14 August 2016

রাবেয়া রাহীম


চারপাশে অসংখ্য মানুষ সবাই অপরিচিত। আশেপাশের ব্যস্ততা, শোরগোল আর ভিড়ের মাঝে নিজেকেও অপরিচিত লাগে রজনীর। প্রথমবার বিদেশে আসা একা। সেই সুদূর বাংলাদেশ থেকে ইউএসএ। স্টাচু অফ লিবার্টির রাজ্যে, নায়গ্রা জলপ্রপাতের কাছে...এমন আরো কত কিছুর আকর্ষণ আছে এই দেশে--মনে মনে ভাবে রজনী। ইমিগ্রেশনের ঝামেলা শেষ করে ট্রলি ঠেলে বাইরে এসে দাঁড়ায় সে। জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্ট, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নামে বিখ্যাত এই বিমানবন্দর। হাজারো মানুষের ভিড়ে খুব অসহায় লাগে তাঁর। কথা ছিল এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়েই সে কবিরকে দেখবে। কবির আহমেদ নিপাট ভদ্রলোক রজনীর স্বামী। নতুন বিবাহিত জীবন তাঁদের। বিয়ের পর মাত্র এক মাস তাঁরা দুইজন সাথে ছিল। তারপর স্বামী তাঁর কর্মক্ষেত্র নিউইয়র্ক চলে আসে।
খুব উসুক চোখে এদিক সেদিক খুঁজতে থাকে স্বামীকে। শরীর একটু দোলে উঠে। আকাশ পথে টানা দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি এতক্ষণে বুঝতে পারে সে। বুক চিরে দীর্ঘ শ্বাস বের হয়ে আসে। আট মাস পর দুইজন আবার একসাথে হবে নতুন সংসার গোছাবে সেই কল্পনায় কত যে রঙ্গীন হয়েছে  সে। নাহ, কোথাও খুঁজে পায়না তাঁকে। ভিড় ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে যায়, খুঁজতে থাকে কোথাও পায়না। এয়ারপোর্টের ভেতরেই বেশ কিছু কফি শপ,ফার্স্ট ফুড, ম্যাগাজিনের দোকান সব জায়গাতে চোখ বুলিয়ে নেয় একবার। ক্লান্ত , শ্রান্ত রজনী অসহায়ের মত আশে পাশে তাকায়, মনে পড়ে এই দেশে স্বামী ছাড়া তাঁর চেনাজানা কেউ নেই। অভিমান দুই চোখ বেয়ে নামতে থাকে। প্রায় এক ঘন্টা পর দূর থেকে দেখতে পায় হাসি মুখে তাঁর স্বামী এগিয়ে আসছে। দীর্ঘ দিন আমেরিকা থাকার ফলে ইংরেজীটাই বেশী রপ্ত করেছে কবির বাংলার চেয়ে।
-ওয়েলকাম টু ইউএস এ হানি, বলেই জড়িয়ে ধরে তাকে, এতক্ষণে অভিমানের কান্না সুখের কান্নায় রূপ নেয়। স্বামীর বুকে মুখ লুকিয়ে গভীর আশ্রয় খুঁজে পায় সে।
নিউইয়র্ক সিটিতে সাজানো গোছানো পরিপাটি একটি ফ্ল্যাটের বিশাল খাটে শুয়ে আছে রজনী। তাঁর অবস্থান বুঝতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগে। আজ দু দিন আমেরিকাতে, স্বামীর সংসারে । জেট লগ পুরোপুরি আছে। শরীর এখনো বাংলাদেশের সময় মেনে চলছে। বাড়ীটা খুব নির্জন লাগছে কোন সাড়া শব্দ নেই। জানালার পর্দা সামান্য ফাঁক হয়ে আছে , সেই ফাঁক দিয়ে বাইরের ঝকঝকে রোদ দেখে আনন্দে মন ভরে যায়, অস্ফুটে বলে কি সুন্দর রোদ একদম বাংলাদেশ যেন! মাথার কাছে বিশাল জানালাটা খুলে দিতেই হুড়মুড় করে কাঁপন ধরানো ঠান্ডা শরীরে হুল ফুটিয়ে দিলো। জানুয়ারি মাসের ঠান্ডার কথা শুনেছিল আজ টের পেলো। তড়ি জানালার গ্লাস নামিয়ে দেয় রজনী। অবাক চেয়ে থাকে-জানালায় কোন গ্রীল নেই!
ঘড়ির দিকে চোখ পড়ে দশটা বাজে সাথে সাথে বাংলাদেশের সময়ের সাথে হিসেব করে ফেলে। বাংলাদেশে এখন রাত ৯টা। নিজের আত্মীয় পরিজনের কথা মনে পড়ে যায়, বুকের ভেতর হুহু করে উঠে। কিভাবে বাংলাদেশে কলিং কার্ড দিয়ে কল করতে হয় কবির শিখিয়ে দিয়েছে। গতকাল রাতে কবির তাঁকে সব চিনিয়ে রেখেছিল ঘরের কোথায় কি আছে বিশেষ করে রান্নাঘর। কফির ব্র্যান্ড দেখে খুশী হয়ে যায় সে, তাঁর প্রিয় কফি ঠিক রেখে দিয়েছে কবির। স্বামীর প্রতি গভীর আনন্দ আর কৃতজ্ঞতা অনুভব করে। ঝকঝকে সাদা কাপে ঘোর কৃষ্ণবর্ণের কফি, অসাধারণ সুবাস! কফিতে চুমুক দেয়, ঘ্রাণে মন সতেজ হয়ে যায়।
রজনীর ফ্ল্যাটটি মেইন রোডের পাশেই, কফি হাতে জানালার পাশে এসে বাইরের দিকে মনযোগ দেয়। দামী ব্র্যান্ডের নানান মডেলের গাড়ী রাস্তা দিয়ে ছুটে যাচ্ছে কিন্তু নেই কোন শোরগোল নেই হর্ন। খুব অবাক হয়ে চেয়ে থাকে সে। আশে পাশ খুব ব্যস্ত মনে হয় তাঁর কাছে।
শীতের তীব্রতা খুব বেড়ে গেছে আজ কয়েকদিন। তাপমাত্রা হিমাংকের অনেক নীচে। থাকবে নাকি এমন আরও দিন পনেরো। সময়ে অসময়ে তুষার ঝরে চলছে।পেঁজা তুলোর মত নয় ভারি মাত্রার বরফ কুচি ঝুর ঝুর করে ঝরে চলছে । সাদা বরফের আচ্ছাদনে ঢাকা চার পাশ। সম্পূর্ণ একটি নতুন পরিবেশ খুব আগ্রহ নিয়ে দেখে যায় রজনী। সন্ধ্যায় জানালার ভারি পর্দা ফেলে দেয়। যাতে কোন রকম ঠান্ডা হাওয়া বাইরে থেকে ঘরে ঢুকতে না পারে। গায়ে ভারী ওলেন চাপিয়ে পায়ে মোজা পরে নেয়। গলা কান মাফলার দিয়ে সযতনে পেঁচিয়ে নেয়। শীতের তীব্রতা আর তাকে ছুঁতে পারেনা। রুম হিটারটাও চালিয়ে দেয়। পুরো ব্যাপারটাই তার কাছে খুব নতুন অভিজ্ঞতা আর অচেনা। ভেতরে বেশ উত্তেজনা অনুভব করে সে।
দিনরাত শুয়ে বসে ঘরের আসবাব ঝাড়া মোছা করে, গুছিয়ে সময় কেটে যাচ্ছিল তার। কবির সকালে বেরিয়ে যায় ঘরে ফেরে সেই রাতে। কোন কোন দিন এমনও হয় রজনী শুয়ে আছে কবির উঠে চলে যায়। আবার সে রাতের ঘুমে কবির বাড়ি ফেরে। তাঁর সাথে দেখাও হয়না ঠিকমত, সারাদিন একা একা! খুব ইচ্ছে করে বাহিরের খোলা আকাশে হাত পা ছড়িয়ে একটু বসতে, প্রচন্ড ঠাণ্ডায় ঘর থেকে বের হবার কথা ভাবতে পারেনা।
দিন গড়িয়ে মাস যায়। ঠান্ডা কিছুটা কমে এসেছে এখন। নিউইয়র্কে শহরের আশে পাশে পায়ে হেঁটে একা একাই ঘুরে বেড়ায় রজনী। এলাকাটা বেশ চিনে ফেলেছে। নতুন শহর খুঁটিয়ে দেখার পথশ্রম ভালোই লাগে তাঁর। ঢাকার অভিজাত এলাকার কথা মনে পড়ে যায় কিন্তু বাড়ি গুলো শত বছরের পুরনো হলেও রক্ষণাবেক্ষণ দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। নিউইয়র্কের রাস্তায় পর্যাপ্ত মানুষও আছে। রাস্তায় মানুষের ভীড় থাকলেও খুব সুসংবদ্ধ, শৃঙ্খলিত। শপিংমল থেকে বড় বড় হোটেল, অফিস কাছারি সব আছে । ঘিঞ্জি হলেও খুব সাজানো। অবাক চোখে চেয়ে দেখে নিউইয়র্ক মহানগরের কোলাহল মুক্ত মেট্রোরেলের জনস্রোত। কিন্তু নেই কোন হৈচৈ-হট্টগোল। অতি সুন্দর, ঝকঝকে পথঘাট, কোথাও কোন নোংরা-ময়লা চোখে পড়েনা।
পাশের বাড়ির সাদা চুলের বয়সী মহিলাটির সাথে প্রায় দেখা হয় কিন্তু তেমন কথা হয়না কখনো। স্মিত হাসি দিয়েই চলে আসে। মনে পড়ে যায় নিজের দেশের বৃদ্ধদের কথা। এখানকার বুড়োরা কি সুন্দর করে বাঁচতে জানে! কত প্রাণবন্ত এরা! আজ  বৃদ্ধাটি বেশ উফুল্ল। পোষা কুকুরটিকে আদর করতে করতে জানতে চায়-হ্যালো, কেমন আছো তুমিতোমার কথা তোমার স্বামী আমাকে বলেছিল । কথা হয়ে উঠেনি কখনো তোমার সাথে। তা কেমন লাগছে এই দেশ?
-আজ তাঁর সাথে বেশ গল্প করে রজনী। মনে মনে বয়স হিসেব করে কত হতে পারে বৃদ্ধাটির? মহিলাটি খুব আগ্রহ নিয়ে জানায় তার বয়স পঁচাত্তর। পূর্ব পুরুষের বাড়ি ডোমিনিকান । বেশ ভাব হয়ে যায় তাঁর মহিলাটির সাথে। বুড়ির দুই মেয়ে অন্য স্টেটে থাকে। তবে মাদারস ডে আর ক্রিসামাসে ঠিক মা কে দেখতে আসে। সরকারি সাহায্যেই চলে সে এখন। একা একা উদাসী বয়সী মানুষটা জীবনের গল্প শুনায় খুব আগ্রহ নিয়ে। রজনীও শুনে যায়। একটা কুকুর আর দুইটা বেড়াল তাঁর সব সময়ের সঙ্গী।
হঠা বমি ভাবের দমকে ঘুম ভেঙ্গে যায় রজনীর। বিছানা ছেড়ে উঠতে যেয়ে মাথটা চক্কর দিয়ে উঠে তাঁর। কিছুক্ষণ যেন নিঃশ্বাস আটকে থাকে, জোরে শ্বাস নেয়। কি ঘটছে নিজের শরীরে বুঝতে কিছুক্ষণ সময় নেয়। মনে পড়ে যায় এই মাসের মাসিক চক্রটা সে মিস করেছে। শরীরের ভেতরে আরও একটি শরীর এসেছে এটা তাঁরই জানান। ঘড়িতে সময় দেখে নেয়। ভোর ছটা। আনন্দে শিহরিত হয় বার বার । একটা শিশু ! নতুন একটা জীবন! কিযে আনন্দ! তাঁরই পাশে কবির অঘোরে ঘুমাচ্ছে। খুব মায়া ভরে স্বামীর দিকে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ তারপর নিজেও এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে।
জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালে সারি সারি বিল্ডিং তার ফাঁক গলে এক ফালি শুভ্র মেঘের বিচরণ দেখা যাচ্ছে নীলাকাশে। প্রচন্ড ক্ষুধায় ঘুম ভেঙ্গে যায় তাঁর। ঘরে কোন খাবারেরই অভাব নেই। প্রায় সব দেশের খাবারে ভর্তি করে রেখেছে কবির।  ভাতের কথা মনে হলেই যেন বমির প্রকোপ বেড়ে যায় । মায়ের জন্য খুব মন খারাপ লাগছে। কিছু পাস্তা বয়েল করে খেতে বসে। একা একা কিছুই ভাল লাগছে না। সেই সাথে খাবারে অনিহা। কবির অফিস যাওয়ার সময় তাঁকে ডাকেনি। গভীর ঘুমে ছিল তাই হবে। দুপুরে কবির ফোন করে খুব ব্যস্ততার সাথে
-কি করছো, লাঞ্চ শেষ
-না খেতে ইচ্ছে করছেনা।
-তোমার তো কখনোই খেতে ইচ্ছে করেনা, তবুও কিছু একটা খাও, ঘরে কোন কিছুরই অভাব রাখিনি। যত ব্যস্ততায় ফোন করে ততটাই ব্যস্ততায় ফোন রেখে দেয় সে। 
মাথাটা ভারি হয়ে আছে। মাথার ডান পাশ টা বেশ দপদপ করছে। শরীর জুড়ে অবসাদ-ক্লান্তি। এই মুহূর্তে খুব একাকীত্ব পেয়ে বসে তাঁকে।
বিকালে হাঁটতে হাঁটতে পাশের ফার্মেসি থেকে প্রেগনেন্সি টেস্ট-কিট কিনে আনে। রেজাল্ট পজিটিভ। খুশীতে আত্মহারা হয়ে যায় রজনী। আনন্দে উদ্বেলিত রজনী ফোন করে স্বামীকে। কবির ফোন রিসিভ করেনা। অফিসে নানা কাজে ব্যস্ত থাকে তাই হবে।এভাবেই নিজেকে বুঝিয়ে নেয় সে।  রজনী খেয়াল করে, কবির শুক্রবার রাত আর শনিবার রাতে বাড়ি ফেরে শেষ রাতে। বাংলাদেশে থাকতে শুনেছিল আমেরিকার ফ্রাইডে নাইট আর সেটারডে নাইট এর কথা, সবাই নাইট ক্লাবে যায় পার্টি করে কিন্তু ব্যাপারটা কখনো বুঝতে পারেনি। শুধু টিভি আর সিনেমাতে দেখেই যতটুকূ বোঝা। একদিন কবিরের কাছে জানতেও চায় কি কারনে ওই দুইটি রাতে সে বাড়ি ফেরেনা। কিন্তু কবির কোন উত্তর করেনা।  
প্রেগনেন্সি কিট টা সযত্নে আগলে রাখে স্বামীকে দেখাবে বলে,ভাবে স্বামী খুব খুশী হবে। ভোর চারটাতে বাড়ী ফেরে কবির। সিঁড়িতে পায়ের আওয়াজ শুনে ভেতর থেকে দরজা খুলে দেয় রজনী। কবির খুব বিরক্তি নিয়ে বলে-আমার আসতে দেরি হবে বলেছিলাম।বার বার বলেছি শুয়ে পড়তে। তুমি কেন কথা শুননা একটু টলে উঠেও সে। রজনী বুঝতে পারে কবির এখন কথা বলার অবস্থায় নেই।  বিস্ময় আর দুঃখ বোধ দুটোই পেয়ে বসে তাঁকে। 
দিনে দিনে শরীরের ভেতরের মানুষটি বড় হয়। নতুন প্রাণ, নতুন স্পন্দন! মাতৃত্বের আনন্দে শিহরিত হয় রজনী। একা একা বিশাল ফ্ল্যাটে থাকতে তার খুব ভয় হয় এখন। তার উপর কবিরের অনীহা। মানুষটা কেমন যেন অচেনা লাগে তার কাছে। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর প্রতি এতটা অনিহার কারন সে বুঝতে পারেনা। ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে পড়ে। আত্মীয় পরিজন হীন দূর দেশে সান্ত্বনা পাওয়ার মত কাউকেই খুঁজে পায় না। একদিন কবির ক্ষোভ ঝাড়ে খুব-বাচ্চা নেওয়ার এত তাড়াহুড়ার কি ছিল?
বোকার মতো ফ্যালফ্যালিয়ে স্বামীর দিকে তাঁকায়। মুখ দিয়ে টু শব্দও বের হয়না। জল টলমল  দুচোখে উপচে পড়া  বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে  কেবলই। বুঝতে পারেনা রজনী-গর্ভ ধারণ তার একার ইচ্ছেতে হয়েছে কি! দিন গড়িয়ে বিকেল, কবিরের টেক্সট আসে "বাড়ী ফিরতে দেরী হবে"।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত একটা বাজে। নিজেকে চার দেয়ালের ভেতর আবদ্ধ লাগে খুব। ডাইনিং টেবিলে মাথা রেখে অঝোর ধারায় চোখে বাদল ঝরে চলছে যেন।প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে সারা রাত রজনী জেগে থাকে । অশান্তির ভ্রমরা অনবরত হুল ফুটিয়ে চলছেই। চোখের সামনে টেলিভিশন ছাড়া আছে কিন্তু কিছুই নজরে আসেনা। গল্পের বইয়ের পাতা উল্টে পাল্টে রেখে দেয়। খুব বেশী অস্থির সময় পার করে সে। পরের দিন সকালে রজনী টের পায় সে যেন রক্তের বিছানায় শুয়ে আছে। সারা শরীর জুড়ে অবসাদ! ক্লান্তি! অজানা শঙ্কায় বুক ভারি হয়ে আসে। বুঝতে সময় নেয়  তাঁর সাথে কি ঘটছে। মনে আসে বাচ্চাটা আর নেই!
মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে স্বপ্ন দেখে। সেগুলো নিয়েই বাঁচতে চায়।ভাগ্য সবসময় সহায় থাকেনা।অনেক ক্ষেত্রেই হারাতে হয় নিজের প্রিয় মানুষকে,প্রিয় অনুভুতি গুলোকে। তারপরেও মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। 



No comments:

Post a Comment