17 May 2016

চারণ গোপাল চক্রবর্তী




গোপালগঞ্জের মধুমতির তীরে
টুঙ্গিপাড়া শেখ বংশের ঘরে
উনিশশো বিশ পহেলা মার্চ
জন্ম নিলো মুজিব রচিতে ইতিহাস।
স্বাভাবিক নিয়মেই বেড়ে উঠেন অনন্য
লেখাপড়া-দুষ্টামি-গান-ব্রতচারীতে মগ্ন
পারিবারিক নিয়মে করেন বিয়ে
মুজিব-রেণু মুরুব্বিদের দোয়া নিয়ে।
অল্প বয়সে চোখের ব্যারাম
পড়ে চশমা হয় পড়ালেখা হারাম
স্বাপ্নিক মন দেশের তরে
স্বদেশি আন্দালনের সভা-সমাবেশে ঘুরে।
বছর চারেক পর একদিন
শুরু হলো পুনরায় স্কুলের দিন
আপন শিক্ষকের হাতে খড়িতে
গরীবের তরে ত্রাণের সন্ধানে নামে পথে
হারালো গুরুজন থামেনি চলা
সাহস সঞ্চারে সু-যোগ্য চেলা।
অন্যায় দেখলে প্রতিবাদী রুপে
ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্বলের পক্ষে।
শেরেবাংলা ও শহীদ সাহেব আসিলো সমাবেশে
মুজিব চলিলো বীরের বেশে
শহীদ সাহেব কাঁধে রাখিলো হাত
পত্র মারফত পাঠায় আমন্ত্রণ সংবাদ।
মুজিব নামিলো রাজনীতিতে
সমাবেশ-শ্লোগাণ-মিছিল-বক্তৃতায়
যুবক বয়সে আপণ প্রতিভায়
স্থান করে নেয় সমবয়সীদের মনের মণি-কোঠায়।
বাইশে আসিয়া পূর্ণ হইলো বৈবাহিক যাত্রা
মুজিব-রেণু'র সংসার পেলো অনন্য মাত্রা।
দেশের তরে-দশের তরে
পবিত্র মন বিদ্রোহ ভরে
পূর্ব-পাকিস্থানকে পূর্ব-বাংলা রুপে
দেশভাগের কালে প্রস্তাব রাখে।
হয়নি সফল দমেনি মন
ছাত্রলীগ করে গঠন
মায়ের ভাষা বাংলার তরে
লড়াকু মন স্বপ্ন গড়ে।
রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ ব্যানারে
হরতাল ডেকে পিকেটিং করে
হয় গ্রেফতার সহকর্মী সমেত
তবু হাসিমুখ অদম্য বিবেক ।
সেই পথ ধরে বাংলা আসিলো
সালাম-রফিক-বরকত-সফিক-জব্বার রক্ত দিলো।
আসিলো নির্বাচন হইলো জয়ী
পাইলো মন্ত্রিত্ব শাসক ত্রয়ী।
এইবার নামিলো স্বাধীন দেশের স্বপ্নে বিভোর
সকলের সঙ্গে স্থাপন করে ঐক্য'
কমরেড মণি,খোকা রায় বলে
মুজিব চিরকাল স্বাধীনতার মন্ত্র-মূলে।
ঘোষিত দাবি-দাবা বাঙ্গালীর তরে
লড়াই সংগ্রামের প্রেরণাদান করে।
পাকিরা করিলো গ্রেফতার তাঁরে বাঙ্গালী ক্রোধিল
নেতাকে মুক্ত করত দেশবাসী ঐক্য গড়িলো
হইলো মুক্ত সকলের প্রাণপ্রিয় নেতা
বঙ্গবন্ধু উপাধি দিলো মুজিব কে জনতা ।
হইলো নির্বাচন বিজয়ী হইলো শেখ মুজিব
পাকিস্থানি করিলো ছল-চাতুরি অতীব
ঘোষিল মুজিব ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ার ডাক
স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝরুক রক্ত দেশ মুক্তি পাক।
জনতা সকলে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে
ঝাঁপালো সংগ্রামে স্বাধীনতার গান গেয়ে।
পাকিস্তানি সেনাদল অতি কৌশলে বঙ্গবন্ধু কে বন্দি করে
আগুন জ্বালায় শহর জুড়ে,দীর্ঘ নয় মাস ত্রাস সঞ্চারে
অগণিত প্রান হলো বলিদান
আড়াই লক্ষ মা-বোন হারালো সম্মান।
অবশেষে জয় পেলো বাঙ্গালী
উড়ালো পতাকা,জয়বাংলা বলি।
বঙ্গবন্ধু তখনো পাকিস্থানের সেলে
আনন্দ ছিলোনা তাই বাঙ্গালীর দিলে
কারাবাস বঙ্গবন্ধুর হলো অবসান
ফিরিলো স্বদেশ আঁখিজল বহমান।
জয়বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান উঠিল
জনতার মুখ-রেখায় হাসি উদিলো।
এবার নেতা ঘোষিল বারতা
দেশ গঠনে চাইলো একতা-সমতা
অনাহারিদের অন্নের তরে
শেখ মুজিব দ্বারে দ্বারে ঘুরে।
বুঝিলো নেতা বিচক্ষণ
নানামতে কেনো জাতি হইবে খণ্ডন!
দেশের উন্নয়ন কে মূলমন্ত্র করে
বঙ্গবন্ধু চলিলো স্বপ্নের দেশ গড়ে।
শত্রুদল বুঝিলো বাংলাদেশের এই গতি
রুখিতে হইবে,না হইলে বিপত্তি ?
পঁচাত্তুরের পনের আগস্ট মিলে শত্রু কজন
বঙ্গবন্ধু কে পরিবার সমেত করিলো হত্যা
ভাবিলো থাকবেনা বেঁচে বিশ্বাসী জন
থাকবেনা কেও বাঙ্গালীর ত্রাতা।
যেজন বিশ্বাসে বাঙ্গালীর স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ

সেইসব হ্রদে অমর গাঁথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনিমেষ।
______________________

No comments:

Post a Comment