There
is nothing like a coincidence in this world... Some people say...
is that word coincidence mean anything new or special?
ভুমিকাহীন একটি বিন্দুর মতো বহুদিন পড়ে
থাকার পর ক্রমিকানুযায়ী শ্বাস, খাদ্য আর যাবতীয় পার্থিব সব কার্যকারণ বোঝাই করে
চোখ মেলে তাকানোর পর সে এক পৃথিবী হল। সাথে সাথে নূহ'এর
নৌকো থেকে আগত ভীতিরা ভর করে অলিন্দ-নিলয়ে। শীত মেঘের গায়ে ব্যাপক রোদের অসুখ বলেই দাবানলে সৃষ্ট
ছাই উড়তে শুরু করতেই পরিযায়ী মনোবৃত্তি- বিহঙ্গ রূপ পায়। বুকের প্রকোষ্ঠ খুলে ছেলেবেলা
থেকে হাঁটতে শুরু করার পর বুঝেছি আকাশের অসীমতা বোঝার ক্ষেত্রে কি নগণ্য এক মানব
জীবন…
যতখানি পাপ বোঝাই হবার পর মৃত সমূদ্র হারায় ডোবানোর
ক্ষমতা, ততটুকু ঔদার্যের স্বত্ব নাকি অদৃশ্য বিধাতা একাই অধিকার করে আছেন?
আমি বুঝি পার্থক্যহীন আলিফ আর ওঁম ঋদ্ধ হয়ে যাবার পরেই মরুভূমিতে
ফোটে এক আশ্চর্য কাষ্ঠল পুষ্প। তখনি প্রসব বেদনায় ছটফটে তরুণী নাভীমূলে হাতড়ে
বেড়ায় ঐশ্বরিক মরিয়ম ফুল নামক কোন অলীক বিশ্বাস।
এযাবৎ বিষে বাসনায় তীর্যক হয়েছে উদভ্রান্তকাল। যদিও বিবেচনা, বিনয় বা
বিনম্রতায় আমার ঘরে নিয়মিত রয়েছে ব্রত উপবাস; সেও এক
উপাসনারই নাম। খালি চোখে লালের সংক্রমন যা তীব্র রক্তবর্ণ - তাই সুস্পষ্ট হয় যাপন
কালের প্রচ্ছন্ন আয়নায়।
উপেক্ষারা যখন আগুনের আঁচে জ্বলে যাচ্ছিল চতুর্মাত্রায়-
গোচরে বা অগোচরে,
সুবিবেচনায়; তখনই অনিবার্য হয়েছে দ্রোহ।
কাঙ্খা বা মনে পড়া সুগন্ধটুকু/ সুগন্ধগুলো ভুলে গেছি ভাবতেই মনে পড়ে যায় উদগ্র
ভাবসমগ্র ও ভাষাদের, যাদের আশ্রয় করে বদলে দিয়েছিলাম
ঈশ্বরের নাম, ঠিকানা এবং জপমালা। যাপন বেলার
সায়াহ্নকৃত্য শেষে বুঝেছিলাম নিজের জন্যও আর অবশিষ্ট নেই সামান্যতম প্রীতির
লেশমাত্র।
তাই তো পুজোয় খাদ থাকেনি, থাকেনি চাওয়া বা পাওয়ার
আকাঙ্খাতেও। তথাপিও টললেন বিধাতা; এইসব ভাবনাদের ভুল
প্রমানেই উপনীত হলেন যে প্রভু, তাকে দেখে চমকে উঠেছি,
সে নিজেরই হুবহু প্রচ্ছায়া যা দর্পণে প্রকট হতে পারেনি একবারের
জন্যও বিগত জীবনে।
বুঝলাম, মানুষ কখনোই ঈশ্বর হতে পারেনা। তবু
নিজেকে কোন ভাষায়, ভঙ্গিতে স্বান্তনা দিই? যে জীবন কেটে গেছে তার বিদায়ের সিঁড়ি জুড়ে ছিলো বিছানো নিকষ অন্ধকার,
আর উপকূল বিস্তীর্ণ নোনাজল ও আর্দ্র হাওয়া।
যা কিছু প্রশান্তি ভেবে বুকে মুখ গুঁজে পড়ে আছি সে কি ছুঁয়েছিল
কোন জারুল অথবা কেওড়ার নাভীমধ্য সুগন্ধ? মনে পড়ে অন্ধকার এক ঘর অথবা গর্ভ
নামক প্রত্যঙ্গ বিশেষ, যেখানে স্থাপিত হয়েছিল মায়ের সাথে
প্রথম
বিনিময় ও আদান প্রদান। তারপরে চোখ, নাক,
মুখ হলেই জন্মে গিয়ে নাড়ী ও নাভী চক্র বিচ্ছিন্ন হলো, সাথে আমিও যে ওই শরীরের আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা সন্তান নামধারী এক জীব।
নাড়ী বিচ্ছিন্ন হলেই বিচ্ছিন্ন হয় মা। বেড়ে উঠলেই গর্ভ
ভুলে যায় সন্তান। তেমনি,
জেনে ও শুনে আসা বিজ্ঞমত বলে, প্রেম ও
রতি শেখার পর প্রেমিকও বিচ্ছিন্ন করে চলে যায় প্রেমিকার আঁকড়ে রাখা হাত। এইখানে
এসে নিরলসভাবে খুঁজতে থাকি একটি ব্যাতিক্রম আখ্যানশৈলী, অবিচ্ছেদ্য
কোন প্রেমকাব্যকথা। পথের ঠিক এই বাঁকে এসেই আবার প্রমাণ হয়, coincidence সচরাচর মানবজীবনে ঘটে না।
এইরকম অনেক অনেক গল্পের শেষে একদিন- নিজেকে মানুষ ভাবার
প্রথম প্রহর মাত্রে যেই রেটিনায় দর্পণ সম প্রস্ফুটিত হল অবয়ব; তার
সম্মুখে দাঁড়াতেই দেখতে পেলাম, সেখানে দীর্ঘ ছায়া সমেত এক
লেজ গুটোনো রোঁয়া ওঠা কুকুরের মুখ থেকে ঝুলে থাকা লালাঝরা জিভ। সেখান থেকে টপটপ
ঝরে পড়ছে ষড় রিপু ও দ্বিগুণত্বে থোকাথোকা লোভ।
নিজের সামনে যদি নতজানু হতে শিখি, তাহলেই
বেরিয়ে আসবে আভ্যন্তরীণ শ্বাপদ। দেখবে ললাটের ঠিক নিচে হায়েনার চোখের মত জ্বলছে
দুই রেডিয়াম ফ্যাক্টরি...উপলব্ধির এ পর্যায়ে ফের একবার চাঁদের গায়ে ছুঁড়ে দেই আপামর
দ্বীর্ঘশ্বাসের ছেঁড়া কাঁথা। মানুষ তার সীমার বাইরে যাবার সামর্থ্য রাখে না,
পারে না বন্ধ ঘরে একাকী নিজের সামনেও নতজানু হতে। সেখানেও তার 'ইগো' নামক বস্তু 'ইজম'
এর ন্যায় দর্পভরে কটাক্ষ করে নিজেকেই।
আর তাই মানুষ আর কখনোই ঈশ্বর হতে পারেনি এখানে, ধুলো মাটি অধ্যুষিত
পৃথিবী নামক গ্রহে, এক আশ্চর্যের কারখানায়। যা
ব্যতিব্যস্ত ও দুষিত; ফাঁপা ও উন্মুক্ত ছাদের মতন আকাশ ও
রহস্যাবৃত পাতাল সম্বৃদ্ধ বিশাল ছায়াপথের বিন্দুসম অস্তিত্বে।
এতোসব ভাবতে ভাবতেই দিন আর রাতগুলো আলোকবর্ষের মতো
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে যায়। যাপনসমগ্র কেমন পলকেই কেটে যায় যেন ক্ষুদ্র পল, মিলি ও মাইক্রো
সেকেন্ড। শূন্য শূন্য সব, অনন্ত শূন্যতার আখড়া। শ্বাসে
বুকে মাথায় পৃথিবীর ওজনের চাইতেও ভারী কিছু চেপে থাকে।
যেন চলছেনা আর কিছুই, কালব্যপী স্থির তথাপি তাকিয়ে
থাকা চোখে কোন দৃশ্য ধরা পড়েনা, কিছুই দেখিনা। অনেক
চেষ্টার পরও একটিও ভাবনা নেই, মন ও মস্তিষ্ক ভুলে গেছে
সচল ক্রিয়া বৈশিষ্ট্য। চারপাশের এতো এতো কোলাহল, তীক্ষ্ণ
শব্দে কেবল হৃদপিণ্ড চমকে উঠে থমকে যাওয়া ছাড়া আর কোন অভিব্যক্তি নেই। এই আমিই
মানুষ নাকি দানব তারও অনুভব নেই। ক্ষুধা নেই, তৃষ্ণা নেই,
ঘুম নেই, হাঁটা নেই, চলা নেই, কথাও নেই। বলি না, শুনি না- কেবল শ্বাসকষ্ট তীব্র থেকে তীব্রতর হবার কিছুক্ষণ পরে
নিয়মানুযায়ী জ্ঞান হারানো।
নিজের কাছেই আবার প্রমাণিত হয়, আদতে মানুষ
ঈশ্বর হতে পারেনি, পারেনা বা সম্ভবপর ও না। এক অদৃশ্য
কিম্বা অলীক অস্তিত্বকে হয়তো অজ্ঞান ও অন্ধবিশ্বাসে ঠাঁই দেয়া সম্ভব, কিন্তু তার স্বরূপ ধারণে পারঙ্গম নয়। কারণ মানুষ অনুকরণ ব্যাতীত অদৃশ্য
কিছুর রূপদানে অক্ষম ছিল, আছে, থাকবে।