চোখ
চোখ এর স্বভাব দেখতে থাকা।
চোখ দু'টোকে সামলে রাখিস।
তোর আমার চোখের ভেতর,আকাশ থাকে!
পাখী হয়ে উড়তে থাকিস ইচ্ছেমতন।
একটু যদি হয় অবসাদ, বসতে পারিস।
চোখের কাছেই নদী থাকে!
নদীর কাছেই ঘাসের উপর ,একটু নাহয় বসেই গেলি।
তোর হাতের মুঠোর ভিতর, জোনাক জ্বলে সন্ধ্যা হলে।
আমায় নাহয় সেই জোনাকের আলোটুকু ছুঁতে দিলি!
বুকের ভিতর যেই বুনোহাঁস,
আদর ভরে সাঁতার কাঁটে, চন্দ্রাহত সে নাকি রোজ,
বিনি সুতার মালা গাঁথে!
আমায় কেবল সেই মালাটা, পড়তে দিবি?
পথ হারানো পথিক যেমন পথের দিশা চায়।
তোর কেনো আজ হাতের মুঠোর হাত হারাবার ভয়?
কাছেই আছি, তোর কাছেই, চোখের আলোর মত,
ঘুম এলে যে স্বপ্ন আসে ,সেখানেও আমিও।
ঠোঁট এর ভাঁজে যেই আদরে সকাল জাগে তোর।
আমায় কেনো খুঁজে বেড়াস চোখে নিয়ে ঘোর?
চোখ দুটো তোর ,আমার চোখেই,ঘর বেঁধেছে কবে।
বলতে পারিস কার অপরাধ, কার বনবাস হবে?
ফিনিক্স
পাখীর মত
আঙুলে ছুঁয়ে রাখা স্মৃতির পালক,বলোতো
কি নাম সে পাখির?
মেঘ ছুঁলে বৃষ্টি হয়,আর পাখি ছুঁলে ?
মানুষ এর অভিলাষ এর অদ্ভুত এক পাটার্ণ থাকে।
কুরুশ কাঁটায় বুনে দিতে পারতো যে অনায়াসে, সেই তাকেই
বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত ফেলে এসেছিল সে।
তাকে ভেবে ভেবেই আকাশ প্রতিমার কালো চোখে লালের ইতিবৃত্ত।
ঘুলঘুলি দিয়ে তাকিয়ে সে শুধু উড়ে চলা পাখিদের দেখে।
হাতের আঙুলে অবসাদ নেমে এলে, সে আর কিচ্ছু মনে রাখেনা আর।
সে দেখেনা আর কোন মেঘ রং।
পুড়তে থাকে হৃদয়ের বাড়ি ঘর,বারান্দা সব ,
ফিনিক্স পাখির মত আবার জেগে ওঠে কখন জানি সে ।
আগের মতই হাঁটতে শেখে রোজ।
অরণ্য বিহারে যেতে যেতে সে ফিরে যায় তেইশ বছর।
সেখানেই দাঁড়িয়েছিল কবি তার জন্য,যার দিকে তাকায়নি বলে
অভিশপ্ত হয়েছিল সে।
হয়েছিল পাথর এর মূর্তির মত নিষ্প্রাণ! যাকে ছুঁয়ে দিলেও সে আর জাগেনা কোনদিন।
জাগেনা আনন্দ,শিৎকার । বদলায়না বেঁচে থাকার অদ্ভুত অভ্যাস!
সে শুধু বেঁচে ওঠে ফিনিক্স পাখীর মত আশ্চর্য্য নিয়মে!
নিমন্ত্রন
যতটুকু ভালোবাসলে হৃদয় উপছে যাবেনা ,ততটুকু ভালোবাসবো।
যতটুকু কাছে আসলে হাত ছুঁয়ে যাবে নদী, ততটুকু কাছে আসবো।
তোমার জানালার কাছে যেই পাখিটা প্রতিদিন এসে শিস দেয়, যার দিকে তাকিয়ে তোমার মনে হয়,সেই পাখির পালকের এক একটা রঙ দিয়ে একটা উলের চাদর বুনবে।
তোমার ঘরের যে জানালার কাছের রকিং চেয়ারটায় বসে তুমি আকাশ দেখো, আমি সেই আকাশটুকু হয়ে তোমার চোখের মুখোমুখি।
সমুদ্র আর আকাশ কখনো মেলেনা।
তবু আমি শুধু সমুদ্র তোমাকে ছুঁতে,
বয়ে যাবো নিরবধি।
বর্ষা, তুমি আমার বাড়ি এসো!
বর্ষা, আমি তোমার বাড়ি যাবো!
সাত
সতেরো ভালোবাসা
এখনো কি শাহবাগ এর মোড়ে অপেক্ষা করে কেউ আগের মত?
ফুলের দোকানে রজনীগন্ধ্যা আর দোপাটি ,গোলাপ শত শত?
মৌলি নাকি সিলভানা'য় ,আজ কোথায় যাবে?
ভীষন গরমে আগুনে পোড়ানো ব্যস্ত শহরে।
যাবে নাকি আজ সেই খানেতে স্মৃতির ঘোরে?
লাইব্রেরীর সিঁড়িতে বসা সময়গুলো।
হাতছানি দেয় আমাকে এখনো, তোমাকেও , বলো !
কাঁটাবন,নীলক্ষেত আর মৈত্রী হল।
আজিমপুরের সাজানো বিকালে বন্ধু দল।
মাঠের সবুজে বাদামে খোসাতে, গল্প হাসিতে
সেই দিনগুলো কই?
যাদুর মতন পারি যদি, সেই, দিনগুলো ছুঁই!
তোমার হাতেতে জড়ানো আদরে, দিনগুলো সব,
ফিরে আসে ঠিক আগের মতনই সুবাস আজ।
ভালোবাসা যত পুরানো হয় ততই বাড়ে।
স্মৃতির চাদরে বুকের আদরে থরে থরে।
তোমাকে খুঁজি আজ পথের কিনারে আগের মত।
পাশেই থাকো, তবু , ঘুরে আসি আজ স্মৃতিপথ যত!
মনে পড়ে আজো কলা ভবনের ধূলোমাখা সিঁড়ি।
হলের গেটে মামুর দোকানে, গরম, চায়ের হাঁড়ি।
হারিয়ে যাওয়া বন্ধু গায় ভুলে যাওয়া গান।
গান গেয়ে গেয়ে হারানো বন্ধু সে, কোথায় আজ?
কেযে কার বুকের ভিতর অঝোর ধারায়,
বৃষ্টি নাকি কান্না হয়ে শহর ভাসায়!
ভালোবাসা হলো বুক পকেটের নীল গোলাপ।
কেউ খুঁজে পায়,কেউ বা কখনো পেয়েও হারায়।
No comments:
Post a Comment