25 September 2018

শব্দ —ফারিয়া তাবাসসুম



বাইরে আষাঢ় এর বৃষ্টির শব্দ, ভিতরে ঝাপসা অস্পষ্ট-কোলাহল। বেশকিছু অগোছালো টেবিল চেয়ার। এক কোনায় বসে বই পড়ার মতো নিরিবিলি জায়গা, আরেক কোনায় দেয়ালে  পুরনো ভাব ফুটিয়ে তুলতে ইট-সিমেন্ট এর খেলা করান হয়েছে, আর আবছা আলো-আধারের খেলা। এসবের সাথে বোনাস হলো উষ্ণ কফির গন্ধ। জায়গাটাতে একটু ক্ল্যাসিক ভাব আছে তা বলতেই হবে। আজকে এসব কোনটাই মনঃপুত হচ্ছে না, কেবল মাত্র বৃষ্টিটার জন্য, সব কেমন স্যাঁতস্যাতে লাগছে। ক্যাফেটেরিয়াও অসহ্য লাগছে এই অপরিচিত কোলাহলের জন্য। অন্যান্য দিন ঘন্টার পর ঘন্টা পার করা যায় নিজের পছন্দের সল্ট কফি আর ল্যাপটপের সাথে। আজ সব অসহ্য লাগছে। বৃষ্টি বাড়ার সাথে তাল মিলিয়ে কেমন যেন অসহ্যটাও বাড়ছে। মানুষের মনে এত রং কোথা থেকে আসে? এই পানি পরা দেখে। কবিতা গল্প গান প্রেমিক প্রেমিকার প্রেমের সিনেও বৃষ্টি নামক পানির ব্যবহার থাকা চাই।

মাথা ধরছে। দ্বিতীয় দফার কফির অর্ডার দিয়ে টেবিলে মাথা রাখতেই কিসের একটা শব্দ হলে। শব্দটা বৃষ্টি বা কোলাহল কোনটারই না। তাহলে, কিসের শব্দ! কিন্তু কি আশ্চর্য এত সব ভারি শব্দের মধ্যে স্পষ্ট হালকা একটা শব্দ কি করে শুনতে পাচ্ছি। হৃদপিণ্ডের!! হ্যাঁ এতো এতো আমার হৃদপিণ্ডের শব্দ। কিন্তু কেন কী কারনে শুনছি।
-মেডাম
-মেডাম
-হুম!
-উঠুন বাড়ি যাবেন না? আমরা ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করবো।
-কটা বাজে
-সাড়ে ১১ টা
-ওও
বিল মিটিয়ে কিছুদূর আসতেই সাঁটার পড়ার শব্দটা কানে লাগলো। এখন বাইরে রাজ্যের নিস্তব্ধ, শান্ত পরিবেশ, সারাদিন এর অসহ্য ভাবটাকে সরিয়ে কেমন একটা ভারি ভাব জায়গা তৈরি করে নিল। আবার বৃষ্টি এলো এবার ভিজিয়ে দিল আমাকে। বুঝিয়ে দিলো, সে সকল মৃত্যুর মাঝে জীবিত। কারণ তারও শব্দঋণ আছে আমারই মতো।




No comments:

Post a Comment