কিলাসমেট
বাড়ির পাশে কাবরাপাড়া
সূর্য আমার কিলাসমেট
আমার নেইম চান
একসাথে খেলি—মাছ ধরি,
ঘুমায়—ঘুড়ি উড়ায়—সাইকেল চড়ি
কেউ ওরে মুচি কলি—সেরাম খারাপ লাগে!
বড়দিঘি—একজন বান্ধবীকে নিয়ে—
দুজনে সাঁতার কাটি!
খুব ভালো লাগে—মাঝে মাঝে
ঝগড়া তুমুল
আবারও একসাথে
ওরাই শুয়োর পোষে
আমরা ছাগল
সূর্য আমাদের বাড়ি আলি পানি খায়
আমিও ওদের বাড়ি গিলি জল পান করি
এখন আমরা ইশকুল থেকে মাধ্যমিকে
বড় ক্লাসরুম, বড় বড় ছাত্রী, বড় ব্লাকবোর্ড
বড় হতে হতে—আমাদের মধ্যে যেন
শুয়োর আর ছাগল ঢুকে পড়ে!
তখন কোথাও মানুষ খুঁজে পায়নে!
বরইফুল
বৃষ্টিতে বরইফুল ভেজে
মৃত্যুর মতোন অসহায় ও উন্মুক্ত
খাঁ খাঁ করছে কাকের বাসা
গোসলে ভীষণ ব্যস্ত—তবু মায়াকাক
বালিকারা বুকে বই চেপে—
ভিজে ভিজে ঘরে ফেরে
দৌড়ায়ে পাঁলায়ে যায়—একটা রোগা-পটকা শিশু
রাস্তাটা মুহূর্তে একা হয়ে পড়ে থাকে!
গড়ায়ে যাওয়া সে জলে—পা ভিজে উঠলে
আমার মনের পটে প্রশ্ন
সব জলই কি—গোলাপজলের বোন?
সেই দূরন্ত ছেলেটি—
ছাদের কার্ণিশ থেকে ছিঁড়ে পড়া জলে
সাবান মাখানো মাথাটা এগিয়ে ধরে
আমি দ্রুত ভেসে যেতে দেখি—হাবিব সাবান-ফেনা
মৃত্যুর গতিতে!
বরইফুলের মিত্তু মিত্তু গোন্দ!
এখন রিলাক্সকুল—
আপাত কেউ মৃত্যুর-এ কথা না ভাবি!
বিরহী
নিজেকে
উবুড় করে দেখি—
একটা বটের
ফল
পাখির
ঠোঁটের মধ্যে অনায়াসে ঢুকে যায়
যেন ঠিক
পৃথিবীর—ব্যাসার্ধসমেত
ধান ক্ষেতে
ফসল ও পোঁকা পাখি
মেতেছে
দুপুর উপভোগে
একটা তালের
পাতা দোলে—বাবুই পাখির বাসাটিসমেত
সমস্ত
বিকেল ছায়া নিয়ে মাতামাতি করে শালিকের দল
ঘর থেকে
মা’র ডাক শুনি
শুক্রবার—আলিফ
লায়লা
রাত পালানোর
ফন্দি খুঁজি
আমাকে
যে একদিন
উদ্ধার
করতে হবে—শোষিত মানুষ
চাঁদ প্রেমিক
চাঁদের নিজের আলো নেই
আমরা তবু জোছনা প্রেমী
আদর্শলিপিতে রাখি আঙুল
পূর্ণিমা পৃষ্ঠায় পাঠ করি—শিশু-চাঁদনী সে রাত
সূর্যের কিলাসে ঢুকে শিখি—
আলো এক নিরপেক্ষ নির্ঘাত নিজস্ব জ্ঞান।
জ্বলতে জ্বলতে যারা শুধুই জ্বালায়
জানে ফুরায়ে যাবার মন্ত্র
দিতে দিতে শূন্য সেই সকল খোলায় মেতে
পূর্ণবাণে ভরে ওঠে তেজ
নিজ সূত্রে বলে আমি এটুকুই জানি—
সেই থেকে শুধু সূর্যপ্রেমী
তবু প্রেমিকারা কেন চান বলে ডাকে?
রংধনু মেখে মেখে
সন্ধ্যার আগেই একবার বৃষ্টির পরেই দেখা হয়েছিল
সবুজ ক্ষেতের ধারে মিটিমিটি হাসি
আর ঊষার আলোক ছায়া আকাশের তার ঘেষে ঝুলেছিল বেশ
খানিক সময় এইভাবে
সঙ্গী ছোঁয়া পেয়ে গুড়ি গুড়ি ভেজে সকল গাছের ছাতা
কচুরপাতায় জমা হীরে হীরে জলনাচ দ্যাখো
মারুফার নাকে জ্বলা ঝিনুকের মুক্তো। আকাশের
ফাঁক গলে হাতে বরফের চাকে যেরূপ মধুর
চাক থেকে ঝরে মধু। মনের অনেক কথা যেন
আকাশ অথবা বৃষ্টি বুঝে ফেলে এমন ভাবনা
ঘিরে রাখে প্রত্যহ আমার ভাব, না থাকে যেসব
দূর কথা তুমি বসে বসে বেণি বাঁধ। এতোটাই
ক্ষণিক কেন এমন প্রশ্ন উঠায় ফড়িংয়ের
জন্ম নিয়ে কথা বলা ভালো। যেসব রেখায় দ্যূতি
ছড়াই আর প্রাণের কোমল ভ্রমর উড়ে উড়ে
গুনগুন সরব মিছিলে যোগ হয়। বুকের ওড়না
উল্টালে দেখ ঠিক রংধনু তোমার শাসন চলছে মেনে।
শীতল পদবী নিয়ে
বটের ছায়ার
মতো শীতল পদবী নিয়ে আমার বাঁচার কথা ছিল
সেকথা
ভেবেই যত চিন্তার প্রশাখা-শাখা ছড়ায়ে ছিটায়ে একদিন
শীতের
শুকনো পাতা কুড়ায়ে ফেরি—সেসব সবুজ দুধধান
সবাই সেকথা
জানে এ বৃক্ষের ফলগুলো পাখির ঠোঁটের দাগে
বিক্ষত
হয়েই ঝরে। মৃত যে পাতার ভাঁজে পায়ের পাতার ছন্দ ওঠে
এমন সময়
সূর্যমুখী ফুলে ফুলে হেসে ওঠো তুমি সেকথা কাউকে—
বলিনি
কখনো আমি। সূর্যের মতোই ঠিক দূরে দূরে হেলেদুলে আলোকিত হবো।
সে হও
আলোকদর্শী জ্বলে তারার মতোন দূর পানে যাত্রী হবো
এখন মৃত
নদীর মতো আমিও শুয়ে প্রহর গুনি পিপাষার রঙ কিরূপের হয়?
অস্বীকার
করো যতো পারো নীল নীল ভাইব্রেশনে কাঁপন লাগে
এমন করেই
যদি পেতে হয় ইচ্ছা স্বাধীনতা লাল জবা ফুল যেন
খুকীর
খোঁপায় ফোটা আহলাদি মন ছুঁয়ে বেলুন বেলুন দম ফোটে আর
আঁচলে
অনেক ছায়া মায়ার বুনন থাকে বালির আগুন ঝরে
লুকায়ে
লুকায়ে যতো বিদ্যান বিজ্ঞান বোঝ এইচ টু ও কি জানা ভুল তবে?
চোখের
কোণায় জমে আছে নদীর দুধার এমন বাসনা কোনদিন ছিল
তা তুমি
জানলে খুশি হবে এই ভেবে যেন সব নদীরা ঠিকানা ভোলে!
সজনে ও তেলাকচু
সজনে পাতার মতো ঝুরঝুরে—আমি
তুমি তেলাকচু লতা—যেন বা জড়ায়ে থাকো
নড়া-চড়া আজকাল মড়ার মতোন
দাঁড়াতে পারি না—
না পারি, বাড়াতে হাত
এ রেইনফরেস্টের ছায়ার নিচে
দ্যখো—তিতোহাসি বিলায়ে
পদে পদে প্রতারিত—দক্ষ নিমগাছ!
ভেড়াদল
চারিদিকে
পোড়ামাংস
মাছি মারছে
কসাই
সবাই কি
পোঁকাধরা ফল?
দৈত্যের
হাতে তবু রাজকীয় মহিমা
পিপিলিকা
নিয়ে ব্যস্ত ফুলপাত আজ
এই পটকাবৃষ্টির
দেশে—
কী এক
রকম ভয়ে—স্তব্ধ চারদিক
তুমুল
হাততালির পরেও তবু দ্যাখো
জমে ওঠে
পরিচিত একই ম্যাজিক!
একটি মায়াবী কাক
একটি মায়াবী কাক সজনের ডালে
চোখের কাজল মুছে সে কষ্টকে পালে
পটকা পাতার গন্ধ নাকে এসে লাগে
নিমের ফলে বাহারি মধু, রস জাগে
মাটিয়া আলুর লতা পরগাছা আর
মহাসড়কে দাঁড়ালে দেখতে পাবেন
মোজাইক বারান্দায় দাঁড়ায়ে গাবেন
মাটির টবে বসানো কত পাতাবাহার
ফুটপথে মেওয়া ফল কতো পড়ে আছে
শহরে এখনো দু’একটি জেলি গাছে
ঠিক যেন আমাদের টিকে থাকা মাঠ
ক্ষত হতে ঝড়ে পড়ে রক্ত রক্ত আঠ
পুঁজিবালকের ঘুড়ি ওড়ে লাল-নীল
আমরা বেকুপ বলে, চোখে নুড়ি-শীল
তাকায়ে দেখতে থাকি মিছে শয়তান
স্বার্থের সময়ে শর্ত ছাড়া কি দেখা পান?
রেইনট্রির ফল দুলে দুলে বলে নষ্ট
অসীম যাতনা-ব্যথা—পাকা পাকা কষ্ট
বয়ে নিয়ে কতকাল এভাবে চলবে?
একা একা এইসব কেবা কী বলবে?
সমুদ্র পাওনা
এখানে
চাকা-জগৎ ঘোরে
ঘামের
স্বল্পায়ূ হলে—শ্রমিকরা গন্ধে ভরে যায়
সমুদ্র
ঘাপটি মেরে আছে
সে, জেনে
গেছে যে—
চাকার
ঘুর্ণিমা থেকে সৃষ্ট লবণের ইতিহাস
পৃথিবীর
সমুদ্ররা তিনভাগে ছিনায়ে নিলেও
তবু তো
আমরা ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত!
No comments:
Post a Comment