22 April 2018
গুচ্ছ কবিতা—পরিতোষ হালদার
সংখ্যা
মেয়েটি সংখ্যার মতো, কেবল নাচে-নাচে...
আমি নয় বললে, ও বৃহস্পতি; ছয়ে বসন্ত;
সাতে জল;
পাঁচ বললে ওর হাতে তীর-ধনুক— কেবল আমাকেই বিদ্ধ করে।
মেয়েটি প্রমিক প্রেমিক
বউবউ
চাঁদপাথর
দুইয়ে এসে আমি এপক্ষ—ওপক্ষ করে ওকেই খুঁজি।
মেয়েটি রেললাইন, নিঃসঙ্গ। আট বললে
সে প্রতিজ্ঞার মতো।
তিনে সে অশ্রু।
তার শরীর কিছু ম্যাজিকফুল; ফুটতে জানে,
ফাটতে জানে।
চারে সে শব্দ-প্রথম বিন্দুচিহ্ন।
মেয়েটি পুরুষ। আমার শূন্যতা নিয়ে ওকে
দিগন্ত দেখাতে চাই...
মেয়েটি কি যাবে!
গুচ্ছ কবিতা—রিয়াজ মাহমুদ
বেশহুরিক
পৃথিবীর অদ্ভুততম গ্রামের সিন্ডিকেটে ঢুকে যাচ্ছি।
পদাতিক প্রহরী—
ক্যাপে স্যালুট লুকিয়ে অপেক্ষা করছে
কখন আসবে সা'ব...
বাংলোর দরোজা খুলে, ঢুকে পড়বে
উলঙ্গ মদের বোতল রগড়াতে রগড়াতে
ছিপি খুললেই দেখা যায় যার নদীর উপর
আকাশের ছাউনি, রূপকথার চৌত্রিশ রজনী
গল্পের শাবল নিয়ে বসে আছে সে-তৎপর নিড়ানি।
স্কন্ধের ফেরেশতা, ও জানের জিগারেরা,
লেখো, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।’
আমি পড়ছি, 'ইকরা...'
সৃষ্টিকর্তার যাবতীয় সৃষ্টির প্রতি,
আমি পড়ছি 'ক্বুল!'
যখনই ইশারা করল তাঁর তর্জনী
তেরো কলস জ্যোৎস্না ভেজা জলে
আমি তুরুপ ফেলি।
পথিক, ও লৌহজীবী পথিক, ঘনঘন হাওয়া টানো,
তুরুপের টানে
ঘোলা মাটি, কাঁদার জৈবিক ঝাঁজ—
পুরে নাও নাকে।
রয়েছে বহু দেনা, শ্বাসনালিকায় ফুলে ওঠা ঢোলে
নাপিতের ক্ষুরের আগে—
যতটুকু বিশ্বাস নিয়ে পেতে দেয়া হয় গলা,
ততটুকু বিশ্বাসও শহরকে আর যায় না করা।
পৃথিবীর অদ্ভুততম গ্রামের সিন্ডিকেটে ঢুকে যাচ্ছি।
পদাতিক প্রহরী—
ক্যাপে স্যালুট লুকিয়ে অপেক্ষা করছে
কখন আসবে সা'ব...
বাংলোর দরোজা খুলে, ঢুকে পড়বে
উলঙ্গ মদের বোতল রগড়াতে রগড়াতে
ছিপি খুললেই দেখা যায় যার নদীর উপর
আকাশের ছাউনি, রূপকথার চৌত্রিশ রজনী
গল্পের শাবল নিয়ে বসে আছে সে-তৎপর নিড়ানি।
স্কন্ধের ফেরেশতা, ও জানের জিগারেরা,
লেখো, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।’
আমি পড়ছি, 'ইকরা...'
সৃষ্টিকর্তার যাবতীয় সৃষ্টির প্রতি,
আমি পড়ছি 'ক্বুল!'
যখনই ইশারা করল তাঁর তর্জনী
তেরো কলস জ্যোৎস্না ভেজা জলে
আমি তুরুপ ফেলি।
পথিক, ও লৌহজীবী পথিক, ঘনঘন হাওয়া টানো,
তুরুপের টানে
ঘোলা মাটি, কাঁদার জৈবিক ঝাঁজ—
পুরে নাও নাকে।
রয়েছে বহু দেনা, শ্বাসনালিকায় ফুলে ওঠা ঢোলে
নাপিতের ক্ষুরের আগে—
যতটুকু বিশ্বাস নিয়ে পেতে দেয়া হয় গলা,
ততটুকু বিশ্বাসও শহরকে আর যায় না করা।
12 April 2018
সুপ্রিয় সঙ্গীত- সাদিয়া সুলতানা
সুপ্রিয়
সঙ্গীত,
আজ আমার মন ভাল নেই। মন ভাল নেই বললে
ভুল হবে। আজ আমার মন খুব খারাপ। তোমার ভাষায় আজ ‘খুব বরষা দিন’। ভেতরেও। বাইরেও।
সেই ভোর রাত থেকে ছন্নছাড়া বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছেই। তবু মেঘেদের ওজন কমছে না
কিছুতেই। দু’দিন ধরেই ঢাকায় খুব বৃষ্টি। একটানা ঝরছে। থামবার নামটি করছে না। ঘরে
বসে থেকে থেকে এমনিতেই বোর হচ্ছি। তার ওপর মনের মাঝেও বরষার প্রভাব। আজ বৃষ্টি না
থাকলে বাইরে বের হতাম। সারাদিন বৃষ্টির মতই সৃষ্টিছাড়া এদিক ওদিক। একা একাই গোটা
ঢাকা চষে বেড়াতাম। ঘুরতাম, খেতাম, শপিং করতাম। কতক্ষণ লাগত বল মন খারাপ ঠিক হতে?
অবশ্য ঢাকার বৃষ্টি আর আগের মত
উপভোগ্য নয়। বরং উপদ্রবও বলতে পার। বৃষ্টি এলেই এখন স্বস্তির চেয়ে শংকা বেশি। দৈব
দুর্বিপাকের সাথে দৈব দুর্ঘটনাও যোগ হয়। রাজপথের এখানে হাঁটু পানি তো সামনেই তা
কোমর ছোঁয়। ঢাকনা বিহীন অদৃশ্য ম্যানহোলের পাঁকে জীবনও যেতে পারে। কর্তৃপক্ষের বেহিসেবি খোঁড়াখুঁড়িতে রাস্তাগুলো ধুঁকছে। ঢাকাবাসীর অবস্থা অনেকটা জলবাসী কৈ এর
মত। জল-ডাঙার খেলায় সবার ভীষণ ছটফটে অবস্থা। ঢাকা এখন খুব দ্রুত বদলাচ্ছে। মানুষের
মনের মত। চেনা ঢাকাকে তুমি এখন একদম চিনবে না সঙ্গীত। নব্বইয়ের ঢাকায় এখন বিড়ম্বিত
মানুষের দুঃসহ জীবন।
আয়না- রত্নদীপা দে ঘোষ
১
ততবার বেসেছি। অই যে
মাদক-রসিলা।
নেশার তছবিরদানা। সম্মোহন দলা
পাকিয়ে।
গলার কাছে উঠে আসা। এবাদতের
কিংশুক। বারবার ইচ্ছে করে।
নিরানব্বইভাগ অন্যকোণে। তারে
চাই। রা-কাড়া ইশারা ইংগিত। ইচ্ছা করে।
ভিক্ষাদাত্রীর পায়ে দেড় বছরের
বৃত্ত কাটতে কাটতে। আয়তকারে কাঁদি।
দীক্ষা নিই খুকুতারা।
নীহারিকা খোয়ানো পরশ।
শোনো তুমি। চাই তোমাকে। এই
শরীরে । নবাগত আদরের সাড়ে তিন হাত কায়দা।
সুদর্শন গুম্ফাটি। ক্ষিপ্রপাখির নখরজমি।
সুদর্শন গুম্ফাটি। ক্ষিপ্রপাখির নখরজমি।
শানিত ঝাপটের মত পেরোতে চাই।
তোমার হু – শ – শ কোরে উড়ে যাওয়া চেতাবনির আয়না।
মুক্তগদ্য- দেবাশীষ ধর
□▫□
অনেকদিন পর শ্যামু একটি লাল শাড়ি পড়েছে, কপালে
লাল টিপ। বুকের উপর লাল ব্লাউজ,যখন এইমাত্র সূর্য ছাদে এসে দেয়ালে
মানচিত্র আঁকে শ্যামুর লাল
শাড়িতে মানচিত্র সাজতে থাকে। এখানে কোন কাঁটাতার বাসা বাঁধে না, রেডলাইট সিগনাল নেই, ব্যারিকেডের কোন
আওয়াজ নেই। আছে শুধু বাতাসের কাই মাখা ছান্দিক
মিছিল, এরপর অনেক অনেক লাল চুড়ির শব্দ, হাতের উপর গ্রাফিতির রংধনু। এবার
শ্যামু তাঁর কোমরের উপর ট্যাটু আঁকে, সেই ট্যাটু
নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ডাংগুলির খুঁজে।তাঁর প্রিয় ঘাসের উপর যেখানে শঙ্খনদী এসে প্রতিরাতে আদর করে যায়।
তখন অমাবস্যা ছিলো, ডাঙ্গুলিটি হারিয়ে গিয়েছিলো ঘাসের ভেতর...
গুচ্ছ কবিতা- জাকিয়া এস আরা
যেভাবে পার জীবন
সাজাও
জীবন সাজাবার দিন,অথচ তুমি
অতীত নিয়ে বসে আছ!
ভুলে যেও না, এখন কাঁঠালের
আমসত্ত্ব বানানো দিন
রঙিন অতীত সাঁতার কাটুক তোমার
হ্রদের লেকে
স্বজনেরা ফেলে রেখে গেছে
জান্তব অহম
সেই অহমকার বালুর চরে,
গোবেচারা ভেড়ারা চরে!
ভোরের শিশির স্নাত মানবের
লালসায়,
কাশবনে পড়ে থাকে পুরুষের
স্খলিত বীর্য, বালিকা
জীবন কেড়ে নেয় শকুনে, দাহ
হয়না!
Subscribe to:
Posts (Atom)