মেনকা
জেগেছে হাড়ের প্রেম,ক্ষয়ে যেতে দিসনে লালের ফল
তুলে রাখ সোনালী চামচে করে ভ্রু'র পশমে পশমে
আতশি উড়িয়ে দেবে বাসমতী দৃষ্টির রঙিনজল
বেহুলার মদিরে বেহুশ হ'রে আগুন আগুন প্রেমে
স্তনের তিলের কালোরঙ ঢেকে রেখেছিলো আযৌবন
বন্ধ ছিলো বনেদী পৌরুষ, হেটে গেছে শুরীয়া সুন্দরী
কত হুরের দঙ্গল।হেটে গেছে উষ্ণ মজমা সিনান
উটের গতরে বসে বেদেনীর বাজনা শুনেছি গৌরি
মেনকা, ভেঙেছে ধ্যান,তপোবনে নাচের মুদ্রার ছলা
দেহে সুগন্ধি মশলা, ডুবে হরিনীর দাগের আলেখ্যে।
সরিয়ে গাছের ছাল মুক্ত কর্ বিশুদ্ধ নাভির জ্বালা
সরাবের গ্লাস ঠোঁটে তুলি, পরাজিত হ' স্বামীর দক্ষে
এবার তুলে দে থরথরে লোবানের নরম শরীর
প্রেম আর কামের সঙ্গীতে জ্বালাই অস্থির শমশের।
পোকা উন্মাতাল
জলের হাড়ে নকশা বুনে
গাঁথবো পোকার গায়
পোকা উড়বে নিরুপায়
ভিজবে গ্রহের সবুজ গানের ঘাস
কিথারা ঝাঁঝ মাতাবে রঙশ্বাস
পাতার রগে লাল অক্ষরে
মুরাকবার দাগ
যেসব পাথরপরা নাগ
রক্তজলে অঙ্কিত পোকা
পালক জুড়ে নিশ্বাসের ছাল
পাহাড় নিয়ে উপড়ে গিয়ে
বারুদ পিয়ে পোকা উন্মাতাল
আগুন গাছের পাতার রসে আঁকবে বনোশাল
নূরের ডানায় আসমান ডুবিয়ে
চঞ্চু নেড়ে মহারাজ্য বশ
হাজার জিনের বলির ত্রাসে
স্বর্গে জমবে রাস
মদের গ্লাস
গমের দানায় শহর সেলাই করে বালক এগিয়ে গেছে এক প্রাচীন রাজার অপচয়ে কাটানো মদের গ্লাসে । তার হাতে মোড়ানো ছিল ক্লান্ত বাগানের আপেল নৃত্য । রূপালী মুরালি আর বাঁকুড়া ঘোড়ার নকশাতোলা বিকেল, সাজানো ছিল জরির পাগড়িতে। ধানের শরীরে পাখনা নির্মাণের ধ্যানে তার চুলে ধানফুলেরগন্ধ শুয়ে ছিল।
মসজিদ আর মন্দিরের দেয়ালে আচড়কাঁটা রাজা, হাতে দুলছে ভূখণ্ডের মানচিত্র ।
মটরশুঁটির মন্ত্র ভুলে বালক ঢুকে গেলো প্রাচীন রাজার মদের গ্লাসে।
শরীরের মদ
নারীর শুভ্রতা নিয়ে লিখতে গিয়ে সেদিন অসংখ্য রূপক আর তুলনার অবতারণা করলাম। গাছ পাখি মাছ আর বন্যফুলের কিছু চমকপ্রদ রূপক সৃষ্টির চেষ্টা।
পার্কে বসা সুরিয়ান মহিলা আমায় তার শটস্কার্ট তুলে দিয়ে বললেন, উরুর পশমে খাবি খাওয়া কালিটুকু কাগজে সাজিয়ে নিতে।
আমি কোনো কালি খুঁজে পেলাম না। তার শরীরের মদে হাবুডুবু খেতে খেতে পিছলে গেলাম জঙায়।
ঘর্মাক্তকলেবরে বাড়ি ফিরে কবিতার খাতা উল্টিয়ে দেখি, জ্বলজ্বল করছে সুরিয়ান নারীর কামুক শীৎকার।
নারী
দোযখের আগুনে ওম পোহাতে গিয়ে আমি, একদল বেশ্যার গোঙ্গানি শুনেছি। একজন বেশ্যা তার রাগরসে ভেজা উরু একহাতে ঢেকে এসে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলেছে- সেখানেও তাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, জাহান্নামী পুরুষ দ্বারা।
শহিদ শেয়াল
রুগ্ন শেয়ালটিকে শিকার করতে গিয়ে দাঁত হারিয়ে ফিরলো রাজবাঘ।
রাষ্ট্র শোক পালন করছে।
রাষ্ট্র তিনমিনিট দাঁতহীন দাঁড়িয়ে আছে সংসদে।
রাষ্ট্র তার উদোম কোমরে দাঁতের চিত্রকলা আঁকছে।
এই সুযোগে শেয়ালটি শহিদের মর্যাদা পেলো।
পেলো হাশরের দরবারে সামনের আসন ।
রাজপ্রাসাদ
(দিদি শিরিন বুলবুলকে উৎসর্গ করা।)
ফিউশা রঙের মোমের বাজার জ্বলে , দিগন্ত ঝুল আবারান্দা রাজপ্রাসাদের ঘরে, গরমে পোড়া শ্বাস বগলে চেপে ,ক্লান্ত যুবক সেই প্রাসাদের লনে - যে ঘর্মাক্ত দুখ গাঙচিলগুলো ছিটিয়ে
যেত বনে-
সোনাই নদীর পাড়েই কোন পাথর বৃষ্টি ক্ষণে ,গজিয়ে গেলো আলোর প্রাসাদ
ক্লান্ত যুবক ভ্রমে , অবাক মিছিল রাজফটকের লোহার চামড়াপূরে, বাজলো ঘটী দিন পোহানোর আশ্রমজোড়া নূরে
রাজপ্রাসাদের বৈঠকখানায় পাখির সরাব মিলে, পুনর্জনম হয় হাকিকাত মুগ্ধ চুমুক পিয়ে, যুবক এখন দিন চাষ করে আলোর রোপণ জেনে, ঋদ্ধ করে সোনাই নদীর মৎস্যফসল, বুনে।
আয়না কাহিনী
পাখির বিরাট পালকে গেঁথে গেছে আয়না গাছের বন।
সাথে গেঁথে গেছে সূর্য থেকে খসে পড়া খরগোশ,যারা বনে রঙবেরঙের সোনার হার ঝুলিয়ে রাখে নরম সঙ্গমের চিবুকে।
সেই বনে গাছে গাছে আয়না ধরে বলে পুরো দুনিয়া প্রতিবিম্ব হয় এখানে। কিন্তু একটা আয়না নিজেই এসব গাছ জন্ম দিয়েছেন জেনে, পাখিটি বনের ভেতর ঢুকে যায়। লতাপাতা আর গুইলের গু জমে হুক্কাহুয়া করে উঠে।
#
এই আয়না যেদিন বেশ্যাবাজারে বিক্রি হয়েছিল,ভিড় বেধেছিলো ধ্বজভঙ্গ উৎসুকতার। আয়নাটির মালকিন জেসিকা সেই ভিড়ে ক্ষয়ে গেছে।ভিড দেখে লজ্জায় দুহাতে মুখ ঢাকতেই হাতের আয়নায় সম্প্রচার হয় তার অন্ধরমহলের সিনেমা। ব্রা খুলে দাড়িয়ে থাকা লাল স্তন। নক্ষত্রের লাভা। পাহাড়ের বাঁকে জ্বলজ্বল করা মদের খোল। সবগুলো দৃশ্য টান টান রগের মত উত্তেজনা বুনে দিয়েছিলো বাজারে আগত প্রতিজন বেশ্যাখোরের কাঁথায়।
#
বনের ভেতর লতাপাতা আর গুইলের গু জমে হুক্কাহুয়া করে উঠে।
পাখিটি বনের ভেতর ঢুঁকে গেলো যাবতীয় নক্ষত্রের স্রোত চঞ্চুতে ঝুলিয়ে। ঢুঁকে গেলো নিলাম হওয়া জেসিকার আয়নায়।
No comments:
Post a Comment