কয়েকটি আমি
দেয়ালের বিসৃত গায়ে কয়েকটি "আমি" ঝুলে আছি,
দেখো,সুচারু ড্রয়িং রুমের ব্যত্যয় ঘটে নি কোন তাতে
নিছক সন্ধ্যা নামলে ছায়ার ভেতর ঘুম আসে
ক্ষতের ভেতর ক্ষত কথা কয়-
কান পেতে শোন-
পায়ে পায়ে হায়েনার ডাক।
জলের গায়ে এঁকে যায় নখরের গল্প।
সেসব গল্প বলা বারণ,
মা বলেছে-
সন্ধ্যে নামলে দিঘীর জলে একা না যেতে,
এলোচুল মেয়ের গায়ে জলজ গন্ধ ভীষণ।
২১.০৭.২০১৭
দি
রেইন
বৃষ্টির কথা মনে রেখো
আলাদা করে জমানো রুপালি গন্ধ
ভিজিয়ে নিও টিনের চালে শব্দসমেত।
ভিজে বিকেলের স্নানে পা ফেলে
একবার মুখ তুলে ফের ডুবে যেয়ো নীলের রঙে,
পানকৌড়ির লেখা ডাইরিতে
তোমার যে নাম গোপনে টুকে রেখেছিলাম-
তারা গভীর মনোযোগে রাজেন্দ্রের বাঁশীতে
বেজে ওঠে ভরা জলসায়।
নি:শব্দের জানালা খুলে রাতের বাতাসেরা
করুণ মন্দারে ডেকে যায়।
উঠোন পেরিয়ে এসো চাঁদের নহরে
এখানে ভিজে যাবার ভয় নেই,প্রিয়তম।
১৪.০৭.২০১৬
খনার জিহ্বা
আমরা খনার জিহ্বা,
খণ্ডিত লিপি;
স্তনের অগ্রভাগ দয়িতের কাছে জমা রেখে
শামুক ধীরতম যদি পৃথিবীর চোখে,
এমন ঊষরকাল আঙুল রেখায়
গুনে গুনে পারাপার হতো কতো জনে,
এমন জলের দিনে
মুগ্ধ কপোত, ঘরছাড়া হলে কোন
বিরহীর টানে?
আমাদের জিহ্বা টিকটিকি খেলে
আমাদের যতো স্বর ব্যঞ্জনহীন,
খনাদের জিভগুলো দেয়ালের বুকে
বুকে হেঁটে চলে যায় সময় গুনে।
১৩.০৭.১৭
ইচ্ছেকড়ি
এরপর আমরা, যারা নতমুখী হবো
প্রস্থানের আগে আগে-
যারা বিক্ষিপ্ত জলাধারে পয়সা ছুঁড়বো
মৃতদের নামে,
তাদের কোন শোকবস্ত্র থাকবে না।
নিতম্বের গুরুভার ঠেলে কচ্ছপের মতো ধীরে
অতি ধীরে-
যদি ফিরে দেখি,
মাংসল পেটির রুই খেতে ইচ্ছে হবে না।
তোমার কালো বিড়ালের রাত্রিভোজনের জন্যে তুলে রেখো।
তার যমজ
শ্যাওড়া চোখের তলায়
আমরা, যারা হাবুডুবু খাই,
যারা প্রেমে পড়ি প্রতি রাতে-
ছায়ার স্বগত উচ্চারণে
যারা আহুত অতিথির মতো,
তারা সকালের রোদে কাঁটাকুটি হই।
পেছনে ছায়াদের বিলাপ রেখে নতমুখী পায়চারি
কতিপয় ইচ্ছেকড়ির।
০৫.০৭.২০১৫
সমুদ্রমৈথুন
-ওটা কি?
-সমুদ্র?
-নাকি আমার স্বগতোক্তি?
-নাকি জীবনের কোলাহল সামনে রেখে নির্জনের বিদ্রূপ?
আমি যদি বলি,
না...
ওটা সমুদ্র নয়,গভীর জলত্রাস কিংবা প্রেমিকার দু'চোখ
নয়।ওটা বৃক্ষের অজস্র গান-নির্বাকের উচ্চারণ।
যা দেখে তোমার বিস্ময় আসে কণ্ঠের দোরে,চোখ জুড়ে নামে অগুনতি ম্যাকাওপাখির এর উজ্জ্বল পালক- রঙের আকাশ!
তোমার বোধের ক্লান্তি অলস পা ফেলে এগুতে থাকে নিবিড় আলিঙ্গনে বুঁদ হতে।
-আর তুমি?
তুমিও নুন হয়ে মিশে যেতে থাকো জলজমৈথুনে।
-আমি?
আমি তোমাদের পবিত্র জারজ সন্তান,
অথবা, জীবন্ত জিজ্ঞাসা!
০৭.০৫.২০১৭
No comments:
Post a Comment