আক্ষেপ
আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন জনাব?
হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি!
শুনেছি আপনি নাকি অন্তর্যামী!
কী বলবো তাই, প্রতিদিন ভাবি!
অথচ,
অনেক কথাই জমা পড়ে থাকে দিনান্তে;
অনেক অভিযোগ,
অভিমান আর দীর্ঘশ্বাসও জমিয়ে রাখি আপনার জন্য!
না না, আপনার জন্য নয়;
আমার নিজের জন্যই জমিয়ে রাখা,
আর মাঝে মাঝে আপনাকে সাক্ষী মানা,
এই আর কি।
শুনেছি, আপনিই নাকি অন্তর্যামী!
জানেন তো,
আজকাল, নিজের পা দু'টো বড্ড অবশ হয়ে আসে!
উঠে দাঁড়াতে পারিনা!
চোখের সামনে এতো দুর্দশা আর দৈন্যদশা
উঠে দাঁড়াতে দেয় না আমায়।
বড্ড ভালোবাসে কিনা আমায়;
তাই হয়তো ছাড়তে পারে না।
আপনাকে তখন স্মরণ করে ফেলি বিস্মরণে
আর কি!
দুঃখিত জনাব,
সময়ে অসময়ে বড্ড জ্বালাতন করি
আপনাকে অযথাই।
আসলে একটু বেশিই একা কিনা,
তাই আর কি
যদিও জানি…
শুনেছি, আপনি নাকি অন্তর্যামী!
দেখে থাকবেন হয়তো,
যদিও সময় পেয়েছেন কিনা দেখার
জানি না;
প্রায়ই আপনার চরণে সবকিছুই সমর্পিত
করি
কিন্তু বিস্মরণ কেটে গেলেই মনে
পড়ে যায়,
আপনার আর সময় কোথায়
আমার মতোন দুর্ভাগার কর্মের দায় নেয়ার!
আপনি তো ব্যস্ত থাকেন
সর্বদা টুংটাং গুঞ্জণের অধিকারীদের নিয়ে কারবারে।
প্রায়ই ভাবি,
আপনি একটু বেশিই একচোখা কিনা!
তাই তো আপনি ওদেরই ঈশ্বর!
আর আমার কাছে, শোনা কথায়
আপনি নাকি অন্তর্যামী!
নিঃসঙ্গ আমি এবং
কবিতা শহরের কাক
তোমার কবিতার শহরের কিছু কাক প্রায়ই
এসে বসে আমার নিঃসঙ্গ এপিটাফে;
গল্প বলে তোমার লেখা অজস্র শব্দের
বুনুনির।
অথচ, কোনোদিনও কাকগুলো বলেনা
তুমি আছো কেমন!
যদিও আমি জানি,
শব্দের আঁকিবুঁকি নিয়ে তুমি বেশ
আছো তোমার কবিতার শহরে!
তাই তোমার কবিতার উচ্ছিদ্যমান
শব্দভাণ্ডারে আমার ফেলে আসা স্মৃতিকথা খুঁজি,
তোমার শহরের উচ্ছিষ্ট পরিষ্কারককে
প্রায়ই নিমন্ত্রিত করি,
আমার নিঃসঙ্গ আকাশ জুড়ে উড়াউড়ি
করতে।
অথচ, আমার আকাশে কখনো কোনো শঙ্খচিল উড়ে না;
তোমার কবিতার আকাশের অসংখ্য প্রজাতির
পাখি থেকে শুধু
কিছু শহুরে নির্মমতাদর্শী কাক আসে।
আমি অবাক হই!
তবুও ভাবি অশুভ বলো বলেই হয়তো,
কবিতা শহরের কাকগুলো নিঃসঙ্গ এপিটাফ খুঁজে
ফিরে।
আমার এপিটাফের খাঁজে কাকগুলো তোমার
উচ্ছিষ্ট শব্দ জমায়,
আর আমি সেই শব্দগুলো সাজিয়ে রাখি;
কখনো যদি খোঁজ নিতে আসো আমার সমাধিতে,
প্রস্তর খণ্ড সরিয়ে কাকগুলো তোমাকে
নতুন শব্দের সন্ধান দেবে।
যা তোমারই উচ্ছিষ্টে সাজানো কিছু
চিরন্তন কাব্যিক শব্দ!
No comments:
Post a Comment