30 July 2018

গল্প: বান—নিবেদিতা আইচ



উঠোনটা একটা ছোট খাটো পুকুরে পরিণত হয়ে গেছে। খুব সাবধানে পা ফেলে হাঁটছে দুলি। অন্য সময় হলে একছুটে ঘরের দাওয়ায় গিয়ে ওঠা যেত কিন্তু এই শরীর নিয়ে এখন ওর সে সাহস হয় না। উঠোনে মেলে দেওয়া কাপড়গুলো শুকিয়ে এসেছিল, এখন সব এদিক ওদিক পড়ে কাদায় মাখামাখি হয়ে গেছে। দুলির আঁচলের ভেতর আধ গামলা চাল, গোটা চারেক আলু আর কাঁচামরিচ। ভেজা আঁচল দিয়ে গামলাটাকে ভালো করে ঢেকে রেখেছে সে।
দাঁতে দাঁত চেপে উঠোন পেরোয় দুলি। বুকটা ঢিপঢিপ করে ওর। দাওয়ায় গিয়েই শরীরটা ছেড়ে দেয়। উঃ এত পানি! বান আইতে আর দেরি নাই রে..নিজেকেই নিজে সতর্ক করে সে। আর এই শঙ্কাকে সত্যি করতেই যেন বৃষ্টির তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। ভেজা শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে ওর। একহাতে শাড়ির নিচের অংশটুকু থেকে হাত দিয়ে নিংড়ে নিংড়ে পানি ঝেরে ফেলে । আঁচল দিয়ে মাথাটাকে বাঁচাতে চেয়েছিল, লাভ হয়নি, ভিজে চুপসে গেছে পুরো শরীর। হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে ঘরে গিয়ে ঢোকে দুলি।

গুণে গুণে হিসেব করে দেখে মাসের সাত তারিখ আজ। পুরো শ্রাবণ মাস পড়ে আছে। এমন বৃষ্টি বড়ই অলক্ষুণে ব্যাপার। দুশ্চিন্তায় বুক কাঁপে ওর। অথচ একটা সময় ছিল বর্ষার মরশুমে দুলি ঘরে ঢুকতেই চাইতো না, ভিজে ভিজে ঘরের সমস্ত কাজ করতো। রহিমার বকুনিতেও কাজ হতো না। এখন আর ওর সেই বয়স নেই, রহিমারও সেই উদ্যম নেই । এসব ভাবতে ভাবতে ভেজা শাড়ি খুলে রেখে শুকনো গামছায় দ্রুত শরীর মোছে দুলি। ঘরের ভেতরেও কেমন অন্ধকার ঘাঁপটি মেরে আছে। বিছানা হাতড়ে কাঁথাটি টেনে নেয় সে। হাঁপিয়ে গেছে একেবারে। একটু বিশ্রাম না নিলে আর চুলা ধরাতে পারবে না আজ। ক্ষিদেয় পেট চুই চুই করছে, তবু কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো দুলি।

দুবর্ষা আগেও এমন ঢল নেমেছিল। দুলির আতঙ্ক লাগে সেই দুর্যোগের কথা মনে এলে। ঘরের ফুটো দিয়ে অনর্গল জল ঢুকে দুর্দশার সীমা রাখে নি ওদের। দুলি তখন সাতমাসের পোয়াতি। রহিমার শরীর তখনো এত ভেঙ্গে পড়েনি। দুলির প্রথম সন্তানের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সবাই। মাজেদ প্রতিদিন দুলির জন্য এটা সেটা নিয়ে আসতো, রহিমা যত্ন করে মেয়েকে রেঁধে খাওয়াতো।
সেবারই আষাঢ় মাসের এক ঘোরতর আঁধার দিনে মাজেদ গোটা চারেক ইলিশ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল। দুলি বিরক্ত হয়ে বলেছে-সবই ঘরের লাইগা আনছো! ক্যান, গঞ্জে বেইচ্যা আইলে কী হইত? সামনে এত খরচ! তোমার বুদ্ধিশুদ্ধি আর কবে হইবো?
মাজেদ দুলির চিবুক ছুঁয়ে দিয়ে ওর হাতে কয়েকটা কড়কড়ে নোট ধরিয়ে দিতেই ফিক করে হেসে ফেলে দুলি।
-কী, এইবার কিছু কও?

মাজেদের কথা শুনে দুলি কপট রাগের ভাণ করতেই মাজেদ ওকে কাছে টানতে চায়। দুলি আর প্রশয় দেয় না, মুখ ঝামটে বলে-আঃ আঁইশটা গন্ধে বমি আইতে চায়, যাও গোসলে যাও!
মাজেদ কাঁচুমাচু মুখ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পুকুরের দিকে যায়।
রহিমা রান্না শেষ করে মেয়েকে খেতে ডাকে। দুলি তখনো মাজেদের পথ চেয়ে বসেছিল। এসময় এত বেলা অব্দি না খেয়ে থাকলে চলে? মায়ের বকুনি শুনে দুলি ঘর থেকে বের হয়। শরীর তখন প্রতিদিন একটু একটু করে ভারী হচ্ছিল। উঠোনে বিছিয়ে রাখা ইটের ওপর পা ফেলতে হিসেব করতে হয়।

প্রতিদিনের হিসেব সেদিনই গড়মিল হয়ে যায়। এক উঠোন পানিতে পিছলে পড়ে দুলি। ঠিক এর আগ মুহূর্তেও নাকে এসে হামলে পড়ছিল ইলিশ ভাজার ঘ্রাণ। চোখের সামনে কেউ যেন কালি লেপ্টে দিয়েছিল ওর, বৃষ্টির রিমঝিম ভেদ করে দুলির আর্তনাদ ভেসে গিয়েছিল রহিমার কানে। কিন্তু রান্নাঘর থেকে ছুটে আসার আগে উঠোনের পানিতে রক্তের সরু স্রোত মিশে গিয়েছিল। বাড়িতে পুরুষ বলতে শুধুই মাজেদ, সেও তো ফেরেনি তখনো, মা একা একাই ঘরে নিয়ে শুইয়েছিল মেয়েকে।

বাদলার দিনে এই স্মৃতিগুলো আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে ওকে। গুমোট লাগে সব। শত কাজের মধ্যেও মৃত সন্তানের মুখটা মনে পড়ে যায় বারবার। পাশের ঘর থেকে মায়ের গলা ভেসে আসে- দুলিইই...দুলিইই...
দুলি বালিশ দিয়ে দুকান চেপে শুয়ে থাকে। আরেকটা অশুভ দিন এলো বলে আতঙ্কে শিউরে ওঠে সে। কাঁথার ভেতর গুটিসুটি দিয়ে সেঁধিয়ে থাকে। সাড়া না পেয়ে রহিমা উৎকন্ঠায় আরো বেশি অস্থির হয়ে যায়।
-পানি ভাঙলো নি রে দুলিইই...
-আহ! মুখের কথায় কোনো সোন্দজ্জ নাই! আষাঢ় মাইসে এমন ঢলই হইবো, এত চিক্কুর দিও না!
দুলি তিতিবিরক্ত হয়ে বিছানা ছাড়ে। মাজেদের উপরেও রাগ হয় তার। শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় সোমবারে ওর নমাস হবে, বেশি বাকি তো নেই। এই সময় লোকটা একা ফেলে যায় ওকে। ফাঁকা ঘরে বড় ভয় হয় আজকালগতকাল ভোরে মাজেদ সেই যে নৌকা নিয়ে বেরিয়েছে ফেরেনি এখনোহঠাৎ হঠাৎ দুশ্চিন্তাটা ফিরে আসে। মানিকের বাপ সহি—সলামতে আছে-নিজেকে বার বার এটাই বোঝায় সে। আবোলতাবোল ভাবনা ভুলতে মানিকের জন্য কাঁথা সেলাই করতে বসে পড়ে সে।
- কয়ডা দিন সবুর দে বেটি, আবার সুঁইচ নিয়া বইলি
-কী করুম, তোমারও তো চোক্ষু দুইডা গেছে, মানিকরে কি মাটিত রাখুম?
-আমারে সুঁই ভইরা দে, আমি সিলাই কইরা দেই, তুই এই কাম করিস না
মানিকের জন্ম নিয়ে রহিমার দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। এই মানিক নামটা নিয়ে দুলি আর মাজেদের আদিখ্যেতা ও ভালো লাগে না তার। আবার সন্তান হারানো মেয়ের মুখটা দেখে মায়ায় বুকটা হু হু করে ওঠে, তাই এই নিয়ে উচ্চবাচ্য করে না রহিমা। দুলিও টের পায় মায়ের অসন্তোষ তবু তার ভাবতে ভালো লাগে, মানিকের অস্তিত্ব ওকে অপত্যস্নেহ আকুল করে রাখে। সারাদিনে অজস্রবার মানিক নামটা আওড়াতে আনন্দ লাগে তার।
-দে আমারে সুঁই সুতা
সুঁইতে সুতো ভরে দিয়ে রান্নাঘরে চলে যায় দুলি। রহিমা ছানি পড়া চোখে নাতির জন্য কাঁথা সেলাই করতে বসে।
-অ দুলি, মাজেদ এত দেরি করতেছে ক্যান ক তো? এত পানি ভাঙতেছে...আমার বড় ডর করে..
দুলির মেজাজ আবার খারাপ হয়ে যায়। পানি ভাঙার কথাটা শুনতে পারে না সে। দুবছর আগের সেই রক্ত আর কাদায় মাখা উঠোনটা ভেসে ওঠে চোখের সামনে। সে ধমকে দেয় মাকে।
-মানিকের বাপ কি দুইদিনের জাইলা? আয়া পড়বো, চিন্তা কইরো না তুমি
-ডর করে আমার
-, তোমার আর কোনো কাম আছে?
দুলি অস্ফুটে বিড়বিড় করে। কথাটা রান্নাঘরের দেয়াল ভেদ করে বাইরে পৌঁছোয় না।
-কী রান্ধোস রে দুলু?
মায়ের এত প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগ্রহ নেই দুলির। কী এমন রাজভোগ রাঁধবে সে! নিরুত্তরে আলুর খোসা ছাড়াতে থাকে। থেকে থেকে ক্ষিদেয় পেট মোচড় দেয় ওর। মাটির দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে দুলি। আঁচলের খুট দিয়ে মুখের ঘাম মুছে নেয়। কলস থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে সবটুকু ঢকঢক করে গিলে ফেলে। শীতল পানিতে ভেতরটা জুড়িয়ে গেলেও তার পরের মুহূর্তেই গা গুলিয়ে বমি আসতে চায়। আঁচল দিয়ে মুখ চাপা বসে থাকে প্রাণপণে। রান্নাঘরের এক কোনায় ছোট টুকরিতে কয়েকটা শুঁকনো বরই ছিল। দুলি দুটো হাতে নিয়ে মুখে পুরে দেয় দ্রুত।

রান্নাঘরের জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় দুলি। বৃষ্টিটা একটু থেমেছে এখন। আকাশটা কেমন খোসা ছাড়ানো লিচুর মতোন ঘোলাটে হয়ে আছে। বর্ষাটা এভাবেই কাটবে। এবার সদাই পাতি করতে পারেনি মাজেদ। হাতে টাকা ছিল না ওর। নদীর বুক নাকি খালি হয়ে গেছে। সে বলে- মানিকের মা, নদী আর সেইরম নাই রে, সব উজার কইরা নিয়া গেছে গা..খালি বুকের ভিতরে জাল ফেলাইয়া ঝিমাইতে থাকি...কোনদিন এই ঝিমাইতে—ঝিমাইতে নদীর বুকেই ঝাঁপ দেই
-হ! কী অলক্ষইন্যা কথা কও তুমি!
দুলি দুহাত দিয়ে মুখের কথায় আগল দেয় মাজেদের। মানিকরে কী খাওয়ামু, কী পিন্ধামু…’ মাজেদ বিড়বিড় করে আপনমনে কথা বলে। দুলিই তখন আশার কথা শোনায়, দুশ্চিন্তা ভুলিয়ে রাখতে অন্য কোনো গল্প জুড়ে দেয়।
পরশু রাতে হুট করে বাড়ি ফেরে লোকটা। দুলি তড়িঘড়ি চুলোয় দুমুঠো চাল বসিয়ে দেয়। মা-মেয়ের খাওয়ার পাট বহু আগে চুকে গিয়েছিল। তবু অল্প একটু ঝোল আলাদা করে রেখেছিল দুলি। মনে মনে সেও হয়ত লোকটার ফেরার অপেক্ষায় ছিল। রাতে ঘুমোতে গিয়ে দুজন ঘুরেফিরে অভাবের কথাই গল্প করে। তারপর একসময় দুলি ঘুমিয়ে পড়লেও মাজেদ অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছটফট করে সারারাত। ভোরে ঘুম ভেঙ্গে খালি মুখেই বেরিয়ে পড়ে আবার। দুলি নিজেকে শাপশাপান্ত করে। কী দরকার ছিল এইসব কথার, অভাব তো তাদের জীবনে নতুন কিছু নয়। আধপেট খেয়ে কতদিন ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু মাজেদ এবার খালি হাতে এসেছিল। হয়তো এটাই ওকে শান্তিতে ঘুমোতে দেয়নি রাতে।

সকালে মাটির সরায় হাতড়ে দেখে চাল ফুরিয়ে গেছে। দুলির মনে পড়ে গত রাতের কথা। মাজেদের জন্য ভাত চড়াতে গিয়ে আর মনে ছিল না ওর। নইলে সকাল সকাল চাল আনতে বেরিয়ে পড়া যেত। পাশের ঘরে রহিমার পঙ্গু প্রায় অবস্থা। পায়ের ক্ষতটা অথর্ব করে রেখেছে। তাকে কোথাও পাঠানোর উপায়ও নেই। এই আট মাসের পেট নিয়ে খুব সাবধানে কাদার মধ্যেই বেরুতে হয়েছে দুলিকে।
দুলি খোসা ছাড়ানো আলুগুলো একে একে ভাতের হাড়ির ভেতর ছেড়ে দেয়। সাদা রঙের ফেনার রাশি পাতিল থেকে উপচে পড়ার অপেক্ষায় ক্রমাগত ছটফট করছে। হঠাৎ কী মনে হতেই তেলের শিশির দিকে চোখ যায় ওর। তেল তলানিতে ঠেকেছে, উপুর করলে কয়েক ফোঁটা বেরিয়ে আসার সম্ভাবনায় আশ্বস্ত হয় দুলি। ভাতের হাড়িতে চামচ দিয়ে নাড়া দেয় সে। আগুনটাকে উসকে দিয়ে ঘাড় ফিরিয়ে মাকে একনজর দেখে নেয়। দাওয়ায় বসে একমনে কাঁথা সেলাই করছে রহিমা। বাঁ-পায়ের আঙ্গুলে দগদগে ঘা টা ভীষণ বীভৎস লাগে দেখতে। একবার ডাক্তার দেখানো হয়েছে রহিমাকে। ডায়াবেটিস না কী যেন আছে বলেছে, তার জন্য ক্ষতটা শুকোয় না। দুলি এত শক্ত শক্ত কথা মনে রাখতে পারেনা। রোগের যত নামই হোক না কেন গরীবের জন্য সবই এক আর তা হলো ওই জঠর যাতনা। দুলি তাই এসব মনে রাখে না। ডাক্তার বলে খালি পেটে অমুক ওষুধ আর ভরাপেটে তমুক খেতে হবে, দুলি ভাবে তাদের আবার ভরাপেট আর খালিপেট! এমন কোনো ওষুধ কি আছে যাতে এই ক্ষুধা তৃষ্ণা মিটে যাবে আজীবনের জন্য?
ভাতের হাড়ি নামিয়ে রেখে সেদ্ধ আলুগুলো খুব সাবধানে বের করে আনে দুলিতারপর তাতে নুনের ছিটা দেয়। তেলের শিশিটা উপুর করে দিয়ে দুটো কাঁচামরিচ ভেঙে নিতেই ভর্তার গন্ধে ক্ষিধেটা মাথাচাড়া দেয়। তর সয়না ওর, গলা বাড়িয়ে রহিমাকে ডাকতে গিয়ে দেখে কখন যেন ঘরের ভেতর চলে গেছে মা। দুলি খেতে শুরু করে দেয়। ডাসা কাঁচামরিচের ঝালে বুকের ভেতরটা জ্বলতে থাকে ওর। জ্বলুনি কমাতে ঢকঢক করে দুগ্লাস পানি খেয়ে ফেলে দুলি। ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে আসতে চায় ওর। থালাবাসন ওভাবেই ফেলে রেখে বেরিয়ে আসে ।

সবকিছু আঁধার করে সমস্ত পৃথিবী দুলে ওঠে তখনই! প্রবল আক্রোশে কেউ যেন পানির কল খুলে দেয় আকাশ থেকে। ডুবন্ত উঠোনে আরেকবার পা হড়কে যায়। দুলি প্রাণপণ চেষ্টা করে নিজেকে সামলে নিতে। দাওয়ার কাছেই মাটিতে পুঁতে রাখা একটা খুঁটি, সেটায় ভর দিয়ে কোনক্রমে দাঁড়িয়ে পড়ে সে। ঘরের ভেতর থেকে মায়ের গলা ভেসে আসে।

-দুলুউ...শিগগির ঘরে আয় মা, আবার পানি ভাঙতেছেআল্লাহ রহম করো...আল্লাহ!

দুলি এলোমেলো পায়ে হেঁটে যায়। তার শরীরের নিচের অংশ থেকেও প্রবল বেগে একটা ঢল নেমে আসে। দুহাতে ভেতরের মানিককে আঁকড়ে ধরে সে, হাত রেখে টের পায় তলপেটটা ওর পাথরের মত শক্ত হয়ে আসছে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে এগোয় দুলি। উঠোনটাকে মনে হয় একটা বিশাল সমুদ্র। মানিকের মা তাতে সাঁতরে বেড়ায় অন্ধের মতো।
--------------


No comments:

Post a Comment