05 July 2016

অপরাহ্ণ সুসমিতো



শূন্য ও দুই
০ (শূন্য) একদিন মার্বেলের মতো গড়াতে গড়াতে ২ (দুই) এর কাছে গেল। বাইরে কলাগাছের বিশাল পাতায় বৃষ্টি হচ্ছিল নূপুরে,ঘুঙুরে । শূন্য বলল দুইকে;
: চোখ বন্ধ করো আর ভাবো তুমি হেঁটে যাচ্ছ শান্তিডাঙ্গা দুলালপুর

২ চোখ বন্ধ করে রইলো । প্রথমে মনে হলো একটুকরো চাপ আলো তারপর নি:সীম অন্ধকার । তবু মগজে ভেসে রইলো একটু আগে দেখা আলোর পাতা। শূন্য নরম করে জানতে চাইল।
: কি দেখো?
: শূন্যতা
: আরো গভীরে যাও,২
: হ্যাঁ দেখতে পাচ্ছি,আশ্চর্য!
: বলো বলো প্লিজ ..
: তোমাকে,শূন্য।
শূন্য পরম সুন্দর কুয়াকাটা হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল অসীমে।
: ও ২,তোমার রূহের ভেতর থেকে উচ্চারণ করো । মনের কথা কও
: আমি তোমার কাছে যেতে যাই, শূন্য । আমাদের মাঝে ১ (এক) সীমান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাঘব বোয়াল।

কলাপাতায় বৃষ্টির ধ্বনি সাহেবরামপুর গ্রামের মতো মম কানে বাজতে থাকল,চোখ খুলল ২। হাত ধরল শূন্যের দুজন হাঁটল । মনে হলো আজ কোথাও সীমান্ত নেই ।
বৃষ্টি নিজেই ওদের মাথায় ছাতা হয়ে রইল,বিশাল আকাশ সমান ।
মানব বন্ধনের কোনো সীমান্ত নেই ।




আয়নায় মুখ
প্রায় সময়ই আমি এক পাটি মোজা হারিয়ে ফেলি । তাতে অসুবিধা নেই,এক পায়েই মোজা পরে জুতো পায়ে দেই। লেখার সময় বাতিক আছে আমার,কান্না কাটি করি । কান্নার সময় আমাকে বিশ্রী দেখায় । উঠে গিয়ে আয়নায় দেখি,সর্বনাশ কি বিশ্রী লাগছে। তাড়াতাড়ি চোখ মুছতে শুরু করি ।
পত্রিকা পড়া শুরু করলে আমি ছোটো খাটো জিনিষ দিয়ে শুরু করি । কোন নায়কের সর্দি হয়েছে,কোন নায়িকা মুটিয়ে গেছে,কোন খেলোয়ার দাঁত মাজে না..এসব খবর আমার প্রিয়।

একসময় ঘুষ খেতে ইচ্ছা করতো..ইচ্ছা ছিল লুঙ্গি পরে অফিসে যাবো,লোকজন আমাকে রাশি রাশি টাকা দেবে,আমি লুঙ্গির কাছায় টাকা বোঝাই করে বাড়ি ফিরবো । টাকাগুলো বালিশের নিচে রাখবো,ঘুমানোর সময় টাকা কচকচ করবে। না,সাধ মিটিলো না।
ডাকটিকেট আমি থুথু দিয়ে লাগাই । বাথরুমে বসে বসে প্রচুর গালিগালাজ করি । যাকে পছন্দ করি না,তাকে কল্পনায় নাকের ফুটোতে টুথপেস্ট ঢুকিয়ে দেই । আর যাকে পছন্দ করি তাকে কল্পনায় কোলে বসিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখ কেটে দেই,দুই কালারের মোজা পরিয়ে দেই,ফিসফিস করে কানে কানে বলি;

: বাবুই এসো তোমার সর্দি ঝেড়ে দেই ।
এক একদিন মনে হয় ঈশ্বরের সাথে ফোনে কথা বলছি । আমাকে বলেন;
: কিরে ব্যাটা কেমন আছিস ?
: জ্বি আপনার দয়া
: তুই নাকি আমাকে মানিস না ? এমন থাপ্পড় দিবো না তোকে ..
: এই তো ঈশ্বর রেগে গেলেন আপনি ..আপনাকে রাগলে কুৎসিত লাগে। ছি:

ঈশ্বর হো হো করেন হেসে দেন । আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে দেখি হাসিটা অবিকল আমার মতো । আমি ঈশ্বরকে মৃদু অনুযোগের সাথে বলি;

: আপনি যাই বলুন না কেনো, ৩টা জিনিষের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই ।
ঈশ্বর হুংকার দিয়ে উঠলেন,অগ্নিশর্মা ।
: বল ব্যাটা কোন ৩টা জিনিষ?
: বলবো? অভয় দিচ্ছেন?
: বল..নো ভয়।
: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,ফেসবুক আর দেশে দেশে সংখ্যা-লঘু পেটানো।
মূহুর্ত চুপচাপ। আমি ভয়ে ভয়ে ডাকলাম;
: ঈশ্বর,ঈশ্বর ..ও প্রভু
নাহ,কোথাও কেউ নেই । ওমা সামনে দেখি বাকের ভাই । আঙ্গুলে চাবির রিঙ ঘুরাচ্ছেন । শিষ দিচ্ছেন...




No comments:

Post a Comment