বাঁশি
পাতাওড়া সকালের চোখ নেই বলে—
হাসেরা চুমু খায় পুকুরের গাল; ভেসে থাকা
বকের পালক জানে— প্রিয়
পানকৌড়ি নেই
জলসংসার; জলের
ভেতর পাপ ।
বটপাখির একক লজ্জা— টোকা
দিয়ে যায় জলপোকা;
রোদের পিঁপড়ে খায় চুনোপুটি; অদ্ভুত পদ্ম—
বাড়িয়ে তোলে চরম মুক,
মাছের প্রেম ডাকে ঘরে;
একা সে আড়াল ভাঙে— বুকে শ্যাওলাফুল ।
ছাঁইপাশ
ধুলো ওড়ায়
কেয়াপাতার ছায়া— মোমের শরীর
যায় গলে;
তারপর
লাটিমের অপরাহেৃ বটপাখিরা খুজে নেয় জাহাজের বন্দর—
আর কত কিছু
থেকে যায় অগোছালো; অসুন্দর
।
একা হয়ে যায়
মেঘ— ছোট
সন্ধ্যের মায়াকাল যায় ফুরিয়ে;
পড়ে পাওয়া নদীর
খোলা পিঠে হাওয়াদের চাষ—
দেয়ালের
বৃদ্ধ ঘড়ির নেই চিবুক— মুখর পড়শী; বেওয়ারিশ
রাত;
গল্প যদি
যায় ফুরিয়ে পাখির ঠোঁটে ঘুমায় পাপ...
অপরাহ্ণ
চাঁদের কেও নও তুমি;
তবু তোমার ঘরে চাঁদের হাট—
আকাশের গাছে ঝুলে আছে মৃত পায়রা;
তুমি—
তার মত নিষিদ্ধ ।
হুট তোলা রিকশা তোমাকে নিয়ে দৌড়াবার
আগে ছিল চিল—
দলছুট নদীরা দেখেছে
তুমি কাঁচ ভাঙা শহরের মত
নিড়িয়ে যাচ্ছ পথ;
বেড়ে যায় বুড়োকাকের কান্না ।
লোকাল বাসে কালু মাঝির গান— বনশালিকের
ডাকাডাকি শেষ; তুমি
যাচ্ছ অবসরে....
চড়ুইভাতি
রঙ নেই
দুপুরের—
নেই সংসারী হরিণের পাল;
ঘাসপোকার
পাহারায় অবনত পাটফুল;
তোমাকে
মিথ্যে বলে পাখিরাও হেরে গেছে বনবীথিকায় ।
তুমি পেয়ে
গেলে রোদ বিষয়ক চিল—
বাতাশ
শেখালো ভোঁদৌড়; দৌড়ে
পালায় খড়কুটো;
তোমার উনুনে
কাউনভাতের ওম—
মটরশুটির স্বাদ ।
আমি কাকপাখি—
কবিতা;
পেটে তিন
চৈত্রের ক্ষুধা ।
পুতুলকথা
হতে পারে সে কলমিফুলের পোকা— পরদেশী
বকের
রঙচটা পালক; বিসর্গময়
কিংবা অপাঙক্তেয়,
আমি তাকে ধরি— সরল
সুন্দরের কাঠির মত;
হার মেনে যায় ফুল,
পাখি অথবা চাঁদ ।
ঘরে মেঘের মাস্তুল— বেরঙের
রাখিগুলো বাঁধা চৌকাঠে;
এটো থালা জলের কানামাছি; অদ্ভুত সে— শহুরে
শামুকের
গন্ধ বোঝেনা; কাক
খোঁজে পাড়ায় পাড়ায়...
অদ্ভুত এক আলোর নাম ‘কবিতা’
সন্ধ্যে এলে
ঘুম নামে কবিতার চোখে— কবিতা
ঘুমগ্রস্থ ।
টেবিলে এক
নাগাড়ে বসে রাতভর লিখি কবিতা,
সে জানে; সে জানে
বলেই একটা সাদা কাগজ;
ম্যাটাডোর কলম;
আঁধার
তাড়িয়ে চোখের কাছে রেখে দেয় গরিব হারিকেন ।
মাঝরাতে এক
গেলাস পানি চাইবো; সে
জানে— সে জানে
বলেই
হালকা ঘুমে
চোখ আটকে রাখে আমার দিকেই;
আমি দেখি—
তার মায়ামুখ
থেকেই উড়ে আসে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা ।
পরিচিত জ্বর
জ্বালাতে ভোলেনা আমায়;
নির্ভয় সব কর্তব্য যেন তার’ই—
মাথায়
জলপট্টি; বুকে
সরিষা তেল বিছিয়ে দেয় নরম হাতে,
অমর শান্তি
আর কোথায় পাবো কবিতা ছাড়া—
আমার কবিতা
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেবিকা;
অদ্ভুত এক আলোর নাম ‘কবিতা’।
বুকে আটকে
থাকে কবিতার ছায়া; কবিতার
সংভ্রম—
দুঃখবোধ
মাথা নত করে দেয় আমায়;
জীবিকার অভাবে পুড়ি সময়ের কোলাজে;
ভোরের
কোলাহল লুট হয়ে যায় তার পায়ে— জল
ভেঙে নৌকার বৈঠা তুলে
খুজতে বেরোয়
প্রচ্ছন্ন প্রাপ্তি;
পা থেকে সরে যায় মাটি—
পাওয়াটুকু
তুলে দিয়ে এই শূণ্য হাতে গেয়ে ওঠে স্বস্তির গান ।
সেই কবে
শিখিয়েছে ভালো থাকার পাঠ;
ভালোথাকা গুলো আরো হোক দীর্ঘ—
কবিতাকে
নিয়েই আছি বেশ; কবিতাই
দিয়েছে এই চাঁদের মত জীবন ।
No comments:
Post a Comment