22 August 2017

জাহাঙ্গীর হোসেন বাদশাহ



বাঁশি
পাতাওড়া সকালের চোখ নেই বলে
হাসেরা চুমু খায় পুকুরের গাল; ভেসে থাকা
বকের পালক জানে প্রিয় পানকৌড়ি নেই
জলসংসার; জলের ভেতর পাপ ।

বটপাখির একক লজ্জা টোকা দিয়ে যায় জলপোকা;
রোদের পিঁপড়ে খায় চুনোপুটি; অদ্ভুত পদ্ম
বাড়িয়ে তোলে চরম মুক, মাছের প্রেম ডাকে ঘরে;
একা সে আড়াল ভাঙে  বুকে শ্যাওলাফুল ।


ছাঁইপাশ
ধুলো ওড়ায় কেয়াপাতার ছায়া মোমের শরীর যায় গলে;
তারপর লাটিমের অপরাহেৃ বটপাখিরা খুজে নেয় জাহাজের বন্দর
আর কত কিছু থেকে যায় অগোছালো; অসুন্দর ।

একা হয়ে যায় মেঘ ছোট সন্ধ্যের মায়াকাল যায় ফুরিয়ে;
পড়ে পাওয়া নদীর খোলা পিঠে হাওয়াদের চাষ
দেয়ালের বৃদ্ধ ঘড়ির নেই চিবুক  মুখর পড়শী; বেওয়ারিশ রাত;
গল্প যদি যায় ফুরিয়ে পাখির ঠোঁটে ঘুমায় পাপ...


 

অপরাহ্ণ
চাঁদের কেও নও তুমি;
তবু তোমার ঘরে চাঁদের হাট
আকাশের গাছে ঝুলে আছে মৃত পায়রা;
তুমি  তার মত নিষিদ্ধ ।

হুট তোলা রিকশা তোমাকে নিয়ে দৌড়াবার
আগে ছিল চিল  দলছুট নদীরা দেখেছে
তুমি কাঁচ ভাঙা শহরের মত
নিড়িয়ে যাচ্ছ পথ; বেড়ে যায় বুড়োকাকের কান্না ।

লোকাল বাসে কালু মাঝির গান  বনশালিকের
ডাকাডাকি শেষ; তুমি যাচ্ছ অবসরে....



চড়ুইভাতি
রঙ নেই দুপুরের  নেই সংসারী হরিণের পাল;
ঘাসপোকার পাহারায় অবনত পাটফুল;
তোমাকে মিথ্যে বলে পাখিরাও হেরে গেছে বনবীথিকায় ।

তুমি পেয়ে গেলে রোদ বিষয়ক চিল
বাতাশ শেখালো ভোঁদৌড়; দৌড়ে পালায় খড়কুটো;
তোমার উনুনে কাউনভাতের ওম  মটরশুটির স্বাদ ।

আমি কাকপাখি  কবিতা;
পেটে তিন চৈত্রের ক্ষুধা ।


পুতুলকথা
হতে পারে সে কলমিফুলের পোকা পরদেশী বকের
রঙচটা পালক; বিসর্গময় কিংবা অপাঙক্তেয়,
আমি তাকে ধরি সরল সুন্দরের কাঠির মত;
হার মেনে যায় ফুল, পাখি অথবা চাঁদ ।

ঘরে মেঘের মাস্তুল বেরঙের রাখিগুলো বাঁধা চৌকাঠে;
এটো থালা জলের কানামাছি; অদ্ভুত সে শহুরে শামুকের
গন্ধ বোঝেনা; কাক খোঁজে পাড়ায় পাড়ায়...



অদ্ভুত এক আলোর নাম কবিতা
সন্ধ্যে এলে ঘুম নামে কবিতার চোখে কবিতা ঘুমগ্রস্থ ।
টেবিলে এক নাগাড়ে বসে রাতভর লিখি কবিতা,
সে জানে; সে জানে বলেই একটা সাদা কাগজ; ম্যাটাডোর কলম;
আঁধার তাড়িয়ে চোখের কাছে রেখে দেয় গরিব হারিকেন ।
মাঝরাতে এক গেলাস পানি চাইবো; সে জানে সে জানে বলেই
হালকা ঘুমে চোখ আটকে রাখে আমার দিকেই; আমি দেখি
তার মায়ামুখ থেকেই উড়ে  আসে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা ।

পরিচিত জ্বর জ্বালাতে ভোলেনা আমায়; নির্ভয় সব কর্তব্য যেন তার
মাথায় জলপট্টি; বুকে সরিষা তেল বিছিয়ে দেয় নরম হাতে,
অমর শান্তি আর কোথায় পাবো কবিতা ছাড়া
আমার কবিতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেবিকা; অদ্ভুত এক আলোর নাম কবিতা

বুকে আটকে থাকে কবিতার ছায়া; কবিতার সংভ্রম
দুঃখবোধ মাথা নত করে দেয় আমায়; জীবিকার অভাবে পুড়ি সময়ের কোলাজে;
ভোরের কোলাহল লুট হয়ে যায় তার পায়ে জল ভেঙে নৌকার বৈঠা তুলে
খুজতে বেরোয় প্রচ্ছন্ন প্রাপ্তি; পা থেকে সরে যায় মাটি
পাওয়াটুকু তুলে দিয়ে এই শূণ্য হাতে গেয়ে ওঠে স্বস্তির গান ।

সেই কবে শিখিয়েছে ভালো থাকার পাঠ; ভালোথাকা গুলো আরো হোক দীর্ঘ
কবিতাকে নিয়েই আছি বেশ; কবিতাই দিয়েছে এই চাঁদের মত জীবন 

No comments:

Post a Comment