অকেজো
কানে মাকড়ি মাথায় পাগড়ি অশীতিপর
বৃদ্ধ
চুলগুলো শ্বেতশুভ্র হলেও
হাসলে দুচোখ স্নিগ্ধ।
আদর করে যেই সুধালে ছোট্ট নাতনীটিকে
বলত দাদি, বয়স কত আমার?
ব্যস্ত বড়, নাতনী জানায় সময় নেইকো কবার,
দেখছো না কি, খেলছি পুতুল?
দিচ্ছি বিয়ে ছেলের?
হাসতে হাসতে বুড়ো দাদার খুন যে
হবার জোগাড় ।
খানিক বাদে চুকলে বিয়ে,
যেই না গল্প শোনার- ইচ্ছে খানা মেললো ডানা
ছোট্ট খুকির আবার।
অমনি গিয়ে ঝপাৎ করে
পড়ল দাদার পিঠের পরে
দুলতে দুলতে বলল-'দাদা বয়স জানি তোমার'
যত বয়স বিলের ধারের বুড্ঢা কৃষ্ণচুড়ার।
বৃদ্ধ অবাক, এমন জবাব দেয়নি তো কেউ আগে!...
এমন ধারা বয়স আমার বলল কে তোর
কাছে?
ওই দেখোনা তোমার মতই ন্যুব্জ হয়ে
আছে।
দাঁতের পাটি নেইকো যেমন
শাখাও তো ফুল শূন্য তেমন
'অকেজো' তাই কেটে ফেলতে
দিন সকলেই গোনে,
বৃদ্ধ দাদা অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে
শোনে।
লড়াই
অহর্নিশি জ্বলছে প্রাণে সর্বনাশী
আগুন
কর্ণফুলীর বানভাসিতে হারিয়ে গেছে
ফাগুন
খিদের পেটে বাঁচার লড়াই, আমার বারোমাস
জলে কুমির, ডাঙায় আবার বাঘের সাথে বাস।
শ্বাপদ নখর জন্তুরা সব করছে ঘোরা
ফেরা
নোনতা খুনের স্বাদ পেয়েছে, দুর্বিনীত ওরা।
মানুষ শুধুই করছে যে আজ মান-হুস থাকার ভান
চলার বাঁকে ছন্নছাড়া জীবনমুখী গান।
'কেউ কারো নয়' এই মন্ত্রই রপ্ত করার নেশা
বিষাক্ত এই দুনিয়াদারীর নিঃশ্বাসে
বিষ মেশা।
অন্ধকারের বারুদ-গন্ধে হাঁপিয়ে মরে প্রাণ
চারদিকে নিচ্ছি শুধু বিবেক পচন
ঘ্রাণ ।
শাসন যন্ত্রে শোষণ তন্ত্রের অবাক
মিশেল দেখি
আইন কানুন চুলোয় গেল সমস্তটাই
মেকি।
ঠকবাজি আর জোচ্চুরিতে ভরল দ্যাখো
দেশ
স্বদন্তে তীক্ষ্ণ হাসি মানিয়ে
গ্যাছে বেশ।
দিন-প্রতিদিন হচ্ছে বদল নারীর জীবন অঙ্ক
হচ্ছে হনন আব্রু, করছে মানুষ নিঃশঙ্ক।
কষছি বসে হিসেবে কত, মিলছেনাকো কিছু
স্বাধীন বাঁচার ইচ্ছে তবু ছাড়ছেনাকো
পিছু ।
No comments:
Post a Comment