07 May 2016

সৌমিত্র চক্রবর্তী



ভূ-কম্প
অত্যধিক বর্জ্য জমে গেলে
বিগত শতকের ম্যালেরিয়া
ফিরে ফিরে আসে;
জ্বরে পুড়ে যায় নোংরা শরীর
কেঁপে উঠি ভয়ঙ্কর প্রতিবর্ত ক্রিয়ায়:
কূপ থেকে উপড়ে আসে
পচা লোমের গুচ্ছ
এদিকে ওদিকে চরে বেড়ানো
ধান্দাবাজ উকুনের কিছু
চাপা পড়ে, মরে,
বাকি ছোটে আতংক সঙ্গী:
সূর্য সুপারনোভা হলে
এভাবে কেঁপেই ধ্বসে যাব ঠিক।
থমকে দাঁড়ালে পাগলি প্রশ্ন করে
জোরে হেঁটে গেলেও,
ও পাগলি, সত্যি সাদা যে মিথ হয়ে
ঝুলন্ত আকাশপ্রদীপ হয়!
ও পাগলি, ওর মধ্যেই ভালোবাসা
লুকিয়ে কাঁদে
ভাঙা পৌষালী রাতে!


বারবণিত
বহুমাত্রিক কুশলতায় মাথার ওপরে দু হাত ঘুরিয়ে জাল ছুঁড়ি নিপুণ
একে একে ধরে ফেলি খলবলে কিশোরী মাছ ঝুম বিকেলে।
কাকেদের কা-কা, চড়ুইয়ের কিচমিচ, মুখ তুলে শিকার গন্ধ খোঁজা বেজির
ছটপটে ঘড়ির কাঁটায় অলবেলা সন্ধ্যে নেমে এলে
মেকআপ বাক্স হাতে তুলে বর্তমান ঠেলে দিই অতীতের ঝলমলে পেগ এ:
তুলির প্রত্যেক কম্পিট্যান্ট টানে ক্রমশঃ পুরুষ বেশ্যা হয়ে যাই।
অদৃশ্য কেউ যেন কানের পাশে সপাট চপেটাঘাত করেই
শোনায় গর্ভধারিণীর বেশ্যা হওয়ার নিখুঁত গল্প,
গ্রীনরুমের সব আয়না হঠাই কাচের ভঙ্গুর দরজা হয়ে ফিকফিক হাসে:
রিভলভিং মঞ্চে দাঁড়িয়ে বেমতলব হাসিকান্নার ঝড় তোলে
মহারাজ নিঃসঙ্গ অয়দিপাউস।


অমোঘ
না সংশয় রাখিনি আমিও
জন্মান্তরে বিশ্বাসও না,
বিকেলের নদীর ভাঁটায়
হঠা হরকা বানে
একে একে ডুবে যায় বদ্বীপ:
না, সংশয় রাখিনি
বুজে যাওয়া আঁচড়ের দাগে
জ্বরতপ্ত নিষিদ্ধ টিন ঠোঁটে
একলা সন্ধ্যের ঘরের এজলাসে:
সব সংশয় তোমার ব্রাহ্মী গালে
জিভে, বিষুবীয় বিভাজনে
বন্ধক রেখে স্বাধীনতা উদযাপন করেছি।

থাক
তাহলে! সরু সুতোয় পাক লেগে ছিঁড়ে যায় সময়ের লিংক,
কোনো বিষাক্ত ঢিলে পুকুরের নোংরা জলে ঘুলিয়ে ভেসে ওঠে পাঁক।
যত প্রতিশ্রুতি, যত আলোর আভা মাখা কর্পোরেট প্ল্যান
হঠাই নীরব অবজ্ঞায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে যায় ভাঙাচোরা ডাস্টবিনে;
ময়লার মাঝে চাপা পড়ে খুন হয়ে যাওয়া অকালমৃত ভবিষ্যতের
চোখের এক ফোঁটা বায়বীয় মায়া:

তাহলে! যাব বললেও সব জায়গায় যাওয়া হয় না অকালগমনে।

No comments:

Post a Comment