25 January 2017

আকিব শিকদার



সুখ অসুখ
আকাশচুম্বী এক প্রশ্নবোধক এঁকে দিয়ে তুমি
শুধালে আমায়- ‘ভালো আছো?’
আকাশপাতাল আশ্চর্যবোধক নিয়েই
বললাম- ‘মুখ দেখে তুমি কী বুঝেছ!’


দুঃখকে তুলে দিয়ে সুখের হাতে হাসলে তুমি-
‘মুখ কি মনের আয়না?’
ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলাম কপালের চুল আমি-
‘চোখে চোখ রেখে বলো কিছু কি বুঝলে না?’

এবার তোমার হাসি থেমে হলো ম্রিয়মাণ-
‘কেন এত কষ্ট পুষে রাখো কপালের ভাঁজে আর বুকে?’
মাথা নিচু হয়ে এলো আমার অজ্ঞাত বেদনায়-
‘তোমার হাতের পোড়া দাগ দিচ্ছে বলে তুমি নেই সুখে।’




পা
আমি তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে
কাঁচ পেরুনো দৃষ্টি নিয়ে-ওর দিকে
চৌরাস্তার মোড়ে যেখানে প্রচন্ড যান্ত্রিক ভিড়।

জানালার শার্শিতে তখন একটা চড়ুই ডাকছিল
একা একা নাচছিল আর ডাকছিল
কারও প্রতীক্ষা বুঝি।
হঠাৎ আকাশচেরা শব্দ-
নক্ষত্র কাঁপানো বিকট শব্দ
চড়ুই পাখিটা আচমকা কেঁপে উঠলো
পাখা ঝাপটে চিৎপটাং কেঁপে উঠলো-
তারপর ভয়ার্ত উড়ে গেল ঐ দিকে
উঁচু দালানের আড়ালে, ঐ দিকে।

আমি দেখলাম চৌরাস্তার ভিড়ে-
অজস্র মানুষের নিদারুণ ভিড়ে
দাউ দাউ জ্বলছে আগুন
আর বনপোড়া হরিণের মতো ছুটছে মানুষ
শহরের সমগ্র মানুষ-
যেন সমুদ্র ঊর্মি অসম্ভব বেগে আন্দোলিত।

প্রচণ্ড সে বোমার বিস্ফোরণে
ওর একটা পা ছিটকে এল-
উরু বরাবর থেতলে ছিটকে এল
দোতলার জানালার কার্নিশে
আমার ঝুল বারান্দার জানালার কার্নিশে।

ওহ, কী বীভৎস
টপটপে তাজা রক্ত কী বীভৎস-
জানালার কাঁচ বেয়ে ঝরছিল
আমি আর কিছু বলতে পারি না। 

______________________

No comments:

Post a Comment