25 October 2015

সুলতানা শিরীন সাজি

বৃষ্টির অপেক্ষায়...

কি জানি কি হলো ,
তারপর!

সমস্ত রাত একা জেগে আকাশের তারা দেখা।
কথা ছিলো
কথা হবে।
কথা ছিলো
রিমঝিম বৃষ্টিতে ভেজা হবে।
কথা তো কত কিছুই থাকে জগ
সংসারে!

তিনটা সত্যি বুকে রেখে প্রহর কাটে।
বুকের গভীরে নিঃশ্বাসের হুইসেলে
...রেলগাড়ি ছুটে চলে ।
কেনো যে ভালো লাগা বদলে যায়!
কেনো যে হৃদয়ের বাগানে ফোঁটে অচীন ফুল!

চেনা পথ,
চেনা মানুষ,
চেনা গান,
চেনা বাতাস,
চেনা ছায়া
মরিচিকার মত হৃদয়ে হারায় ব্যথিত বকুল!

সময় ফুরিয়ে যায়।
একা হওয়া দিন একা হওয়া রাত
ন্যাপথালিন এর গন্ধের মত বাতাসে মিলায়!

হাত ছুঁয়ে থাকে হাত।
চোখে ছুঁয়ে থাকে চোখ।
মন ছুঁয়ে থাকে মন।

শুধু অনেকদিন হয়ে গেলো আর বৃষ্টি আসেনা
এই বিষণ্ন বনভূমে!

 =:==:==:==:==:==:==:==:==:==:==:=


যে জোছনায় যুবকের ঘর ভেঙে যায়!

রাতভর জোছনা কুড়াতে কুড়াতে সকাল হয়ে গেলো কাল!
হাত ছুঁয়ে গেলো জোছনা।
চোখ ছুঁয়ে গেলো জোছনা।
আলোর সাম্পানে চড়ে যতদুর যাই। জোছনাও সাথে সাথে চলে!
আমাদের মুগ্ধ মৌনতায় জাগে রাত। আকাশের তারাগুলো চাঁদের পাশেই চুপ বসে থাকে, যেনো ভোরের বকুল!
টুপটাপ ঝরে গেলে ক্ষতি কি?

চাঁদের আলোর নদী বয়ে চলে।
দু'চোখের অভিলাষে আনন্দরা নেচে চলে যায় দুর থেকে দুরে !
এমন সুন্দর এক রাতেই ঘর ভাঙে এক যুবকের!
মুঠোফোন সংলাপে ভেসে আসে দীর্ঘশ্বাস।
ছেড়া পাতা এ্যালবাম থরে থরে !
শখের পিয়ানো বিক্রি হয় পানির দামে!
যে আয়নায় মুখ দেখে সকাল হতো ওদের ! সেই আয়না এখনো তেমন !
শুধু আয়নার মুখোমুখি মানুষগুলোই বদলে যাবে কাল !
যুবকের গলায় বিষণ্নতা!
ঘর বাড়ি সব খালি হয়ে যায়!

আহা এমন জোছনা ভরা রাত।এমন উদ্ভাসিত চাঁদ,
ওরা দেখেনি কি কোনদিন?
সংসার আহা সংসার!
যুবকের পাজর ভাঙে!
সেই আয়নাটায় আর একবার শুধু তাকাতো যদি ওরা, এমন জোছনা ভরা রাতে। আহ্লাদী জোছনায় ভেসে হয়তোবা ম্যাজিক হতো!

অহংকারী মানুষ কেনো যে ঘর বাঁধে আর ঘর ভাঙে!
দৃষ্টিহীন মানুষেরা যারা জানে না, জোছনা কি করে পান করতে হয়।
যারা জানে না,অন্ধকারের রং কালো,সবুজ নাকি হলুদাভ।
তারাই জোছনা ছোঁবে বলে হাত পেতে থাকে।
অথচ সেই যুবকের প্রিয়তম নারী কি অবলীলায় ভুলে যায়
জোছনা রাতের আলিঙ্গন!

প্রার্থনার ভাষায় যদি বলি।
যদি বলি, ওদের মঙ্গল করো প্রভূ।
যদি বলি সেই দশ বছরের মেয়েটা,বাবাকে যার বড় প্রয়োজন।
কাজে, অকাজে-
চুলের বিনুনী বাঁধতে বাবা।
স্কুলের ব্যাগ গোছাতে বাবা।
নিজের প্রিয় টিভি-শো দেখার সময় সোফায় পাশে থাকার পার্টনার বাবা।
ওর জন্যই না হয় আবার সব ঠিক হয়ে যাক!

পৃথিবীর তাব
ঘরভাঙা মানুষের উপর ভীষন রাগ হতে থাকে আমার।

একটা ছোট্ট জীবন,
না হয় বাবা আর মেয়েরই হোক!
যুবকের ভুলের কাছে হেরে যায় আয়নার মুখ।
প্রিয়ার জিদের কাছে হেরে যায় আয়নার মুখ!
যুবকের প্রিয়াকে ডাকে নতুন পৃথিবী।
ওরা কেউ জানে না দশ বছরের মেয়েটি তাদের ফুপিয়ে কাঁদে,
ওর ভীষন ইচ্ছে করে প্রিয় দুটো মানুষকে এক করে দিতে।
বালিশের নীচে খোঁজে। পুতুলের বাক্সে খোঁজে।
কোথায় সেই ম্যাজিকওয়ালা পুতুল?
যা ছুঁলেই আবারও সেই আয়নার মুখোমুখি ওরা তিনজন!
বাবা ,মা আর মেয়েটা।

মুঠোফোন সংলাপ শেষ হয়ে গেলে,
আমার খুব ইচ্ছে করে জোছনার রং হই।
অথবা ঈশ্বরের কোন ছায়া ।
এক নিমেষেই যুবককে ফিরিয়ে দেই হারানো ঘর, হারানো মানুষ!
ছোট্ট মেয়েটাকে ফিরিয়ে দেই প্রিয় বাবা।

কিছুই পারিনা!
চোখ ভেসে যায় ।
জোছনার বিশাল নদী পার হয়ে আমরা ফিরতে থাকি।
আর এমন জোছনায় কেনো যে মানুষ ঘর ভাঙে,
সেই দুঃখবোধে নীল হতে থাকি আমরা দুজনায়!


________

No comments:

Post a Comment