বেওয়ারিশ উত্তর
গভীর নৈঃশব্দ হতে উত্থিত, এক অমোঘ কণ্ঠস্বর, বলে ওঠে "
তুমি কে? কে তুমি পথিক? "
নিজের চারণভূমিতে মগ্নতার কোলাহলে
হেঁটে চলেছে পথিক ;
ভীষণ চমকে থমকে দাঁড়ায়!
বুঝতে চেষ্টা করে, কে সে? কার স্বর? সেই বা কে?
মাতাল এক ঘূর্ণি হাওয়ায় পথিক বেওয়ারিশ হেঁটে যেতে
যেতে ভাবলো,
এই দুঃসহ অসময়ে কে তাকে ডাকবে?
না, কেউ তাকে ডাকবে না আর!
নির্বিঘ্ন নিশ্চয়তায় পথিক যেই
পা বাড়াল; আবার ভেসে এল সেই কন্ঠ......
"কই বললে না তো?"
ঘুরে দাঁড়ায় পথিক।
নিরীক্ষার পাঠ শেষে,
রাত্রির অনন্ত নিস্তব্ধতা কন্ঠে
ধারণ করে অবশেষে বলল,
"আমি? অসময়ের ভুল বিবেক! কোন এক শীতে যার শেষ কম্বলটাও পুড়িয়ে
দিয়েছিলে, উষ্ণতার জন্য।"
কৃষ্ণরঙা বিষাদচূড়া
আমার একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিলো-
গাছে একটা ফড়িং ছিলো-
ফড়িংটার লম্বা একটা লেজ ছিলো-
লেজের মাথায় ইতল-বিতল ডানা ছিলো!
ডানার মাঝে গোলপানা এক বিষাদ ছিলো!
তবুও তার চারিপাশে আস্ত একটা আকাশ
ছিলো।
আকাশটা গোলাপি ছিলো-
সেই আস্ত আকাশ ছুঁয়ে দিতাম ফড়িং
ডানায়,
দিগন্তের স্বপ্ন আঁকতাম চোখের
তারায়।
এখন আকাশ আমায় চুপটি দেখে, ছুঁয়ে
যায়, স্বপ্নগুলো উড়ে গেছে অনন্ত অজানায়।
আমার একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিলো!
গাছের ডালে সুতোয় বাঁধা মিষ্টি
একটা বিকেল ছিলো!
এক বিকেলে- বিকেলটাই আকাশবাড়ি পালিয়ে গেলো!
আমার একটা তেঁতুলরঙা দুপুর ছিলো!
একদিন সে ধুলোর পথে হেঁটে গিয়ে
আকাশসীমায় মিলিয়ে গেলো!
তবুও!
আমার একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিলো!
সেই গাছে একটা ফড়িং ছিলো!
ফড়িংটার লম্বা একটা লেজ ছিলো!
লেজের গায়ে ইতল-বিতল ডানা ছিলো!
ডানার মাঝে গোলপানা এক বিষাদ ছিলো!
আমার একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিলো!
কোন এক কৃষ্ণগভীর রাতদুপুরে গাছটি
ওরা কেটে দিলো..
আমার একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিলো!
আমার একটা কৃষ্ণরঙা বিষাদ ছিলো!
আমার কি জানি এক ছিল....?
আমার একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিলো?
গাছের ডালে সুতোয় বাঁধা বিকেল
ছিলো?
সত্যি কি আমার কিছু ছিল?!!
No comments:
Post a Comment