28 June 2018

ফাহ্‌মিদা বারী—অন্ধ জীবন



:::: এক ::::
একটানা পানি পড়ার আওয়াজ ভেসে আসছে।
কেউ বুঝি বাথরুমের ট্যাপটা ছেড়ে রেখেই চলে গিয়েছে। টিপটিপ টিপটিপ...ফোঁটাগুলো বেশ বড়বড়। ট্যাপের নীচে মনে হয়, স্যান্ডেল টাইপের কিছু একটা আছে। আওয়াজটা খুব তীক্ষ্ণ নয়, খানিক ভোঁতা। বাইরে এতক্ষণ গাড়ির হুইসেল আর রিক্সা টেম্পুর প্যাঁ-পু-তে মাথা ধরে যাচ্ছিলো। সেসব আওয়াজ কমে আসতেই এখন শুরু হয়েছে এই ট্যাপের পানি পড়ার আওয়াজ।
বেশ অনেকদিন আগে একটা কথা শুনেছিলাম। যাচাই করে দেখার সময় অথবা সুযোগ কোনটাই হয়ে ওঠে নি আগেশুনেছিলাম, মানুষের একটা কোনো ইন্দ্রিয় অচল হয়ে গেলে নাকি অন্য ইন্দ্রিয়রা আরো বেশি মাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এক ইন্দ্রিয়ের অবসর গ্রহণের সুযোগে অন্য ইন্দ্রিয়গুলো দায়িত্ব বেশ কয়েক দফা বেড়ে যায়। এখন তো হাতে সময়ের অভাব নেই। তাই প্রতিনিয়ত কথাটার সত্যতা মেপে দেখার চেষ্টা করছি আজ দু’বছর হতে চললো এক দূর্ঘটনায় চোখ দুটো হারিয়ে আমি পুরোপুরি অন্ধ।

15 June 2018

মাহতাব হোসেন—বীথি'র বানান ভুল



শহীদবাগের মসজিদ পেরোতেই তেড়েফুঁড়ে বৃষ্টি নামলো। আমি গা বাঁচাতে কোথাও ঢুকে পড়বো কিনা এমন চিন্তা করতে করতেই ভিজে গেলাম। আর মাত্র দেড়দু’মিনিট হাঁটলেই নীতুদের বাড়ি। ১৭২/এ। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই চলে এলাম। ওদের বাড়িতে কলবেল নেই। দু’তলা পুরনো ধাঁচের বাড়ি। গেটের ওপর গোলাপি রঙা বোগেনভিলিয়া ছড়ানো।
কড়া নাড়তেই দৌঁড়ে এলো নীতু। স্যারবলেই একটা মৃদু চিৎকার দিয়ে দ্রুত দরজা খুলে দিল। আমি খুব স্বাভাবিক ভাবেই ওদের বসার ঘরে চলে এলাম। এরমধ্যে ও একটা গামছা নিয়ে এসেছে। ফ্যানটাও ফুল স্পিডে ছেড়ে দিয়েছে। নীতুর হাত থেকে গামছা নিয়ে বললাম, তোমার আম্মু নেই। প্যান্ট কম ভিজেছে তবে শার্টের অবস্থা যাচ্ছেতাই। ভেতরে শ্যান্ডো গেঞ্জি পরি না। নীতু বলল, আমু রান্নাঘরে।

09 June 2018

ভিন্ন স্বাদের পাঁচটি অণুগল্প—সুধাংশু চক্রবর্ত্তী



।। চুরি-ডাকাতির অণুগল্প ।।
এর পর কী হবে

ডাকাতি করতে এসে ধরা পড়লে কী হয় জানিস? ঠাশ-ঠাশ-ঠাশ-ঠাশ...ডিসুম-ডিসুম-ডিসুম-ডিসুম...
জানবো না কেন? যা যা জানতাম সে-সবই যে হয়ে চলে আমার সঙ্গে।
এরপর কী হবে জানিস? চটাস-চটাস-চটাস...ডিসুম-ডিসুম-ডিসুম-ডিসুম...
জানবো না কেন? জানি বলেই তো ঘেন্নায় মরে যাচ্ছি। ডাকাতেরও অধম যে থানার ওই...
তাহলে বল এরপর কী কি ঘটতে পারে তোর কপালে?  ঠাশ-ঠাশ-ঠাশ...ডিসুম-ডিসুম...
আর মেরো না গো বাবুরা। বলছি বলছি। সব বলছি আপনাদের।
বল–বল। না বলা ইস্তক...ঠাশ-ঠাশ-ঠাশ...ডিসুম-ডিসুম...
এগুলোই আবার রিপিট হবে থানায় গিয়ে জমা হবার পর। তার সঙ্গে...
তার সঙ্গে কী? ডিসুম-ডিসুম...ঠাশ-ঠাশ...
ও বাবুরা গো-ও-ও, দারোগাবাবু যে সব ডিম...আমি আর বলতে পারবো না বাবুরা। জানতে পারলে দারোগাবাবু যে আমাকেও হজম করে দেবেন গো-ও-ও-ও....

গুচ্ছ কবিতা—সম্পা পাল



কাল্পনিক পৃথিবী
সামনে একটা কাল্পনিক লম্বা রাস্তা
সেখানে অনেক নির্জনতা, আর ধুপছায়া।

এরপরে আরও একটা রাস্তা সেটাও কাল্পনিক
রাস্তার ওপাশে একটা দরজা সেটাও কাল্পনিক।
দরজার ওপাশে কাল্পনিক পৃথিবী
কাল্পনিক পৃথিবীতে একটা কাল্পনিক চরিত্র।