09 April 2017

গীতশ্রী সিনহা




বোধ
দিগন্ত ছুঁয়ে যায় কুয়াশার হিম,
হেঁটে চলে যায় শরীরী ঘ্রাণ,
দূর বনপথ একাকি নির্জন,
পাথরের মতো স্থির অবিচল।
কবে যেন সেই সবুজ নীলিমা ছুঁয়ে!
একাকি চলেছি স্মৃতি - বন্ধন সান্নিধ্যের
চেতনা মেখে...
শব্দহীন আর্তনাদ ভাষা খুঁজে ফেরে-
দু:খ আছে ঠিকানার সন্ধানে, আনমনে,
সুখ আছে বেহিসেবি অপচয়ে, গোপনে।

ভুলে যেতে শিখেছিলাম সেই একদিন!
যবনিকা-অম্লান জলস্রোতের ধারা
রৌদ্রের মতো দৃঢ় হয় পরিণতি-বীজ
আকাঙ্ক্ষা-তীব্র অনুরাগ ভেসে যায়
প্লাবনের জলে...
ভেঙে পড়া খোঁপার অন্ধকার
আছড়ে পড়ে অবেলায়...
তখন মৃত্যু এক বিছানায় সহবাসে
অসময় বর্ণময় ক্যানভাসে সূর্যাস্ত
এ- এক ব্যতিক্রমী শিল্পের কৃত্রিম বুনট
অন্বেষণ...
ক্লান্ত বিছানা শুয়ে থাকে একাকি
অঘ্রাণের শিশির মাখায় অজান্তে
ভাষাহীন স্মৃতির প্রলেপ!


আয় না চলে...
শূন্যতা খুব একলা করে , একলা করে দূর পাহাড়ি
আদর করে ঝুল -বারান্দা জড়িয়ে থাকে লাজুক বাড়ি।
দিনের শেষে হঠাৎ কখন মগ্ন আমি
স্মৃতি যেন এলোমেলো দিগন্তব্যাপী!
চা বাগানের ওপর দিয়ে দুপুর হাঁটে রোদ মাড়িয়ে
কাঞ্চারা সব যাচ্ছে দেখো বাড়ির দিকে গা দুলিয়ে!
পাহাড় কোলে বৃষ্টি এলে, কি ক্ষতি তা কে বা জানে!
ঝর্ণা বেয়ে জল নেমেছে, কাঞ্চিরা সব ভিজছে হেসে খিলখিলিয়ে।
একলা পাহাড় ইশারাতে ডাকছে শুধুই " আয় না চলে"!
চোখ বুজিয়ে নিদেন ঘুমে রাত- দুপুরে স্বপ্নদোষে
দূর পাহাড়ি, তুই কি আমার আপনভোলা সোনার খনি!
আয় না এবার চা বাগানের সবুজ নিয়ে আদর মাখি।

তোকে ছাড়া কষ্ট কে পায় এই পৃথিবীর অন্যখানে!
গভীর রাতে পথের মাঝে কে কাঁদে রে তোর জন্য?
মন খুলে সে বলছে বুঝি, মন অনাথা বলবে কি-সে!
একলা জেগে শয্যাবিহীন লাল গালিচায় উপুড় হয়ে
আয় না চলে ভুবনপুরে, রাখবো তোকে মলিন বুকে
চল না রে আজ বেড়িয়ে আসি আড়াল করে গভীর জলে,
জল বলেছে যেতে আমায় , সাথে নিয়ে জলের বাড়ি,
সাক্ষী হবে জল পরী সব, করবে নাকো সমাজ আড়ি!
বল না , যাবি ???



No comments:

Post a Comment