প্রাচীন কবি
প্রাচীন কবি কে?
প্রাচীন কবি আমি
আপনিও কি কবিতা লেখেন ভাই?
তবে তো আপনিও
ওই যে দেখুন ধেয়ে আসছে অনাগত
ভবিষ্যতের ঢেউ
এখনই ভাসিয়ে নেবে
আপনাকে-আমাকে
খড়কুটোর মতো।
প্রচণ্ড ধাক্কা দিয়ে
পেছনের দিকে ঠেলে দেবে
অনেকগুলো অদৃশ্য দেয়াল
ভেঙে আমরা
শাঁ শাঁ করে চলে যাব
দিগন্তে
অনাগত ভবিষ্যতের
মানুষেরা যখন চাইবে সুদূর অতীতে
দেখবে আপনাকে-আমাকে
বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে
সাগরের ওপারে
জাহাজের মাস্তুল দেখার
মতো
আবছা-অস্পষ্ট
এখন যেখানে দেখি আমরা মিল্টন, চসার, কালিদাসকে।
বাসন্তী বিকেলে পার্কের বেঞ্চিতে রমা কান্ত কামার
বাসন্তী
বিকেলে হাঁটতে বেরিয়েছেন রমা কান্ত কামার
চৈতালি
হাওয়ার ঝাপ্টায় বেঞ্চিতে জমে আছে ধুলোর আস্তরণ
শ্রীযুক্ত
রমা জনৈক ভদ্রলোক হয়ে বসলেন পার্কের বেঞ্চিতে
এবং
অকস্মাৎ...
চোখ
গেল তাঁর তামাটে মাটিতে
একটি
শুকনো সেগুন পাতা দুধ চায়ের মতো
বাদামী
বরণ যার
আলগোছে
পড়ে আছে কুঁকড়ো পিঠে
মচমচে
মুড়ির মতো ঝুরঝুরে যা
‘ও
এটা?’ ভাবলেন রমা কান্ত কামার
‘আমি এটা দূরে পাঠিয়ে
দেব এক ফুঁয়ে
চৈতালি
হাওয়ার সমান্তরালে ভাসতে ভাসতে
হারিয়ে
যাবে জিরো ডিগ্রি কোণে ।’
এই
বলে রমা কান্ত বেঞ্চি থেকে উঠে
হাঁটু
মুড়ে বসলেন শুকনো পাতার সামনে
মৃদু
একটা ফুঁ দিলেন হেলাচ্ছলে
অতঃপর
জানতে চান?
রমা
কান্ত কামার নড়ে চড়ে বসলেন বাধ্য হয়ে
কেননা
শুকনো সেগুন পাতাটি নড়েনি একচুলও
এবং
তারপর
ফুঁয়ের
পর ফুঁ দিয়ে চলেছেন রমা কান্ত কামার
শরীরের
সবটুকু শক্তিব্যয়ে
তার
ফুঁয়ের বাতাসে ঝড় উঠল পার্কের বৃক্ষশাখায়
নদীর
পানি ফুঁসে উঠল, লণ্ডভন্ড হয়ে গেল দিগ্বিদিক ।
প্যালিনড্রোমিক
ডিগবাজি দেন রমা কান্ত কামার
এপাশ-ওপাশ-ডান-বামে
চারিদিকে
নিরন্তর
ছুটোছুটি করে ফুঁ দিয়ে যান ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে
সবদিক
থেকেই একই ব্যক্তি রমা কান্ত কামার
সুতরাং
একই রকম প্রচেষ্টা তার বিদ্যমান সর্বদিকে ।
চারপাশ
থেকে গাছের পাতারা এসে
তার
শরীরকে বেষ্টন করছে ক্রমাগত
ধীরে
ধীরে ডুবে যাচ্ছেন রমা পাতার চাদরে...
অথচ এখনো অনড় শুকনো সেগুন পাতাটি ।
মাস্টারপিস
কোনো এক মায়াবী গোধূলি বেলায়
একাকী
ভূ-গোলকের ওপর বসে আছেন
উদাসী
ঈশ্বর...
প্রকাণ্ড
মুষ্ঠি ভরা সামান্য কর্দম
চিন্তামগ্ন, ধ্যানাতুর
হঠাৎ
আকাশে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ঠ হল
এক
লক্ষ টিউব লাইট জ্বলে উঠল যেন
সচল
হল ঈশ্বরের দু হাত
কাদা
টিপে-টুপে নিমিষে দিয়ে ফেললেন ছাঁচ
মুখ
দিয়ে মন্ত্র জপিত হল
কুন
ফায়াকুন...
সহসা
নড়ে উঠল সে মাটির পুতুল
সমুখে
দন্ডায়মান র'ল এক
বিবস্ত্রা নারী
রচিত
হলো ঈশ্বরের মাস্টারপিস ।
প্রচ্ছন্ন
যুবক হাঁটে একা অন্ধকারে
যে হাঁটে রাত্রির বুক চিরে সে প্রচ্ছন্ন যুবক
কতকাল আঁধার দেখেনি চাঁদের আলোয়
ফেলে আসা মায়াভোলা সোনালি অতীত
ডেকে যায় ঝুল-বাদুড়ের ডানা ঝাপটানো স্বরে
বিনিদ্র আঁখি কাঁদে, একপ্রস্থ চাঁদে
বহুদিন লুকিয়ে রেখেছিল জমাট অন্ধকার
ইটের নিচে চাপা পড়ে থাকা ঘাসের মতো
রঙিণ শৈশব হয়েছে বিবর্ণ সময় ।
মাত্রিক জগতের কাছে দায়বদ্ধতার পাঠ চুকিয়ে
প্রচ্ছন্ন যুবক হাটে একা অন্ধকারে
জীবনের করোটিতে বেজে ওঠে মূর্চ্ছনার গান
প্রাণের লহরি ছোটে সুতীব্র ধারায়
সহসা অক্ষিপটে শৈশব জাগে
কাদামাখা কিশোরদল ছুটে যায়
রাস্তায় টায়ার চালিয়ে
হাত বাড়িয়ে ধরতে চায় আকীর্ণ শৈশব
হে অতীত, হে সুবর্ণ অতীত আমার
ব্যাকুল যুবক গেয়ে ওঠে আপন খেয়ালে ।
কতকাল আঁধার দেখেনি চাঁদের আলোয়
ফেলে আসা মায়াভোলা সোনালি অতীত
ডেকে যায় ঝুল-বাদুড়ের ডানা ঝাপটানো স্বরে
বিনিদ্র আঁখি কাঁদে, একপ্রস্থ চাঁদে
বহুদিন লুকিয়ে রেখেছিল জমাট অন্ধকার
ইটের নিচে চাপা পড়ে থাকা ঘাসের মতো
রঙিণ শৈশব হয়েছে বিবর্ণ সময় ।
মাত্রিক জগতের কাছে দায়বদ্ধতার পাঠ চুকিয়ে
প্রচ্ছন্ন যুবক হাটে একা অন্ধকারে
জীবনের করোটিতে বেজে ওঠে মূর্চ্ছনার গান
প্রাণের লহরি ছোটে সুতীব্র ধারায়
সহসা অক্ষিপটে শৈশব জাগে
কাদামাখা কিশোরদল ছুটে যায়
রাস্তায় টায়ার চালিয়ে
হাত বাড়িয়ে ধরতে চায় আকীর্ণ শৈশব
হে অতীত, হে সুবর্ণ অতীত আমার
ব্যাকুল যুবক গেয়ে ওঠে আপন খেয়ালে ।