প্রহসন
হরিত সময়ের হিসেবে কিছু আবেশ নিষিদ্ধ
ফুল ঝরে যায়, মুখ
আটকে রেখেছি পুরো সময়
নিক্তিতে মেপেছি প্রহসন, আয়নার প্রতিবিম্বে
রেখেছি গল্পের মোহর। উলটো পথে হাঁটছি।
নিজের কাছে অপরিচিত হয়ে ফিরছি
পলাতক সাজতে গিয়ে পথ হারিয়েছি আগেই
পাললিক সভ্যতা ছুঁড়ে আস্বাদ নিই নগ্নতার
রাতের নিয়নে ব্যস্ত চৌরাস্তা দেখে বিষণ্ণ হই
হারিয়ে যাবার প্রবল ইচ্ছে আবার ঘরকুনো
থাকার প্রবণতা জানান দেয় বৈপরীত্য
রেখা টানতে থাকি নিজের সাথে নিজের।
ছায়াকে আলাদা করি,
আলো কে বিসর্জন।
মানে নেই তবুও... মূকাভিনয় শেষ হলে
নিজের দাঁড়াবার কোনো আশ্রয় নেই
মুগ্ধতা সরালে মুখের সুশ্রী থাকেনা
রূপের ভিতরে কালোর আস্তরণ জমে
নিজের সাথে কাটানো কিছু মুহুর্ত ব্যতীত
কোনো স্পর্শ নেই,
বাকিটা প্রহসন…
পরিমিতি
আয়তক্ষেত্র
জুড়ে আঁকি বিশাল রঙিন ফানুস
বৃত্তের
কল্পনায় মাপতে ভুলেছি রেখার ঘনত্ব
সূত্র বসাই, আয়তক্ষেত্র
= ২ X দৈর্ঘ
+ ২ X প্রস্থ
পুরো অংক
মিলাতে গিয়ে খেই হারাই বারবার
মাঝের
কাটাকুটিটুকু গণনার বাইরে রয়ে গেলো
প্রান্তিক
হিসাবের খেরোখাতাটি ভুল পথের যাত্রী
পিছন ফিরে
মাপি কতটা ভুল হলো বর্গক্ষেত্রে
নিজের জন্য
কোনো খালিস্থান নেই,
মনের
মালিকানাও
বেঁচে দিয়েছি ঘনকের সূত্রে
ভ্রান্ত
সময়ে ক্লান্তি আঁকছি,
চক আর ডাস্টারে
নিজেকে
মাপতে শিখেছি পরিমিতির সূত্রে
হারিয়ে গেছে
পুরোনো ইচ্ছেরা, ডুবসাঁতারে
পেরিয়ে যেতে
পারি চিরচেনা বন্দর,
পাওনার
খাতায় বিশাল
এক শূন্য, অংক
মিলাই আবার।
ভুল আর ঠিক
এই দুয়ের মাঝে বসবাস
বিভ্রম আর
বাস্তবের মাঝখানে গেছি আটকে।
যেখানে ভুল
হিসাব ঠেলে শূন্যতা গড়ে আবাস
তার কাছে
ফিরে আসি উলটো সাঁতারে।
সন্ধ্যার ব্লুজ
গিটারের স্ট্রিং ছিঁড়ে গেলে নতুন সুরের জন্ম হয়
লোডশেডিংয়ের ফাঁকগলে যে সন্ধ্যা নেমে আসে
তাকে শুনিয়ে যাচ্ছে এক অষ্টাদশের কিশোর
ঝুল বারান্দার ওপারে কেউ নেই, শূন্যের আড়াল।
বিকেলের কোমল রোদ বাড়িয়ে দিচ্ছে তেজ
ছাদের দৃশ্যে কেউ দাঁড়িয়ে, অপেক্ষায় চিত্রশিল্পী
মানে নেই জেনেও হাত বাড়ানোই স্বভাব,
ভেসে আসেনা গুণগুণ,
কী গাইছে জানেনা কান
সন্ধ্যার ব্লুজে হারমোনিকার করুণ সুর নেই
গৎবাঁধা কিছু কর্ড ঝড় তুলে গ্রীষ্মের বিকেলে
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে চূড়ান্ত প্রেমের।
সূর্য মুছলে ফিরে যায় ঘরে, প্রেম এঁকেছিল কে?
গিটার? নাকি
সুদর্শন? গিটারের
টুংটাং তো
গোপনে এসে দাঁড়ায়নি পাশে, সেও তো জানেনা
দুটো চোখ বেদুইন হয়ে ঘুরছে মরুভূমিতে।
রাতে কবিতার খাতা,
ল্যাপটপে রাখে স্মৃতি
কবিতায় নামকরণ করে প্রেমিকের, গিটারের
স্ট্রিং বেয়ে নেমে আসে ব্লুজ, আদুরে মখমলে।
হারিয়ে গেল
সব সম্পর্ক, মাঝেরটুকু
ছিঁড়ে
খেলো প্রতিবিম্ব। আয়নায় অচেনা লাগে নিজেকে।
প্রাত্যহিক
ব্যস্ততা গিলে খায় সময়ের পুরোভাগ
উপচে ভরা
ভিড় ঠেলে উঁকি দেয় দৈনন্দিন শোক।
রুটিনের
ভাজে লিখে রাখি পাপ পুণ্যের হিসাব
ক্যালকুলেটরের
বোতামগুলো হয়ে যায় অবশ
উড়তে থাকা ঘাসফড়িংয়ের দলে অচেনা আমি —
তাকে নিয়ে
ভাবতে বসে, লেখা
হয় কিছু কবিতা।
সফলতার
মন্ত্রণা মুছে গেলে রক্তিম আভার জন্ম
উড়ে আসা
বাতাসের ভাজে কিছু প্রহসন লুকোনো
হাতের
ভাগ্যরেখা মুছে গেছে নান্দনিক অবহেলায়
মেঘের ভাজে
জমাটবব্ধ দুঃখকে কী নামে ডাকি?
গল্পের
মোড়কে প্রাপ্তির খাতায় শূন্যতা আঁকা হয়
শূন্যস্থান
জুড়ে থাকে বিশাল এক মৌন সময়,
নীরবতার
ভাজে কার নাম লেখা? কার
শব্দ শুনি?
সব প্রশ্নের
উত্তর হয়না, শুধুই
জমাটবদ্ধ অভিমান...
No comments:
Post a Comment