রঙরসিয়া বিদেশিয়া
কঁহা তেরা দেশ রে…
সময় কে জানতে
হয়, চিনতে হয়। অঙ্ককষা হিসেবী জগতে সময় কে বুঝে নিজেকে ছড়াতেও হয় আবার গুটাতেও হয়।
যারাই এটা পারে না বস্তুবাদী দেওয়া নেওয়ার পরিপাশ তাদের হেনস্থা করে, অবহেলা করে,
পেছনে কুকুর লেলিয়ে দেয়। নিজের খেয়ালে মাইল না গুনে হেঁটে যাওয়া রঙরসিয়া বিদেশিয়া
গতের অনুগত হতে না পেরে পিছিয়ে পড়া মানুষ বলে গণ্য হয় এক সময়। নাম, যশ, টাকা,
পয়সার ভাইরাস আক্রান্ত দুপেয়েরা নিজেদের পিঠ নিজেরাই চাপড়ে অট্টহেসে বিদ্রুপ করে
বাতিলের খাতায় নাম উঠে যাওয়া যাযাবরের।
সদ্য পৌষের
শীত অতিক্রম করে মাঘ পা রাখতে না রাখতেই শীত টা টা বাই বাই করে পালানোর চেষ্টায়
মন কেমন করা উদাসী হাওয়া ছড়িয়ে আনমনে তাকিয়ে থাকে উত্তরের আবছা পাহাড়ের দিকে। গাছের
ঝরে যাওয়া পাতাদের বোঁটার মধ্যে ঋতু সঞ্চার করে দেয় সদ্য কৈশোরের লাজুক রোমান্স।
যাযাবরের এ বড় মনখারাপী কাল। কোনো কারন ছাড়াই কি যেন এক ব্যাথার মোচড় তার ধমনীর
ভেতরে চারিয়ে যায়।
কোথাও
রাস্তার রঙ সাদা, কোথাও লাল, কোথাও আবার ধোঁয়াটে কালো। রাস্তা বদলায়, মানুষ বদলায়,
বদলে যায় পরিপাশ। শনশন করে ছুটে আসা হাওয়ার ফাঁক গলে কাদাগোলা আকাশ বেরঙ
নির্লিপ্তিতে দেখে যায় একঘেয়েমির পুনরাবৃত্তি শতকের পর শতক। তার কোনো স্মৃতি নেই,
পিছুটান নেই। রোমন্থন করতেও সে ভুলে গেছে তার নিভৃতচারী অতীত। পাতা ঝরে যাওয়া
গাছের ডালে জড়িয়ে থাকে গত শতাব্দীর গহরজানের আকুল গান-
না যাইও
পিয়া মোরি সঙ্গ ছোড় কে...
যাযাবর শোনে
দু কান পেতে। তার রঙরসিয়া বিদেশিয়া সত্তাকে জোর
করে অবদমিত করে সে। এগোতে থাকে মাটির দুশো তিনশো ফুট নীচে জমিয়ে রাখা তীব্র ঠান্ডা
অভিমান সঙ্গী করে আগামীর দিকে। আরও একবার একলা হয়ে যায় সেই পিছিয়ে পড়া মানুষ।
No comments:
Post a Comment