25 October 2017

তৈমুর খান




 

সরবত

আবেগের জলে সরবত বানাও
দু চামচ মেধার চিনিও দেবে তাতে
শব্দ আর বাক্যের গ্লাসে ঢালো

কমা দাঁড়ি যতির চুমুকে স্বাদ অনুভব হলে
ভাগ করো উপমা রূপকে
চিত্রকল্পের নকশা কাটা নতুন নতুন আধারে

সরবত বানাও ভাষার সরবত
নতুন আগন্তুক এলে তুলে দাও

কবিরা সবাই সরবত ওয়ালা
পাঠক তার লক্ষ্মী, আগন্তুক



বিকেলের স্বরলিপি

আসন্ন বিকেলে যে নদীর তীরে এসে পৌঁছে গেছি
তার জলে মায়া ইস্তেহার
নারীর মুখের মতো স্নিগ্ধ অসহায়

গাছেরা এখন বন্ধু
সমীহ সূর্যের আলো পড়ে
অস্তিত্ব জুড়ে নিভৃত আলাপ
জলজ বিভাবে নিথর স্বরলিপি

বলো, দূর সঙ্গম
কখন সমুদ্রে মেলাবে ?
এখানে নতুন জন্ম অন্ধকার
এখানে বিকেল চরে ঘুমের ভেতরে 


আত্মরক্ষা প্রচারের যুগ

নিজের কাছেই দাঁড়ালাম
চারিদিকে সাম্প্রদায়িক কথা উঠছে
মানুষের রূপ বদল ঘটছে
কেউ কারও দরজায় উঠতে দেবে না

যে শব্দ ভেসে আসছে তা কি যুদ্ধের ?
যে আর্তনাদ উঠছে তা কি মৃত্যুর?
তবে কি আত্মরক্ষা প্রচারের যুগ শুরু হয়ে গেল ?

নিজের কাছেই দাঁড়ালাম
মাটিতে মলিন মানবিক ছায়া
নিজেরই জীবনরসে ভিজিয়ে দিচ্ছি ওকে


রূপান্তর

বাবা যে চেয়ারে বসতেন
সেটি সব সময় ফাঁকা থাকে।
বাবা যে লাঠি ব্যবহার করতেন
সেটি সব সময় দাঁড় করানো থাকে

আমাকে জ্বর হলে ওই চেয়ারে গিয়ে বসি
আমি দুর্বল হলে ওই লাঠি হাতে নিই



এখন বাবা না থাকার কোনো দুঃখ নেই
নিজের হাতে হাত রেখে দেখি  :
এই তো আমিই আমার বাবা !

আমিই ক্রমশ বয়স্ক নক্ষত্রটির মতো


পৃথিবী

তুমি আসবে বলেছিলে তাই
পাথরে ফুল ফোটাতে চেয়েছিলাম
বৈশাখের ধুলো উড়া রাস্তায় বলেছিলাম :
নৌকা ভাসুক !

অন্ধকারে একা একা নিজেকে মনে হয়েছিল
আকাশ
আর হৃৎপিণ্ডটা পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে জ্বলে উঠেছিল

পৃথিবীর সমস্ত বন্ধ দরজা খুলে দিতে দিতে
নিজেও পৃথিবী হয়ে গড়াচ্ছিলাম কেবলই
তোমার পায়ের কাছে…




No comments:

Post a Comment