14 May 2017

তুহেল আহমেদ






বেঁচে থাকুক নীল জল

অসীমের শূন্যে বা শূন্যের অসীমে ,
মিল্কিওয়ের  প্রতিটি  বালুকণায়
বা  অখেয়ালের  দেয়ালে, খসে যাওয়া রংয়ে  ,
তীরহীন নদীর মোহনায় বা অবহেলার ভাঙা  কাঁচের  টুকরোয় ,
বেঁচে  থাকুক  তোর  ঘৃণা,
তাচ্ছিল্য  ভরা  নিঃশ্বাসের  রেশ...
বেঁচে থাকুক আজন্মলালিত ভালোবাসার আঁড়ালের কামুক লোভ , তোর ভালোবাসা …

তোর চোখ তোর মায়াময়ী কন্ঠস্বর , তার গান ,
বেঁচে থাকুক নীল জল…
ঘরের কোণে অবহেলিত  মুচড়ানো  কয়েক চিঠি ,
ধুলিমাখা ডায়েরীর পাতাগুলির ধুলো , বেঁচে থাকুক …
বেঁচে থাকুক বিকেলের রোদ,
পাহাড়ের সবুজ স্বপ্নের সেই ফোস্কা কুঁড়ানো, দৌড়ঝাপ  ,
তোর ঘরের পর্দার ভাজে আটঁকে থাকা কত  শত  মজার গল্প ,
হাসা-হাসি দু' এক অশ্লীল কৌতুক …
বেঁচে থাকুক সন্ধ্যার বুক,
জোনাক পোকার পালকের ছোঁয়া বা
তাদের আলোর ভালোবাসা বিলানো  শহর …
বেঁচে থাকুক তোর তারার আকাশ, হাজারো তারা ,
তোর হাজারো রূপ,
ঘুম ভাঙা রাতের দুঃস্বপ্ন আর
তোর অধরে আমার কোমল স্পর্শ, বেঁচে থাকুক …
বেঁচে থাকুক আমার স্বার্থপরতা আর
তার ফাঁকে তোর স্বার্থকামী কামুকতা …
অসীমের শূন্যে বা শূন্যের অসীমে,
মিল্কিওয়ের  প্রতিটি  বালুকণায়
বা  অখেয়ালের ভাঙা  কাঁচের টুকরোয় ,
বেঁচে  থাকুক  তোর   ভালোবাসা, ঘৃণা ,
তাচ্ছিল্য  ভরা  নিঃশ্বাসের  রেশ, বেঁচে থাকুক।




সান্ধ্য শিশিরের অপরাধীর শাস্তি
এক  ঘুমিয়ে যাওয়া সন্ধ্যার চোখে
আমরা হেঁটে ছিলাম  
শিশিরের শহর ছেড়ে এক জলহীন জলাভূমির ভূমি মাড়িয়ে
হেঁটেছিলাম বহুদূর, কয়েক শতাব্দী ধরে
নির্ভর কুয়াশার দুর্ভেদ্য দেয়াল ঘেঁষে, হেঁটেছিলাম ।
হেঁটেছিলাম জোৎস্না কুড়িয়ে মালা গেঁথে গেঁথে
আমাদের প্রথম স্পর্শের সাক্ষী হবে বলে,
যার সুতো হতো তোমার আমার  হেঁটে চলারই পথ!
আমরা হেঁটেছিলাম, পায়ের পাশে পা বিছিয়ে  
ঘাসফুলের গন্ধ মেখে হাতের পিঠে উষ্ণতা এঁকে
কত শত কালের ক্লান্তি ভেঙে মহাকাল পেরিয়ে ।
অন্ধকারের পাপী চোখ টেনে ধরেছিল কালো পাড়ের ঐ শাড়ীর আচল
কুয়াশার দুর্ভেদ্য দেয়াল ভেদ করে আমরা জড়িয়ে ছিলাম 'ভালবাসি' বলে!
এক নিঃসঙ্গ  সিলিকার প্রতিফলিত আলোতে জ্বলছিল তোমার
কপালের রক্ত বিন্দুর ফোঁটা,
যেথা ছুঁয়ে দেখিনি বলে, অভিমানে নেমে এসেছিল
ইতিহাসের সকল পৃথিবীর অমাবস্যা ।
কিন্তু তুমি তো দেখো নি সেই মধ্য আকাশের রক্ত বিন্দুটি
আমার হৃদয় থেকেই ঝরেছিল, তোমার অগোচরে!
আমার প্রথম সন্ধ্যার জানালা
তোমার নিঃশ্বাসগুলোর ছাপ
ধরে নিতে পারে নি ঠিক, প্রথম ছিল কিনা!
তবু তুমি হেঁটে চলে গেলে
আমি আটকে যাওয়া বোতামেই থমকে ছিলাম,
তুমি আর পেছন ফিরে তাকাও নি!
আমরা হেঁটেছিলাম  হাজারো সন্ধ্যা হাজারো রাত
হাজারো আকাশ জুড়ে  ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে  আছে
লক্ষ কোটি জোৎস্নার মালা, আমাদের প্রথম  স্পর্শের সাক্ষী হয়ে!
নিজেকে তবু সামলে উঠি আমি শতাব্দীর সান্ত্বনায়
মিছে মিছি গল্প  আঁকি, একাকী তারার আকাশে তাকিয়ে
নক্ষত্রের চোখে চোখ রেখে,
আমার প্রথম সন্ধ্যার জানালায় তুমি এসে কড়া নেড়েছিলে
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, শুনতে পাই নি!

No comments:

Post a Comment