খুব সকালেই ঘুম থেকে ওঠা অভ্যাস হাবীব আহসানের। তারপর তিনি
ঘড়ি ধরে দু ঘন্টা রেওয়াজ করেন। গত দিন থেকে একটা নতুন গানে সুর দেওয়া শুরু
করেছেন। গানে সুর দেওয়া তার খুব পছন্দের। সকাল দশটার মধ্যে তিনি ফ্রি হয়ে যান। তখন
বেশ কিছুক্ষণ ফেসবুক। আজও তিনি নিয়ম মাফিক মগ ভর্তি কফি নিয়ে বসলেন ফেসবুকে। চ্যাট
বক্সে প্রিয়লতার এসএমএস।
- আপনি কি ফ্রি আছেন?
হাবীব সাহেব একটু অবাক হন। প্রীতিলতা এসময় নক করে না। এসময় তার ক্লাস থাকে।
-হ্যাঁ, বলো।
-একটা কড়া ঘুমের ঔষধের নাম বলুন।
হাবীব সাহেবের ভ্রু কুঁচকে ওঠে। তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বলে এরকম বলাটাই বিপদজনক। তিনি কম্পিউটার স্ক্রীনে মেয়েটার ছবির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকেন। মনে হয় স্ক্রীনে থাকা ছবির দিকে তাকিয়েই তিনি মেয়েটার মনের কথা বুঝে ফেলবেন।
-কেন?
হাত দিয়ে টাচ করে লেখা কথাটায় কোন ঝাঁঝ ফুটে ওঠে না।
-কয়েকদিন ধরে ঘুম হচ্ছে না। এমন কোন ঔষধ যাতে এক টানা সাত আট ঘন্টা নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারি।
হাবীব সাহেবের মনে হয় এটা সত্যি হলেও হতে পারে। তারপরও তিনি আরো নিশ্চিত হতে চান।
- তোমার স্কুল নেই আজ?
-না, ছুটি নিয়েছি।
-খুব বেশি সমস্যা হলে তুমি এই ট্যাবলেট খেতে পারো।
-আচ্ছা, ধন্যবাদ।
চ্যাট স্ক্রীনে আর দেখা যায় না প্রিয়লতাকে। প্রিয়লতা তার নতুন বন্ধু। অল্পবয়স, কবিতা লেখে। তিনি তুমি করেই বলেন। মেয়েটার ভেতরে এক ধরণের সরলতা আছে। মেয়েটার সাথে তার প্রথম আলাপ কবিতা নিয়ে। মেয়েটা তার কোন একটা কবিতায় লিখেছিলো সীমিত সামর্থ্যে ভদকার বোতলে ফিনিশিং টাচ! ভদকা হাবীব সাহেবের প্রিয় ড্রিংকস। তারপর তিনিই প্রিয়লতাকে নক করেন। একথা থেকে ওকথা। কথায় কথায় নানা কথা। বিকেলে তিনি চেম্বারে যান। টানা পাঁচ ঘন্টা তিনি নানা লোকের শারীরিক কষ্টের কথা শোনেন। বিভিন্ন ঔষধ লেখেন। এসব শারীরিক কষ্টের কথা শুনে তিনি খুব বিচলিত হন না। তিনি মনে করেন শারীরিক যে কোন কষ্টের চাইতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়াই আসল কষ্টের। রাত দশটার পর বাসায় ফিরে তিনি ফ্রেশ হন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দ্যাখেন। তার বয়স পঞ্চান্ন ছুঁই ছুঁই করছে। কিন্তু আয়নায় যাকে দেখা যায় তার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। দীর্ঘদিন থেকে তিনি একা থাকেন। কখনো কখনো বাসার আড্ডা হয়, গানের, কবিতার। তার একজন বান্ধবী আছে। মাঝে মাঝে সে আসে, রাত কেটে যায় আনন্দে, দিন কেটে যায় ভালোবাসায়। এছাড়া তিনি অন্য নারীদের কাছেও যান মাঝে মাঝে। তিনি মানব ধর্মে বিশ্বাসী।
রান্নাঘরে বুয়ার রান্না করে রেখে যাওয়া খাবার খেতে ইচ্ছে করে না হাবীব সাহেবের। তিনি চুপ করে বসে থাকেন ফেসবুক খুলে। প্রীতিলতা কি আছে?
-আছো তুমি?
-হুঁ
-মন ভালো?
-না, আমার শুধু মরে যেতে ইচ্ছে হয়।
- তুমি বড় বোকা মেয়ে।
-হ্যাঁ
-এরকম করে কাউকে ভালোবাসতে হয় না।
-হ্যাঁ
তিনি বলেন একথা। কিন্তু তারও এই বয়সে কাউকে পাগলের মতো ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়। তারও ইচ্ছে করে ভালোবেসে মরে যাওয়ার কথা চিন্তা করতে। ইচ্ছে করে এই মেয়েটার মতো করে তাকে কেউ ভালোবাসুক।
-নিজেকে নিয়ে ভাববে।
-আমি তো নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারছি না। সারাক্ষণই ওর কথা মনে হয়। মনে হয় মরে যাই। -যে তোমাকে নিয়ে ভাবে না তাকে নিয়ে কেন ভাববে বলো?
-আমি কি ইচ্ছে করে ভাবি? আমি তো ভাবতে চাই না। সারাদিন শুধু কান্না আসে। এখনো আমি কাঁদছি।
হাবীব সাহেবের ইচ্ছে করে মেয়েটার মাথায় হাত রাখতে। আর বলতে, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসবো। অনেক …
কিন্তু তিনি এটা বলতে পারেন না। তিনি প্রীতিলতার থুতনির কাছাকাছি তিলটার দিকে তাকিয়ে থাকেন। ভালোবাসলে মানুষ এত অসহায় হয়ে যায়। শিশুর মতো ছেলেমানুষ, অবুঝ।
-যাও, ঘুমিয়ে পড়ো।
-আচ্ছা।
তিনি নিজেও সোফায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তার দিন শুরু হয় প্রতিদিনের মতোই! শুধু রেওয়াজের মাঝখানে আমেরিকা থেকে ফোন করে তার মেয়ে। মেয়েটার সাথে কথা বলতে গিয়ে তার চোখ ভিজে ওঠে, অকারণেই। হঠাৎ করে এতদিন পর চোখ ভিজে ওঠার কোন কারণ খুঁজে পান না।
সারাদিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ভেসে ওঠে প্রীতিলতার মুখ। তার ভেতরটা একটু একটু করে টলতে থাকে। গুণ গুণ করে, মায়ার সুর, প্রেমের সুর। তিনি অপেক্ষা করেন কখন দশটা বাজবে। কখন অবসর হয়ে তিনি কথা বলতে পারবেন প্রীতিলতার সাথে।
রাত দশটার পর তিনি বসে থাকেন অপেক্ষায়।
-তুমি আছো?
-তুমি আছো?
এসএমএস সিন হয় না তার। তার বেশ খারাপ লাগতে থাকে। বেশ কিছুদিন পর তিনি ভদকার বোতল খুলে বসেন। রাত বারোটার পর প্রীতিলতা কথা বলে।
-আচ্ছা, চল্লিশটা ঘুমের ঔষধে ঠিক কত ঘন্টা পর একজন মানুষের মৃত্যু হবে?
চমকে উঠলেন হাবীব সাহেব। তার নেশা ধরানো চোখে হঠাৎ করেই নেশা কেটে যায়।
-এত রাতে মজা করছো প্রীতি?
-এম্নি জিজ্ঞেস করছি। বলুন না।
-এটা ডিপেন্ড করে ট্রিটমেন্টের উপর! কে কত তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট পায়। এখন বলো এসব কৌতুক করছো কেন?
- আমি চল্লিশটা ঘুমের ঔষধ কালেক্ট করেছি।
তিনি ভয়াবহ চমকে ওঠেন।
-প্লিজ প্রীতি এসব করবে না তুমি। প্লিজ। প্লিজ।
-আপনার সাথে আমার চ্যাট লিস্ট মুছে দিচ্ছি। আপনিও মুছে দিবেন।
হাবীব সাহেবের খুব রাগ হয়ে যায়।
-আমি আমার চ্যাট লিস্ট কি করবো না করবো সেটা আমার ব্যাপার। তোমাকে এ নিয়ে ভাবতে হবে না।
-আচ্ছা, বাই।
রাগ করে তিনি ফেসবুক থেকে লগ আউট হয়ে যান। সাধারণত তিনি বাসায় যতক্ষণ থাকেন ততক্ষণ তিনি অনলাইনে থাকেন।
পরের দিনটা হাবীব সাহেবের মনটা খচখচ করেই যায়। তার অনেকদিনের রুটিন এলোমেলো হয়ে যায়। তিনি রেওয়াজ না করেই ভদকার বোতল নিয়ে বসেন। তার মন বলে তিনি ফেসবুক খুললে যথারীতি আগের মতো প্রীতিলতাকে দেখবেন। তিনি ঠিক করেন প্রথমে তিনি প্রীতির সাথে কথা বলবেন না। প্রীতি সরি বললেই তিনি কথা বলবেন।
সেদিন রাত দশটারও অনেক পর ফ্রি হয়ে তিনি যখন অনলাইনে আসেন তখন তিনি প্রীতিলতার টাইমলাইনে যান। প্রীতিলতার টাইমলাইনে খুঁটিনাটি পোস্ট দেখেন। তারপর তিনি ওর ফ্যামিলির টাইমলাইন ঘুরে আসেন। সেখানে কেউ একজন লিখেছে, প্লিজ, প্রে ফর প্রীতিলতা!
তিনি স্তব্ধ হয়ে থাকেন অনেকক্ষণ। অনেকদিন তিনি কারো জন্য প্রে করেন না। প্রে শব্দটাতেই তার বিশ্বাস নেই। তবে তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। সে রাত, তার পরের দিন।
তারও পরের দিন আরো ছোট্ট একটা পোস্ট। প্রীতিলতা আর নেই …
তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রীতিলতার চ্যাট লিস্ট মুছে দ্যান। একটা অধ্যায় মুছে ফেলে তার বড় ক্লান্ত লাগে।
- আপনি কি ফ্রি আছেন?
হাবীব সাহেব একটু অবাক হন। প্রীতিলতা এসময় নক করে না। এসময় তার ক্লাস থাকে।
-হ্যাঁ, বলো।
-একটা কড়া ঘুমের ঔষধের নাম বলুন।
হাবীব সাহেবের ভ্রু কুঁচকে ওঠে। তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বলে এরকম বলাটাই বিপদজনক। তিনি কম্পিউটার স্ক্রীনে মেয়েটার ছবির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকেন। মনে হয় স্ক্রীনে থাকা ছবির দিকে তাকিয়েই তিনি মেয়েটার মনের কথা বুঝে ফেলবেন।
-কেন?
হাত দিয়ে টাচ করে লেখা কথাটায় কোন ঝাঁঝ ফুটে ওঠে না।
-কয়েকদিন ধরে ঘুম হচ্ছে না। এমন কোন ঔষধ যাতে এক টানা সাত আট ঘন্টা নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারি।
হাবীব সাহেবের মনে হয় এটা সত্যি হলেও হতে পারে। তারপরও তিনি আরো নিশ্চিত হতে চান।
- তোমার স্কুল নেই আজ?
-না, ছুটি নিয়েছি।
-খুব বেশি সমস্যা হলে তুমি এই ট্যাবলেট খেতে পারো।
-আচ্ছা, ধন্যবাদ।
চ্যাট স্ক্রীনে আর দেখা যায় না প্রিয়লতাকে। প্রিয়লতা তার নতুন বন্ধু। অল্পবয়স, কবিতা লেখে। তিনি তুমি করেই বলেন। মেয়েটার ভেতরে এক ধরণের সরলতা আছে। মেয়েটার সাথে তার প্রথম আলাপ কবিতা নিয়ে। মেয়েটা তার কোন একটা কবিতায় লিখেছিলো সীমিত সামর্থ্যে ভদকার বোতলে ফিনিশিং টাচ! ভদকা হাবীব সাহেবের প্রিয় ড্রিংকস। তারপর তিনিই প্রিয়লতাকে নক করেন। একথা থেকে ওকথা। কথায় কথায় নানা কথা। বিকেলে তিনি চেম্বারে যান। টানা পাঁচ ঘন্টা তিনি নানা লোকের শারীরিক কষ্টের কথা শোনেন। বিভিন্ন ঔষধ লেখেন। এসব শারীরিক কষ্টের কথা শুনে তিনি খুব বিচলিত হন না। তিনি মনে করেন শারীরিক যে কোন কষ্টের চাইতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়াই আসল কষ্টের। রাত দশটার পর বাসায় ফিরে তিনি ফ্রেশ হন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দ্যাখেন। তার বয়স পঞ্চান্ন ছুঁই ছুঁই করছে। কিন্তু আয়নায় যাকে দেখা যায় তার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। দীর্ঘদিন থেকে তিনি একা থাকেন। কখনো কখনো বাসার আড্ডা হয়, গানের, কবিতার। তার একজন বান্ধবী আছে। মাঝে মাঝে সে আসে, রাত কেটে যায় আনন্দে, দিন কেটে যায় ভালোবাসায়। এছাড়া তিনি অন্য নারীদের কাছেও যান মাঝে মাঝে। তিনি মানব ধর্মে বিশ্বাসী।
রান্নাঘরে বুয়ার রান্না করে রেখে যাওয়া খাবার খেতে ইচ্ছে করে না হাবীব সাহেবের। তিনি চুপ করে বসে থাকেন ফেসবুক খুলে। প্রীতিলতা কি আছে?
-আছো তুমি?
-হুঁ
-মন ভালো?
-না, আমার শুধু মরে যেতে ইচ্ছে হয়।
- তুমি বড় বোকা মেয়ে।
-হ্যাঁ
-এরকম করে কাউকে ভালোবাসতে হয় না।
-হ্যাঁ
তিনি বলেন একথা। কিন্তু তারও এই বয়সে কাউকে পাগলের মতো ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়। তারও ইচ্ছে করে ভালোবেসে মরে যাওয়ার কথা চিন্তা করতে। ইচ্ছে করে এই মেয়েটার মতো করে তাকে কেউ ভালোবাসুক।
-নিজেকে নিয়ে ভাববে।
-আমি তো নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারছি না। সারাক্ষণই ওর কথা মনে হয়। মনে হয় মরে যাই। -যে তোমাকে নিয়ে ভাবে না তাকে নিয়ে কেন ভাববে বলো?
-আমি কি ইচ্ছে করে ভাবি? আমি তো ভাবতে চাই না। সারাদিন শুধু কান্না আসে। এখনো আমি কাঁদছি।
হাবীব সাহেবের ইচ্ছে করে মেয়েটার মাথায় হাত রাখতে। আর বলতে, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসবো। অনেক …
কিন্তু তিনি এটা বলতে পারেন না। তিনি প্রীতিলতার থুতনির কাছাকাছি তিলটার দিকে তাকিয়ে থাকেন। ভালোবাসলে মানুষ এত অসহায় হয়ে যায়। শিশুর মতো ছেলেমানুষ, অবুঝ।
-যাও, ঘুমিয়ে পড়ো।
-আচ্ছা।
তিনি নিজেও সোফায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তার দিন শুরু হয় প্রতিদিনের মতোই! শুধু রেওয়াজের মাঝখানে আমেরিকা থেকে ফোন করে তার মেয়ে। মেয়েটার সাথে কথা বলতে গিয়ে তার চোখ ভিজে ওঠে, অকারণেই। হঠাৎ করে এতদিন পর চোখ ভিজে ওঠার কোন কারণ খুঁজে পান না।
সারাদিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ভেসে ওঠে প্রীতিলতার মুখ। তার ভেতরটা একটু একটু করে টলতে থাকে। গুণ গুণ করে, মায়ার সুর, প্রেমের সুর। তিনি অপেক্ষা করেন কখন দশটা বাজবে। কখন অবসর হয়ে তিনি কথা বলতে পারবেন প্রীতিলতার সাথে।
রাত দশটার পর তিনি বসে থাকেন অপেক্ষায়।
-তুমি আছো?
-তুমি আছো?
এসএমএস সিন হয় না তার। তার বেশ খারাপ লাগতে থাকে। বেশ কিছুদিন পর তিনি ভদকার বোতল খুলে বসেন। রাত বারোটার পর প্রীতিলতা কথা বলে।
-আচ্ছা, চল্লিশটা ঘুমের ঔষধে ঠিক কত ঘন্টা পর একজন মানুষের মৃত্যু হবে?
চমকে উঠলেন হাবীব সাহেব। তার নেশা ধরানো চোখে হঠাৎ করেই নেশা কেটে যায়।
-এত রাতে মজা করছো প্রীতি?
-এম্নি জিজ্ঞেস করছি। বলুন না।
-এটা ডিপেন্ড করে ট্রিটমেন্টের উপর! কে কত তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট পায়। এখন বলো এসব কৌতুক করছো কেন?
- আমি চল্লিশটা ঘুমের ঔষধ কালেক্ট করেছি।
তিনি ভয়াবহ চমকে ওঠেন।
-প্লিজ প্রীতি এসব করবে না তুমি। প্লিজ। প্লিজ।
-আপনার সাথে আমার চ্যাট লিস্ট মুছে দিচ্ছি। আপনিও মুছে দিবেন।
হাবীব সাহেবের খুব রাগ হয়ে যায়।
-আমি আমার চ্যাট লিস্ট কি করবো না করবো সেটা আমার ব্যাপার। তোমাকে এ নিয়ে ভাবতে হবে না।
-আচ্ছা, বাই।
রাগ করে তিনি ফেসবুক থেকে লগ আউট হয়ে যান। সাধারণত তিনি বাসায় যতক্ষণ থাকেন ততক্ষণ তিনি অনলাইনে থাকেন।
পরের দিনটা হাবীব সাহেবের মনটা খচখচ করেই যায়। তার অনেকদিনের রুটিন এলোমেলো হয়ে যায়। তিনি রেওয়াজ না করেই ভদকার বোতল নিয়ে বসেন। তার মন বলে তিনি ফেসবুক খুললে যথারীতি আগের মতো প্রীতিলতাকে দেখবেন। তিনি ঠিক করেন প্রথমে তিনি প্রীতির সাথে কথা বলবেন না। প্রীতি সরি বললেই তিনি কথা বলবেন।
সেদিন রাত দশটারও অনেক পর ফ্রি হয়ে তিনি যখন অনলাইনে আসেন তখন তিনি প্রীতিলতার টাইমলাইনে যান। প্রীতিলতার টাইমলাইনে খুঁটিনাটি পোস্ট দেখেন। তারপর তিনি ওর ফ্যামিলির টাইমলাইন ঘুরে আসেন। সেখানে কেউ একজন লিখেছে, প্লিজ, প্রে ফর প্রীতিলতা!
তিনি স্তব্ধ হয়ে থাকেন অনেকক্ষণ। অনেকদিন তিনি কারো জন্য প্রে করেন না। প্রে শব্দটাতেই তার বিশ্বাস নেই। তবে তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। সে রাত, তার পরের দিন।
তারও পরের দিন আরো ছোট্ট একটা পোস্ট। প্রীতিলতা আর নেই …
তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রীতিলতার চ্যাট লিস্ট মুছে দ্যান। একটা অধ্যায় মুছে ফেলে তার বড় ক্লান্ত লাগে।
No comments:
Post a Comment