১.
মহাকালের
ছবি দেয়ালে টাঙিয়ে ছিলাম সেই কবেকার ঘোরগ্রস্থ ভোরে, সেলাই করে করে...
সেইসব
ছায়া-চেহারাগুলো এখন ঝাপসা হয়ে গেছে...
ছাদের
উপর বৃষ্টির আঙুলগুলো ফেটে পড়ছে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে না কি কান্নায়- ঠিক বুঝতে পারি
না...
কৈশোরে কাগজের
নৌকা ভাসিয়েছিলাম পুকুরে...
ভেবেছিলাম-
নৌকাগুলো বড় হবে একদিন,
দেখা হবে মেহেকসমুদ্রে...
আমার
পাখিরা আর উড়াল দিলো না...
দূর
অতীতে পাখিদের ডানা কেটে দিয়েছিলাম
পাখিদের
ডানা রেখে দিয়েছিলাম ছোটবেলার অ্যালবামে...
২.
এখন
নৈঃশব্দের শব্দরা ঘুমিয়ে পড়েছে...
চিরদিনের
জন্য ঘুমিয়ে পড়েছে...
মরুভূমিতে
একা একা টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছি বালির নৌকো
দূরতম
জানালার পাশে দেখি- চিরচেনা কারো ছায়া ভেসে ভেসে ডুবে যায়
আয়নাগুলো
গলে গলে যায়...
চক্ষু
খুলে দেখি- কোথাও চক্ষু নেই, ছায়া নেই, বিম্ব-প্রতিবিম্ব নেই
শূন্য
কুঠরীতে পড়ে আছে
মৃত সব
মুনিরামায়া আমার অগ্নিমায়া...
৩.
নরকের
নীল আগুনের চারপাশে লেলিহান জিহ্বাগুলো উড়ছে
উড়ন্ত
জিহ্বায় গেঁথে যাচ্ছে আর্তনাদের ধ্বনি ও প্রতিধ্বনি
আমি যাই
নি কোথাও
আমার
পান্ডুলিপি থেকে সবগুলো লেখা চলে গেছে
হাতখানি
যে রক্তে ডুবে আছে...
কী করে
লিখি কথা ও মুনিরাকথা,
নদী ও মেহেকানন্দার জল
তবু-
স্ফটিকের
পাখি প্রত্নকলম তুলে দিচ্ছে হাতে
আমায়
ক্ষমা করো পাখি, পাখির পালক, আমায় ক্ষমা করো নদী,
নদীর দুইপাড়
আমায়
ক্ষমা করো
ক্ষমা
করো
ক্ষমা
করো
ক্ষমা
করো
ক্ষমা
করো রক্তকরবী
আমি যে
পাথর কুচি...
৪.
ভেবে নাও
তুমি- মঙ্গলরূপ কিছুটা পুড়ে গেছে পুড়ে-যাওয়া জলের ছোবলে
ভোর
বেলার আলোয় কোনো কমলা-রঙ নেই, ছাই-রঙা বালিকার গুড়া গুড়া শরীর ব্যতিরেকে
ভাঙ্গা
মন্দিরের পাশে আমাদের ভাঙ্গা-শঙ্খের আওয়াজ ভাঙছে তো ভাঙছে
সখা হে, মমি হয়ে
শুয়ে আছি অগ্নিঝর্ণার নিচে
আর জাগবো
না
আর জাগবো
না
কেনো
জাগাতে চাও তবে
কেনো
জাগাতে চাও ঘুমিয়ে-পড়া মৌমাছির ঝর্ণা
এই মমি
আবার কি মানবী হবে মথুরা বৃন্দাবনে।
No comments:
Post a Comment