12 April 2018

আয়না- রত্নদীপা দে ঘোষ



ততবার বেসেছি। অই যে মাদক-রসিলা।
নেশার তছবিরদানা। সম্মোহন দলা পাকিয়ে।
গলার কাছে উঠে আসা। এবাদতের কিংশুক। বারবার  ইচ্ছে করে।
নিরানব্বইভাগ অন্যকোণে। তারে চাই। রা-কাড়া ইশারা ইংগিত। ইচ্ছা করে।
ভিক্ষাদাত্রীর পায়ে দেড় বছরের বৃত্ত কাটতে কাটতে। আয়তকারে কাঁদি।
দীক্ষা নিই খুকুতারা। নীহারিকা খোয়ানো পরশ।
শোনো তুমি। চাই তোমাকে। এই শরীরে । নবাগত আদরের সাড়ে তিন হাত কায়দা।
সুদর্শন গুম্ফাটি। ক্ষিপ্রপাখির নখরজমি।
শানিত ঝাপটের মত পেরোতে চাই। তোমার হু – শ – শ কোরে উড়ে যাওয়া চেতাবনির আয়না।



মা বললেন, ভাঙা আয়নায় কখনো মুখ দেখিস না।
মুখ ক্ষয়ে যাবে । মুখ কেটে যাবে । দেবতার কাছে তোর এই কাঁটা-ছেঁড়া প্রার্থনা কোনদিন পৌঁছবে না।
বাবা বললেন,  দেখিস আয়নার সৈন্ধব ঘাটে ঘাটে। লবন-লবন খেলিস নে।
সেই কবেকার গামাযুগের নোনাপানি। পায়ের তলায় খুব খিলখিল। ভেসে থাক।
জেনে রাখ যাকে প্রার্থনা ভেবেছিস সে আসলে অনুবাদকের সমান।
ঈশ্বরজলের গেলাস যতই পান করিস। সুধন্য জলের লেবেঞ্চুস গলে না ।
দেবতা বললেন, আয়নায় মুখ দেখার আগে একটা কথা পরিষ্কার ঝালিয়ে নেওয়া যাক। আয়না যেমনি হোক ভাঙা অথবা গড়ার মুখের কোনদিন হাতবদল হয় না।
ঠিক ঠিক ছুঁতে পারলে অপলক আমি। আমার আয়নায় দু’একটি উড়ুক্কু ভোঁ ছাড়া আর কোনো কাচ নেই।
তোমার নিত্যশিশুতে তোমার মায়ের অঘোরে, তোমার বাবার অনিত্য আস্তিনে আয়নাহীন। তীরহীন। তৃণহীন। নিরপেক্ষ। নিরুত্তাপ।
কেমন ফেনা–ফেনা চাকাশূন্য। সাধুসমুদ্রিকা।



আকাশের বাইবেল। নদীর গস্পেল। দুই রেখার মাঝামাঝি। তিন ভাগ ডাঙা।
এক ভাগ জলখুনিবজ্রপাত। দারিদ্ররেখাটি নিখাদ হিরে। মাখিয়ে মাখিয়ে এই আয়নাখানার সন্ত্রাস।
ব্যবহার করার আগে কবিদের বলছি,
আপনারা নিচুগলার বিপ্লবীদের মানচিত্র করুন। শব্দ করুন তাদের যারা একাঙ্ক বুলেট অভিনয় করতে রাজি আছে। ব্যালটের দেশপ্রেম অনুবাদ করুন। আর শ্রমিকের পাতলাখড়ের আগুন পটকা দিন। রাইফেলের যুগান্ত ক্ষুধিত চেখে দেখুন পিস্তলের স্বাভিমান।
সাত পুরুষ আয়না জমিয়ে জমিয়ে আপনাদের শবগুলি পচে গেছে বহুদিন।
এইবার আর এই কাঠ আর বাঁশের পদ্মশ্রী দিয়ে তৈরি আয়নাকে জেলসেলখুপরিতে বন্দী রাখবেন না।
হাউইর পংক্তি। ঝরুক হস্তমৈথুনের সাংহাই।



আয়না পেকে-ওঠার আগে আমাকে টেনে নিতে চাইছে আবহ ।
মান বন্ধ কোরে আছি তবু আমাকেই আমার গ্রাস। গরাস পাকিয়ে ঝুনোচুন আর সুড়কির গুমোআঁচ।
চাবুকের ডগায় কীটদষ্ট।
পুরুষ জমিয়ে জমিয়ে চকচকে প্রাচীর দিচ্ছি হে ,
কে আমাকে আড়াল রাখবে বলো। এই সময়টাই এমন কালো।
বিনুনির চ্যাপ্টা। দফায় দফায় অস্ফুট হাসির অতুল নিকোটিন।
যেমনটি মিত্রতার ছিলিম থেকেই গাঁজা টানে দুশমনি
বাস্তবিক একটি পদ্য আর একটি যৌনতার দ্বারা সমপরিমাণ ঠকে যাচ্ছি ।

No comments:

Post a Comment