25 October 2015

রত্নদীপা দে ঘোষ




হেমন্তের চারকোণা পিঠে এসে দাঁড়াই। পাহাড়তলির পারফিউম। অডিওনদীর অপেক্ষায় তুমি খুব গোপন গীটার, আকাশের ছাউনি উজাড় করে অক্টোবরওয়ালার পরিচিত সূর্যাস্ত। এই সেই হেমন্ত, ট্রাপিজবন্যায় এঁকে বেঁকে চোখের সীমানা। ভূগোলের কলকাঠি নাড়ছে ঝুরঝুরে হলুদলুডো। এ তোমার ট্রিটমেন্টের গুণ। পাঠ্য হয়ে উঠেছে  কবিতার হৈমন্তিক শ্বাসকষ্ট ।
তুমি বুঝি রেডিটুমেক ম্যাজিশিয়ান। নাকি অরণ্যের ঝাঁক ঝাঁক ফোটনডক্টর... যাদুদণ্ডের উড়ে যাওয়া রুমালে আমি কি তোমার সঙ্গে চড়ুইভাতি খেলবো... মোহিনীর মিউজিক খুলে হেমন্তে নামিয়ে রাখবো ভুলস্টেপের পর্বমালা। তুমি উদাসীন হলে বিমূর্ত। জ্যামিতিক প্যাটার্ন। লাইনের পর লাইন। অক্ষরের কোমর ধরে শব্দের লাইমজুস। শক্তিবাবুর হাতের তালুতে মিশে গেছে হেমন্তপানা পোস্টম্যানের অরণ্য সেলিব্রেশন।

তোমার চৌমাথায় যাইনি। তবু শিউরে ওঠা ডানা। হাল্কা শিখায় লিপস্টিকের পালক।
কুয়াশাস্তন, গায়ে লেপটে থাকা নীলজড়ির হেমন্ত পাকদণ্ডী। তুমি আমার এখানে ভ্রমণে এলে তরবারি এনো। গাছপাথর আর পাতাঝরার প্রবল হাতিয়ার। তুমি আমার রঙ কুড়োবে? অস্থিহরিণের ঘ্রাণ? আমি তো বিনুনির সমুদ্র খুলে শুকোতে দিয়েছি দীর্ঘতম চুমুতে...তোমার কবিতার ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে এসেছি নারীগুটিপোকা। গোপন দাবিতে তোমার ভেতরে তোমাকেই চাষ করি। চাঁদের সাদা বেয়ে প্রাক্তন ফুল, পরোয়ানা...
আয়ুহীন হয়ে পড়ছি তোমার আঁক কষা অঙ্ককবিতায়। চুপশিসের সমস্ত পাখি ভরে নিচ্ছি ঠোঁটে। তোমার সম্পাদ্য ধরে হেমন্তের ক্রিয়াপদ। তুমি কি যোজন ভুলবে আমার অহঙ্কারে? কপাটের অই পাশে হেমন্তের ক্যাম্পফায়ার...ফোয়ারার মতো যে কোনো গ্রহ, কয়েক টুকরো পেট্রোলিয়াম। জেলিসঙ্গমে ঋতুনির্ভর হয়ে উঠছি ক্রমশ। সমকামিতায় নথহীন ওগো হেমন্ত , তোমার বুকে জানালাবাড়ির ট্রাইবালরাজ...
ক্লিভেজে ভর দিয়ে মিছিল পেরচ্ছে আঙুল। সবুজ গালিচা। কি ভীষণ হেমন্তঘড়ি। বৃক্ষগান কি আক্রেলিকের কলম? হঠা মনে পড়া স্বপ্নের মধ্যে সৌরমণ্ডল, ব্রাহীন প্রজাপতির আতরফ্ল্যাগ...তুমি মুগ্ধ হেমন্তের প্রতিবাসরে, চাঁদপাড়া...সরগরম লোকালসিঁড়ি...আজ এক আশ্চর্য নাভি পেয়েছি...হেমবর্ণ। মল্লারে কেঁপে উঠেছে বেহাগ, প্রেক্ষাগৃহের আগুন...ঘুমের মধ্যে পুড়িয়ে দিই যে কবিতা, তার শুদ্ধতা তোমাকেও হেমন্ত পরাতে জানে। যদি ইচ্ছে হয় এইসব হেমন্তের সামন্ততন্ত্র নিয়ে বসি। হেমন্তের কাঁচ চারিয়ে যায় রক্তে। আলগা অনুচক্রিকার মতো হাইরাইজে জট পাকানো মৈথুন...বড়ো নড়বড়ে মাস্তুল। শিকড়ের নীচ দিয়ে বয়ে যায় তোমার হৃপিণ্ড, আস্ত লাবডুব... সেখানে নাকি কাতারে কাতারে হেমন্ত...

চিনতে শিখি ভাঙাচোরা স্বরগোত্রের কবিতা। এগারোটা হেমন্তমুখোশ। রঙচঙ্গে নক্সা ব্লাইন্দলেন। তুমি বলেছ হেমন্ত কোন ঋতু নয়...ঋতুমতি কবিতার অসমাপ্ত নাইটল্যাম্প... তার গলার স্বর, তার দক্ষিণাবর্ত হাসি...তরতাজা জবাফুলের সদগ্রন্থ...আমি পাতা ওলটাইনি একটিও। জেটপ্লেনের স্বরলিপিতে মুছে গেছে মার্ক্স ফ্রয়েদ জলপিপির টেনিস...আমিও ভুলতে বসেছি খেলা...আটকে দিচ্ছি গোল, গ্যালারীর কপাল ঘেঁষে হজম করছি কবিতার মোরগঝুঁটি...একে তুমি কি বলবে সানগ্লাসের ডালপালা জড়ান আহ্নিকগতি?
একটার পর একটা অসুখবার্ষিকী।
হেলথ সেন্টারের শুঁড়গুলো কেটে ফেলছি ক্রমে...হেমন্তের সাথে অন্ধতারার লোডশেডিং। মহুয়ার গ্রুপচ্যাটিং নিভে গেলে আমি বেরিয়ে আসবো। কাজুগাছের অন্ধকারে ঝর্ণাজল। সুস্মুনায় হেমন্তের আটটি কুসুম...রসায়ন ভ্যালিতে যৌনতা জমবে নতুন করে...
আর যে কোনো মাশরুম মানুষের মতো হেমন্তের কণ্ঠও ভেঙে যাবে অরগাজমে...

-----------------------------------------------------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment