05 July 2016

সুজয় চক্রবর্তী



সোহাগের সাথে ডিভোর্সের মামলাটা ঝুলে রয়েছে। অনেক দিন হল ও আর আমি পরস্পরের মুখোমুখি হইনি। আর হতেও চাই না। আমার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করে ইদানিং। দড়ি আমাকে ডাকে ভীষণভাবে...

মা বলেছিল-কেন, সতীন নিয়েও তো অনেকে ঘর করে। করে হয়তো কেউ কেউ। মা'র মুখের উপর বলে দিয়েছিলাম, “আমি পারবো না”।
বাপের বাড়িতেই মা ছেলেতে থাকি। আমি স্কুলে চলে আসার পর সোনাইয়ের দেখভালের দায়িত্ব গিয়ে পড়ে বাবা-মা'র উপর। সেদিন স্কুল থেকে সবে বাড়ির চৌকাঠে পা রেখেছি, বাইরে থেকে শুনতে পারছি দাদু-নাতির কথাবার্তা। দরজার পর্দা হাওয়ায় দুলছে, সরালাম না। যতদূর বুঝলাম বাবার নস্যির ডিবেটা জানলা দিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে সোনাই। আর তাতেই বাবার রাগ। বাবা মা'কে বলছে শুনলাম," কই গো, ওটাকে বের করে দাও ঘর থেকে।
অমনি সোনাইয়ের উত্তর, আমাকে বের করে দিলে মা তো আর বাচ্চা পাবে না। "আমরা বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসবো।" ঢোক গিলে গিলে ধীরে ধীরে সোনাই বলতে লাগলো' "ওরা তো পুতুল। কথা বলতে পারবে না। মাকে চুমুও খেতে পারবে না...।"
সোনাইয়ের অস্ফুট কথাগুলো শুনে চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়তে লাগলো। চোখ মুছে ঘরে ঢুকতে যাবো, অমনি সোনাই আমাকে দেখে দৌড়ে এসে 'মা' বলে জড়িয়ে ধরলো।

দড়ি আমাকে ডাকে। রোজই। কিন্তু সোনাইয়ের ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমার নেই।

No comments:

Post a Comment