মর্গ শোষিত নারী
নিকোটিনে পুড়ে গেলো একত্রিশ
বছর।
আর কতদূর হাঁটলে দেখা যাবে?
তোমার শৈশবের স্কুল,
নামতা পাঠের আসর।
অথবা ক্রসবেল্ট কৈশোর,
আপেল আপেল মুগ্ধতায় নিউটন
সূত্র,
আমাদের মুখ চাওয়াচাওয়ি,
কানাই স্যারের সতর্কতা,
কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকা
নিরন্তর।
তবু সমান্তরাল হেঁটে যাওয়া,
বিমূর্ত রেল লাইন,
বকুল বকুল ঘ্রাণে ছুটে গেছি
চারুকলায়।
প্রিয় শিরীষ তলা,
এলোমেলো রিকশা ভ্রমণ, শহীদ
মিনার,সন্ধ্যার বই মেলা।
ভাঁজে ভাঁজে গোলাপ পাপড়ি,
ঘামদগ্ধ রুমাল, স্খলিত
মোমবাতি, আমাদের বাড়ি ফেরা।
মর্গ শোষিত জীবন,
বুক শেলফে তুমি নেই
অথচ প্রতি ভোরে তোমার নামে
ফোটে এক একটি রবীন্দ্র গোলাপ।।
মা
মায়ের ছিলো হাঁড়ি পাতিলের
বরষা। মাঝ রাতে ছাল ফুটো হয়ে বৃষ্টি নামলে বসিয়ে দিতো এক এক করে। তারপর অবিশ্রান্ত
হেঁটে যাওয়া আশ্বিন পর্যন্ত। কার্তিকের কলাপাতা রোদে শুকিয়ে নিতো কলাবতী শাড়ি। খুলে
দেখতো টিনের বাক্স,প্রথম উপহার ক্যাসিও ঘড়ি।
মায়ের প্রসাধনী বলতে কিছুই
ছিলো না। মাঝে মাঝে আয়নায় ভিজিয়ে নিতো চোখ। আর আমি সমূহ আবদারে জড়িয়ে ধরলে, মুখে
এক রাজ্য হাসি টেনে বলতো 'সব হবে মা'।
সব হয়নি আমার।
আমি শুধু ইচ্ছের শব পুড়িয়ে
পুড়িয়ে হেঁটে গেছি সংসার নামক শশ্মানে।
নো ম্যানস ল্যান্ড
আমাদের ব্যাক্তিগত কোন ঈশ্বর
নেই।
নোনা জলে হৃদ ভাসিয়ে অটপ্সি
টেবিলে পড়েছিল যে তরুণী লাশ-
সে ও আকাশ দেখেছিলো, দেখেছিলো
বৃন্তের খিজিরে রক্ত প্রকরণ, নিরাকার ঈশ্বর স্তুতি।
কে কবে তুলেছিলো আ-কার, ই-কারের
প্রশ্ন?
পৃথিবী সৌরজগৎ থেকে ছুঁড়ে ফেলা
কালো চাকতি মাত্র-
তবু বৃত্তের ধারনায় এঁকেছি
কমলালেবু।
ভূমিতে দিয়েছি কাঁটাতার,দখলের
কৌশল,মৃত্যু নগ্ন উল্লাস
জিজ্ঞাসু রহিত জিহ্বার ঠোঁটে
বসিয়েছি পেরেক। কিছুই হয়নি বলা
জলে ভাসিয়ে দিই দেহ, নিমগ্ন
হাওয়ায় গড়ি সংসার
জল হোক জীবন,জীবন হোক জ্বলীয়।