গণতান্ত্রিক জন্মনিয়ন্ত্রণ
যতবার, ঠিক যতবার পার হতে চেয়েছি সামাজিক
উঠান
ঠিক ততবার আমাকে লেপ্টে ধরেছে শীতের রাত।
জাপটে ধরেছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিহীন বর্ষাকাল।
আমি আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা পড়ে
গ্যাছি সামাজিক সাতপাঁকে,
আমি জড়িয়ে গিয়েছি মানুষ অথবা
ভালোবাসা অগ্রাহ্য পাপে।
আমি বারবার ইদানিং আমি বারবার ভুলে
গিয়েছি-
একদিন তোমার বুকের গন্ধে
আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম হারাবার ভয়।
পরাস্ত আপোষে কেনা সুখে ঘরে
ফিরবার নতজানু ইচ্ছে-
মানিব্যাগ; মোটা মানিব্যাগের সুখ!
জানো মা এখন আর তোমার
স্নেহাস্পর্শ,
বালাই কাটাবার ফুঃগুলো কোনও
কাজে আসেনা।
রাস্তাঘাটে ওত পেতে থাকা শিকারী
নেকড়ে আমাকে ক্ষুধার্ত রেখে
ভয়ানক সাদা শার্টের পরিপাটি স্থলনে,
ইতস্তত ভদ্রতার রুপক অবদমিত
সূচকে, মেঘগুলো আমার;
নিরুদ্দিষ্ট মেঘগুলো ছেড়ে যেতে
যেতে আমায়, পত্রিকায়
একটি বন্ধুর জন্য হারানো
বিজ্ঞাপন ছাপায়।
জানো মা, এই মার্চের ভ্যাংকুভার অগাষ্টের
প্রাগে পরিপাটি ফিনাইল গন্ধে,
তোমার আদুরে অসামাজিক বেয়াদব খোকা আমি
মাঝেমাঝে বর্তমান স্ববিরোধিতায়
বেরিয়ে আসি - হেটে বেড়াই,
হাটতে হাটতে বুঝি - এইতো খোকা আমার, দৌড়া। বাবা
আমার চীৎকার করে কাঁদ এবার। - বলছো, বসে স্পন্দিত হৃদয়ে আমার।
আচ্ছা মা এই দাম্পত্য-
এই পরকীয়া- স্বকীয়া- সমকীয়ায়
সংসারটা তোমার বুকের মত স্বাস্থ্যবান হলোনা কেনো?
হলে - খুব বেশি ক্ষতি কি হতো আকাশের উপর
আকাশে থাকা ঈশ্বরের।
জানো মা-
আমাকে উচ্ছন্নে যাওয়া, নিষিদ্ধ পঙক্তির কবি ঘোষনার আবহাওয়া
বার্তা
প্রাগ থেকে লিমা
বার্লিন থেকে মক্কা
মস্কো থেকে কিয়েভ হয়ে
ঢাকার পথে- বিষন্ন বিমানবালার বিমর্ষ বিমানে
আমি আসছি - আসছি কাটাছেড়া লাশ বইতে বইতে বিরক্ত
একলক্ষ সাতান্ন হাজার
বর্গকিলোমিটারের মর্গেই হবে আশ্রয়।
জানো মা -কবিতার ও রাষ্ট্রের অভিভাবকেরা- শিক্ষকেরা,
চাবুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কবিতার
শব্দগুলোকে, মিছিলের
শ্লোগান গুলোকে
রাজপথ থেকে রান্নাঘর হয়ে শোবার
ঘর লাগোয়া স্নানঘরে
থাকা গতকালের বাসি জামায় লেগে
থাকা অনার্য রক্তে বিশুদ্ধ বীর্যকে
হত্যা করেছে - হত্যা করেছে বেয়নেটে কবিতা,
হত্যা করেছে বুলেটে ছোরায়
কবিকে।
হত্যা করেছে সামরিক জান্তার
বেশে গণতান্ত্রিক পেটোয়া বাহিনী দিয়ে।
হত্যা পরবর্তী; ফড়িঙ্গ এর মতন উড়ে এসে মিগ ২৯ পুড়িয়ে
দিয়েছে চিঠি,
পুড়িয়েছে তোমার আঁচল কাটা জাতীয়
পতাকা আমার।
জানো মা জেনেভা কনভেনশন তখন
ঘরের দেয়ালে গুলিবিদ্ধ
রক্তের পিচুটি ছাড়া যেনো কিছু
নয় অনুভূতির মত স্থবির।
তুমি ঠিকই জানতে মা- তুমি ছাড়া আমার বন্ধু নেই, স্বজন নেই কোথাও?
তুমি জানতে রাষ্ট্রীয়
সন্ত্রাসীদের অট্টহাসিতে তুমি ছাড়া কেউ নেই -
যে আমার হত্যায় চীৎকার করে বলবে-
আর কত কবিতার রক্তে রাঙাবেন হাত
স্বাধীনতার?
আর কত প্রতিবাদের টুটি চেপে ধরে
বোকাবাক্সে দেখাবেন উন্নয়নের অন্তর্বাস।
দরোজা খুলুন উঠান থেকে সরান
আধ-ঘুমন্ত বয়স্ক সৈনিক-
খুলে দেখুন - এসেছি আমি। খুন হওয়া হর-রোজ যে কবি
তার স্বজন আমি।
ঘর থেকে বেড়িয়ে রাজপথে মিছিলে
মিছিলে হাতমুঠ করা প্রতিবাদের
দরুণ ঘরে না ফেরা বিপ্লবীর
আত্মীয় আমি-
আমি নতজানু জনতার কম্পমান ভীত
মুখ-
আমি হাতের মুঠোয় পুরে সর্বোচ্চ
যন্ত্রণা; জন্ম দেই....
আমি মা- বিচার দিতে নয়! বিচার চাইতেও নয়
এমনকি বিচার বহির্ভূত হত্যার
দায় লেপ্তেও আসিনি আমি।
আমি আজ এসেছি,
এসেছি হত্যা করতে বানোয়াট
সংবিধান- খুন করতে এসেছি অন্ধ বধির
জাতীয় সংগীত।
আমি মা-
পুত্রশোক, কবিপুত্র হত্যায়- প্রতিবাদ হত্যায়
আপনার মায়ের যে লজ্জিত মুখ, তা ; কেড়ে
নিয়ে শোক হয়েছে শক্তি।
রাষ্ট্রপ্রধান কথা বলুন এবার।
রাষ্ট্রপ্রধান; হে নাটুকে মানচিত্রের রাষ্ট্রপ্রধান -
দরোজা খুলুন, এবার; জানলা খুলুন।
আমার সন্তান চিরনিদ্রায় যাবার
আগে আপনার পোষ্য~
উন্নয়নের নহরে ভেসে যাওয়া উলঙ্গ
জনগন,
যাদের আবার বুকে মুখে চোখে কাপরের
ভয়।
যাদের বুক কাপে যতটা অন্যায়ে
তার চেয়ে বেশি প্রতিবাদে। তাদের জানাতে চাই-
আপনারা ঘুমান চোখ খুলে-
আহার করে নাকে- কানে নিন পানীয়।
বধির হয়ে গন্ধ গুনুন ,
অন্ধত্বে আঁটুন কুলুপ - নিরক্ষরে পড়ুন দাতাগোষ্ঠীর স্লেটে।
কিন্তু আমি মা-
আপনার মায়ের করা ভুল আর মঞ্চস্থ
হচ্ছেনা জানুন।
আর কত?
আমি মা -
আর কত লাশ বইবো?
লাশের ভারে নীচু হবোই বা আর কত?
প্রতিবাদহীন দাতে নুয়ে; ছুঁয়েতো ফেলেছি পায়ের মাটি।
আমি মা-
আমি আজ থেকে বন্ধ করে জরায়ুমুখ
নিষিদ্ধ করছি পৃথিবীব্যাপী জন্মপ্রক্রিয়া।
No comments:
Post a Comment