17 December 2017

গুচ্ছ কবিতা- জাহাঙ্গীর হোসেন বাদশাহ




কবর
এ শহরে কাকও ওড়ে না একা একা;
আর দিব্যি আমাকে ডুবে রেখেছ তুমি
ভাত চেটে খাওয়া কুকুরের ওমে
পলিথিনের ঘুড়ি ওড়ানো  টোকাই
বুকের হাড় নিয়ে পালিয়ে গেছে সেই কবে
তোমাকে বলা হয়নি এ শহরে রাত নেই; অন্ধকার ।

হিজরাদের সমতল বুকে চোখে পড়েনা;
ওদের বাকা পায়ের হাটা শেষ হলে
করতল ফেটে রক্ত স্রোত নামে
শহর ঘুমায় নিভৃতে; নিশ্চিন্তে ।
আমাকে মৃত ঘোষণা করে তুমিও
আঙ্গুল বাঁকিয়ে রাখো অনাবৃত সুখে...




ফেস্টুন
এ পাড়ায় ঘুম নেই সদর দরজায় তালা;
সোনাই ঘটক পান চুরি করে সূর্য খায়;
দরজার ওপাশে আলগা হাওয়ার মূক
কেউ রটিয়ে দিল- মানুষেরা গল্প শূণ্য ।

আকাশটুকু’ই দখল করা বাকি- অন্তর্জাল
এক সমীহ ব্যপার; নগদ কিছু পা ফেলা
নিয়ে’ই দ্বন্দ্ব রাখাল থেকে মোহ’র বেদুঈন;
সোনাই ঘটক অকস্মাৎ ঢুকে গেছে কুকুরের ভেতর ।


মেঠোপথ
বুকের উপর ঘুঘু পাখির ঘুম;
শুদ্ধ সকাল চোখে মাখে চুম
শুকনো পাতার বর্ণবিহীন ঘর
সন্ধ্যে খেয়েই নিচ্ছে অবসর ।

ধুলোর ছায়া ডাকে আলোর পুতুল;
বর্শি বেয়ে দ্বিধায় খেলে তুমুল
আকাশ পিঠে দৌড়ে পালায় কাঁক
মৌমাছিরা জ্বালিয়ে মৌচাক
বৃষ্টি ভিজে কুড়ায় মেঘের ফুল ।



নষ্ট বিষয়ক
ঘর জোড়া অসভ্য ছায়াদের সহবাস
এক দুপুর কলঙ্ক শরীরে মেখে
পোকাদের নিপাত করে তোলো;
তুমিনোংরা হবে আর কতবার?

পালকীরাও কথা বলে রাখে নজর ফেলেছ
গড়াগড়ির জলজপাত্রে; এই নষ্টামি ভুলে যাও মেয়ে...
তোমাকেও যেতে হবে রাতের ঘরে
রাতও নারীর মত নষ্ট হতে জানে!
 


সারাবেলার খেলা
আর সকাল এলো না; দুপুর সব পুড়ে ছাই
না, না, বিকেল হলো না অভিমানে।
তোমাকে নিয়ে উড়ে গেছে পাখিরা;
নর্তকী হাতে মন আমার পাখি হতে চায়।

চোখ খোলা রেখেই ফুরিয়ে গেল বৃষ্টিকাল
দাবা খেলা এক সন্ধ্যা নিয়ে হাজির তুমি;
কাঠপোকা খেল এই বাহুডোর
না জানিয়ে তোমাকে পকেটে তুলে চাঁদের পাপ
দৌড়ে পালাই পাহাড়ের পেটে;
ছিড়ে খাও পাঁজর,
তারপর প্রার্থনারত তুমি মজো রাতের প্রেমে ।