবারে ছেলে মেয়ে কজন?
ডজন দুই।

হাফিজ রহমান






এখনও খুঁজি
এখনও খুঁজে ফিরি মাটির গন্ধ
কাশবনে জোয়ারের শব্দ,
জলে ভেসে যাওয়া লাটিমের ফল
কিম্বা সিক্ত কোন হিজলের ফুল!

স্রোতে ভেসে যাওয়া ছইয়ের নৌকো
উদাসীন মাঝির ভাটিয়ালি সুর,
ভাষার সৌন্দর্যে মোড়া কথার মালা,
গ্রাম্য কবি মোকসেদ আলীর
আনকোরা গীতিকবিতা!

অম্বিকা মজুমদার জেনি




আক্ষেপ
আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন জনাব?
     হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি!
     শুনেছি আপনি নাকি অন্তর্যামী!
     কী বলবো তাই, প্রতিদিন ভাবি!
অথচ,
অনেক কথাই জমা পড়ে থাকে দিনান্তে;
অনেক অভিযোগ,
          অভিমান আর দীর্ঘশ্বাসও জমিয়ে রাখি আপনার জন্য!
          না না, আপনার জন্য নয়;
          আমার নিজের জন্যই জমিয়ে রাখা,
আর মাঝে মাঝে আপনাকে সাক্ষী মানা,
এই আর কি।

বাবুল হোসেইন




বাস্তুসাপ অথবা জীবনানন্দের পেঁচা বিষয়ক কবিতাসমগ্র

পুরোনো বাড়ির যে অংশটাতে আমি থাকি সেটা মোটামুটি বেশ আরামদায়ক এবং নির্ঝঞ্ঝাটই মনে হইছিলো। আমার ভূতে প্রেতে দেবে বিশ্বাস নেই, ভয়ও পাই না। দোতালার নীচে আমি থাকি একরুমে, পাশের রুম দুইটা পরিত্যক্তই বলা যায়। দোতালায় কেউ থাকে না। মাঝে মাঝে একজন পাগলিনী এসে থাকেন। একদিন আমার রুমে ঢুকে বলতেছেন, আমার খাবার কোথায় হারামজাদা, আমার কাঁথাকম্বল কোথায়? আমি তো অবাক, বলে কী? ঠিক তারপরেই, দেখি, সারা বাড়িতেই আগুনের হলকা। আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি উনি আগুন জ্বালাইতেছেন আর এতো বেশি লাকড়ি দিছেন যে, সেই তাপ সমস্ত বাড়ি আলোকিত হয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞেস করতেই উনি ক্ষেপে গেলেন। আমার শীত লাগলে কার বাপের কী? আমি ফিরে আসবো শুনি, উনি আমাকে গালি দিচ্ছেন, হারামির বাচ্চা বলে। পরে শোনলাম, উনার একমাত্র ছেলে অজিৎ, যে তার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে, সেই ছেলেকেই তিনি সারাদিন গালাগালি করেন, এইটাই তার পাগলামি।

আসমা অধরা





বিহ্বল ডানা -
কোনো এক চন্দ্র মাসের অর্ধেক চাঁদ উড়ে যাওয়া রাতে সেরে যায় ম্রিয়মাণ নদীর জ্বর। ঠিক তার পরই স্রোত উগড়ে দেয় বুকমধ্য খয়েরী হয়ে আসা মাংসের দরদের মত উড়ুক্কু খুলি। মৃণ্ময় সুরাপাত্রের মধ্যে জমে থাকে ক্রুর যমদূতের অশ্রু। অথচ বিধাতার প্রেরিত পুরুষের চোখ দিনে দিনে শীতল থেকে শীতলতর হতে থাকে, চোখে ভাসে ক্রুশসময়ের ছায়া। কেতকীর বনে ঢোলকলমির রেণু মাখা বাঁশিতে ফুঁ দেয় অদৃশ্য কেউ, অথচ সে বাঁশিতে পুড়ে যাচ্ছে যকৃত।

শাপলা জাকিয়া




একটি রহস্য গল্প
মিজান সাহেবের ঘুম ভেঙ্গেছে অনেকক্ষণ। সেই তখন থেকে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি ব্যথিত চোখে। কেনো এতো দ্রুত সাতটা বেজে যায়! চোখ টেনে খুলে নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, আসলে ছয়টা বাজে। নিশ্চিন্তে আরও একটা ঘন্টা ঘুমিয়ে নেয়া যেতেই পারে। কিন্তু ঘড়িটা কিছুতেই সেটা মানতে রাজি না। ছোট কাটা টাকে সে সাতটার ঘরে জেদী ছেলের মতো দাঁড় করিয়ে রেখেছে।চোখটাও মিজান সাহেবকে বিশ্বাস করলো না। ঘড়িটাকেই করলো। অগত্যা বিছানা থেকে নিচে নামেন তিনি শরীর ঘষটে ঘষটে। পঞ্চাশ বছরের পুরানো শরীরটা আর একটু আরাম চেয়েছিল। সেটা দিতে পারলেন না। অফিসের তাড়া আছে। তাই স্যান্ডো গেঞ্জিতে আটকে থাকা হৃষ্ট -পুষ্ট ভুড়িটায় হাত বুলিয়ে নিজের আরামের ঘাটতিটা পোষানোর ব্যার্থ চেষ্টা করেন তিনি। ঘার ঘুরিয়ে একবার দেখে নেন বিছানায় শুয়ে থাকা বছর পঁয়তাল্লিশের গিন্নী হুমায়রা বেগমকে। একদা ছিপছিপে তরুণী ঢোলা কোলবালিশ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। ম্যাক্সি পড়া যে কোন স্বাস্থ্যবান মহিলাকে মিজান সাহেবের কোলবালিশ বলে মনে হয়। আগে বয়স্করা শাড়ী পড়তেন। বয়সের কারণে তাদের মধ্যপ্রদেশ স্ফিত হলেও দৃষ্টিকটু লাগতো না। আঁচল দিয়ে ঢেকেঢুকে রাখতেন। এখন হয়েছে ঐ এক ম্যাক্সি। যেটা পড়ে মোটাসোটা মহিলা গুলি বেঢপ কোলবালিশের আকার ধারণ করেন। যে কোলবালিশ সুদৃশ্য নয়। কোথাও কোথাও অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত তুলা ভরা হয়েছে।

পিয়ালী বসু





যাপনচিত্র 
জীবন ও যাপনের মধ্যে কোনরকম সাযুজ্য রাখিনি ইচ্ছে করেই । এখন বিস্তৃত করেছি পরিসরের ব্যাসার্ধ, যাবতীয় বিরহ অভ্যাস... 
:
নিজেকে আগলে রেখো জীবন ... স্বল্পকালীন শালীন সংলাপে
অনবরত শব্দক্ষরণ ... আর স্বয়ংক্রিয় মুহূর্তের আলফাজ মেপে
:
আলনায় পাট করে রাখো ছায়া- শরীর
 
যাপনের গালিচায় এখন আত্মানুসন্ধানের সর্বশেষ চিত্রকল্প


বেলাশেষে 
কথা'রা এখন নেমে আসে নৈর্ব্যক্তিক দুর্যোগের মতো 
:
সুদীর্ঘ নীরবতা পালনের মধ্যস্থতায়
 
'প্রেম ' মহানাগরিক সম্পর্কের আখ্যা পায়
 
:
ছুঁয়ে দেখা হয়ে ওঠেনা আর ...
তিনজন্ম পার করে ফিরে আসা প্রথম ঈশ্বর জন্ম মনে করিয়ে দেয়
 
:
চলে যাওয়া ' আসলে অকাল শপথ ভাঙা ... জীবনের মধ্যবর্তী ঋণমাত্র
_________________

সৈয়দ শিশির




মুর্শিদ বিনে কেউ নেই
একদিন ছিলাম আলমে আরওয়ারে, যেখানে যুগের পর যুগ কাটছিল অবনত মস্তকে।  কী ভেবে তিনি, যিনি একক ও অদ্বিতীয়- একদা অন্য সবার সঙ্গে আমাকেও শপথের মেলায় ডাকলেন। তিনি যা যা বললেন, সবই মেনে নিলাম। তারপর ছুটে আসা খেলার মাঠে। খেলার মাঠে খেলা করি, দিনরাত খেলা করি। ডুবে রঙের মোহে, ভ্রান্তির ঘোরে খেলার মাঠ আর পথে-প্রান্তরে খেলা করি। ফেলে আসা পথের মায়া ভুলে খেলা করি। রঙে ডুবে রক্ত মেখে সেলফি তুলি। ‘আমি’ আর ‘আমার’ শানে ছায়া খুন করি। মুর্শিদের চরণ ভুলে অভিনয় করি। এভাবে কতোকিছু যে এনেছি দখলে, যৌবন গাঙে কেটেছি সাঁতার। তবুও আজ ঘিরেছে আঁধার।

আরাফ করিম




গোয়েন্দা গল্প
লেখক খুন


ভোর হতে না হতেই ইন্সপেক্টরের ফোন। তার পরেই চলে এলাম এখানে। একজন লেখকের বাড়ি। খুব বড় লেখক নন। মোটামুটি ধরণের। এলোমেলো জীবনযাপন করতেন। বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশের মধ্যে। কাল রাতে খুন হয়েছেন। সকালে পত্রিকাঅলা পত্রিকা দিতে এসে দেখে দরজা খোলা, ভেতরে লাইট জ্বলছে, জানালা খোলা হয়নি। এমনটা কখনো দেখা যায়নি এবাড়িতে। তাই কৌতূহলবশত ভেতরে ঢোকে। তখনই দেখতে পায় লেখকের লাশ, পুলিশে খবর দেয়। তাকে অবশ্য ইন্সপেক্টর এখন বারান্দায় বসিয়ে রেখেছে।
এলাকাটা নিরিবিলি। উঁচু উঁচু বিল্ডিং এখানে কম। একতলা পাকা বাড়িটার চারদিকে দেয়াল। ভেতরে যাই ঘটুক বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। গেইটটা অবশ্য বাইরে থেকে খোলা যায় তবে ওটা দেখে মনে হচ্ছে খোলাই থেকে সবসময়। 

আকিব শিকদার



সুখ অসুখ
আকাশচুম্বী এক প্রশ্নবোধক এঁকে দিয়ে তুমি
শুধালে আমায়- ‘ভালো আছো?’
আকাশপাতাল আশ্চর্যবোধক নিয়েই
বললাম- ‘মুখ দেখে তুমি কী বুঝেছ!’

আনোয়ার কামাল





সুদূরিকা-১৩
গত রাতে তুমি আমাকে একটি কবিতা লিখতে বলেছ
আমি পারিনি, আমি পারি না-
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
কবিতা আমার ভেতর নাজিল হয়, আমি কবিতায় ভেসে বেড়াই
তুমি বললেই আর আমি ইচ্ছে করলেই কবিতা লিখতে পারি না