□▫□
অনেকদিন পর শ্যামু একটি লাল শাড়ি পড়েছে, কপালে
লাল টিপ। বুকের উপর লাল ব্লাউজ,যখন এইমাত্র সূর্য ছাদে এসে দেয়ালে
মানচিত্র আঁকে শ্যামুর লাল
শাড়িতে মানচিত্র সাজতে থাকে। এখানে কোন কাঁটাতার বাসা বাঁধে না, রেডলাইট সিগনাল নেই, ব্যারিকেডের কোন
আওয়াজ নেই। আছে শুধু বাতাসের কাই মাখা ছান্দিক
মিছিল, এরপর অনেক অনেক লাল চুড়ির শব্দ, হাতের উপর গ্রাফিতির রংধনু। এবার
শ্যামু তাঁর কোমরের উপর ট্যাটু আঁকে, সেই ট্যাটু
নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ডাংগুলির খুঁজে।তাঁর প্রিয় ঘাসের উপর যেখানে শঙ্খনদী এসে প্রতিরাতে আদর করে যায়।
তখন অমাবস্যা ছিলো, ডাঙ্গুলিটি হারিয়ে গিয়েছিলো ঘাসের ভেতর...
□▫□▫□
শ্যামু গতকাল সারারাত রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়েছিলো। সখি
ভাবনা কাহারে বলে, গানের সাথে তার লাল ঠোঁটে ঘাম জমে গেছিলো। ভোর রাতে জ্যামস
এর পদ্ম পাতার জল যখন তার চুলে গড়িয়ে পড়ে রাতের ঘাসেরা নীল জোনাকিদের নিয়ে এস্রাজ শুনছিলো।
জোনাকিরা এসেছিলো মায়ের ভালোবাসা নিয়ে, মায়ের
মেয়েকে দেখতে। শ্যামুর এখন
পরীক্ষা চলছে, আজ সারারাত
পড়বে। পড়ার সময় তার টেবিলে হলুদ গাঁদা ফুলের মালা ঝুলে থাকে, গাঁদা'র গন্ধে হোস্টেলের দারোয়ান
ঘুমাতে পারে না। প্রতিরাতে হল
সুপার ম্যামের কাছে কমপ্লেইন আসে। শ্যামু কিছু বলে
না আরো বেশি করে হলুদ গাঁদা নিয়ে আনে। পুরো হলজুড়ে
হইচই পড়ে যায়। জোনাকিরা এবার
এস্রাজ বাজাতে থাকে, টেবিল থেকে বেয়ে
বেয়ে বারান্দায় আসে এরপর লাফ দেয়। ইতিমধ্যে
কনসার্ট শুরু হয়ে যায়, জ্যামস এখন লাইভে গান গায়। সবাই
মাঠে জড়ো হয়েছে, ওখানে একটাও হলুদ
গাঁদা নেই। শ্যামু ঘুম থেকে উঠে দেখে তার রুমের দেয়ালে একটি হলুদ গাঁদার
গ্রাফিতি।
□▫□▫□▫□
শ্যামু সরিষার টিপ
নিয়ে বুদ্ধের সামনে বসে আছে। প্রচন্ড বৃষ্টির রাত বাতাস বজ্রপাত। শ্যামু একসময়
বজ্রপাতকে খুব ভয় পেতো। বিজলি চমকালেই সে মায়ের বুকে মুখ লুকাতো।
□▫□▫□▫□▫□
শ্যামু বেশির ভাগ টি
শার্ট আর জিন্স পড়ে থাকে, একদিন
হোস্টেল সুপার ম্যাডাম এসে ধমকালো। শ্যামুর মন খারাপ হয়ে গেল আর তখন সে ওয়াশরুমে
গিয়ে গায়ে পানি ঢালতে থাকে ক্রমাগত। এরপর সন্ধ্যা হয়ে যায়, ভেজা টি-শার্ট আর জিন্স সহ তার শরীরটাকে বারান্দায় দাঁড়ায়। গোধূলি তখন
আকাশে।
No comments:
Post a Comment