থিওডর হার্জেলর জায়নিসম তত্তের মুল কথা হচ্ছে ইজরাইলি জাতি গোষ্ঠীর দারা ইশবর প্রদত্ত কেনান অঞ্চলে একটি ইহুদি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যেখানে শুধুমাত্র ইজরাইলি মানে ইহুদিরাই থাকতে পারবে।এজন্য প্রত্যক ব্যক্তিকে পিওর ব্লাডের অধিকারি হতে হবে। তার মানে দাঁড়ায় পিতা ইজরাইলি কিনা বড় কথা নয় মাকে অবশ্যই ইজরাইলি হতে হবে।
এই জন্য ইজরাইলি পুরুষদের অ-ইজরাইলি মেয়ে বিয়ে করা নিষিদ্ধ কারন পিতা ইজরাইলি কিন্তু অইজরাইলে মায়ের গর্ভে যে সন্তান জন্ম নেয় তাকে তারা ইজরাইলি বলে স্বীকার করে না। সেখানে পিওর ব্লাড নেই জায়নিস্টরা এমনটাই মনে করেন। এখন মুল প্রসঙ্গে বলি পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের ধারনা ইজরাইলি মানেই হচ্ছে ইহুদি আমি এমন ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করি। ইজরাইলি বংশধর হতে গেলে আপনাকে ইহুদি হতে হবে এমন যুক্তি অচল। পৃথিবীর যেকোন ব্যক্তিই ইজরাইলি হতে পারে কিন্তু সে হতে পারে মুসলিম কিংবা খ্রিষ্টান অথবা অন্যকিছু। যেমনটা হতে পারি আমি নিজেই কিংবা আপনিও এবার আমরা দেখব আমরা ইহুদি না হয়েও কিভাবে ইজরাইলি হতে পারি। ইজরাইলি কোন ধর্মের নাম নয় এটি হচ্ছে একটি বংশধারা যার উত্পত্তি প্রাতিষ্ঠানিক জুদায়িজমের অনেক পূর্বে।
ইজরাইল জাতির উত্পত্তি ও তার বহু পরে এই জাতির মধ্যেই যিশু (আঃ) এর জন্ম।তিনি ইজরাইলিদের মাঝে আল্লাহ নির্ধারিত ধর্মের শিক্ষা দেওয়া শুরু করলে ইজরাইলিরা বেশিরভাগই তার কথা শোনেননি। কিন্তু এই ইজরাইলিদের অনেকে আবার তার অনুসারী হয়েছিলেন।যার মধ্যে তার ১২জন সহচরের কথা অনেকেই জানি। নবি ঈসা তার জীবদ্দশায় শুধু মাত্র ইজরাইলিদের গোত্র ছাড়া আর অন্য কোন জাতির মাঝে যে ধর্ম প্রচার করেননি তা বহু আগেই প্রমানিত।তার অনুসারিরা এখন খ্রিস্টান নামে বিশ্বের বৃহৎ ধর্মীয় গোষ্ঠী যা প্রচার পেয়েছে ঈসার ইন্তেকালের পর রোমকদের দারা।
রোমানরা কেউ ইজরাইলি ছিলেন না।কিন্তু যেসব লোক ইসার হাত ধরে সেদিন ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে ইসার অনুসারী হয়েছিলেন তাদের বংশধররা কি আজ পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে? আবার ইউরোপে ইহুদিরা বাস করছিলেন তখনও অনেকে উগ্র খ্রিস্টানদের হাত থেকে বাঁচতে খ্রিস্টান হয়ে গিয়েছিল যেমন প্রখ্যাত জার্মান দার্শনিক সমাজতন্ত্রের জনক কার্ল মার্ক্সের দাদা ইহুদি ছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে খ্রিস্টান হয়েছিলেন কার্ল মার্ক্সসের বংশধররা নিশ্চয়ই এখনো সবাই খ্রিস্টান। এখন খ্রিস্টান অথচ ইহুদি নয় কিন্তু ইজরাইলি এই সব মানুষ কি এখন ইজরাইলে যেতে পারবে?
জায়নিস্টরা যদি প্রশ্ন তুলে পিতা ইজরাইলি হলেই হবেনা পিওর ব্লাডের জন্য মাকে ইজরাইলি হতে হবে তাহলে জায়নিস্টরা কি এমনটা প্রমাণ করতে পারবে যে ইসা (আঃ) এর হাতে ইজরাইলি নারীরা ধর্ম গ্রহন করেননি? সুতরাং জায়নিস্ট মতবাদ অনুসারে এই সব নারীর সন্তানেরা পিওর ব্লাডধারী মানে তারা ইজরাইলি বংশধর হিসাবে ইজরাইলে গিয়ে বাস করতে পারবে। কিন্তু জায়নিস্টরা ইজরাইলের পাশাপাশি ইহুদিবাদের কথা বলছে এতে করে পিওর ব্লাডের ধারনা ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
আবার একই ভাবে ইসলামের প্রসার পর্বে অনেক ইজরাইলি ইহুদি আরব অঞ্চলে বাস করত।তারা অনেকেই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর হাতে অথবা তার ইন্তেকালের পরও অনেক ইহুদি মুসলিম হয়ে ছিল তাদের বংশধররা এখনও মুসলিম যদি জায়নিস্টদের পিওর ব্লাড তত্তই ঠিক ধরা হয় তাহলে দেখা যাবে এইসব ইজরাইলি অথচ মুসলমান অথবা খ্রিস্টান তারাও ইজরাইল রাস্ট্রে বসত করার অধিকার রাখে। তাহলে মুলত ইস্রাইল রাস্ট্র কার দাড়াচ্ছে পিওর ব্লাডধারীদের না ইহুদিদের। মোদ্দা কথা হচ্চে ইহুদি বাদ ও ইস্রাইল জাতি গোষ্ঠীকে এক অর্থে মিলিয়ে প্যালেস্টাইন ভূমিতে নিরীহ প্যালেস্টাইনিদের বাড়ী, ঘর, ক্ষেত, জমি দখল করে জুলুম চালিয়ে নিরীহ শিশু নারী বৃদ্ধকে মেরে ইজরাইল নাম দিয়ে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইউরোপ আমেরিকার ভন্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়।যদি পিওর ব্লাডিজম ঠিক রেখে ইজরাইল রাষ্ট্র হয় তাহলে রাষ্ট্র ইজরাইল যে শুধু মাত্র ইহুদিদের হবেনা তার জন্য বহু যুক্তি দেখানো যেতে পারে। যারা ইয়াকুব নবির বংশধর তারা সকলেই এই রাষ্ট্রের নাগরিক হতে পারবে। এমনো তো হতে পারে আজকের প্যালেস্টাইনবাসিরাও ইজরাইলি বংশধর। কারন জেরুজালেমে অনেক অধিবাসি যারা খ্রিস্টান ছিলেন পরবর্তীতে তারা ইসলাম আসার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে।
তাদের বংশধররাই তো সেখানে বাস করছে। পিওর ব্লাড আর ইজরাইলিই যদি বড় পরিচয় হয় তাহলে নিশ্চয়ই এই সব প্যালেস্টাইন বাসি ইজরাইল রাষ্ট্রের অধিবাসি হলে কারো অসুবিধা থাকার কথা নয়। সব কিছু মিলিয়ে আজকের জায়নিস্ট ইজরাইল তো প্যালেস্টাইনের সম্পদেই গড়া।
No comments:
Post a Comment