হেমন্তের বিচ্ছেদ
সজোর বর্ষণ নেমেছিল দুচোখ ভরে
হৃদয় আকাশ ভরা কালো দুঃখ মেঘ
৩২ টি হেমন্ত -যেন এইতো সেদিন
সিড়িতে বসে পাশাপাশি , মেনে নিতে
জীবনের প্রস্তরসম বাস্তব ব্যবচ্ছেদ ।
ক’ ধাপ নিচেই পুড়ছিল শেষহীন শেষের কাব্যমালা
আমাদেরি ইচ্ছায় - স্বেচ্ছায় চির নির্বাসনে !
এতটুকু মান নেই , নেই অভিযোগ
শুধু চোখ চিক চিক হোয়াং হোর
বালুতট - মাঝে
দুফোটা জল
সযত্নে মেখে নিলাম গণ্ডে – মেলাবো
আজীবন আমারি যমুনার ধারাপথে ।
হেমন্ত ভালোবাসাকে দ্বিখণ্ডিত করে
ভাসিয়ে দেওয়ার তরে বো -হাই উপসাগরে
দূর-দূরান্ত হতে অমোঘ শর্তহীন ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি
আঙ্গুলে লেখালেখি সিঁড়ির ধুলিতে
শতপদের রেখে যাওয়া পদচিহ্নর মাঝে ।
আবারো কখনো হবেনা, হবেনা দেখা জেনেও
দিলাম জানিয়ে , বিচ্ছেদের দেহ দুটি দুপথে ।
আমি সাথে নিয়ে যাবো হটাৎ পাওয়া
ভালোবাসার মৃগনাভি সম সুগন্ধি আঁধার
আমি সবেগে টেনে নিলাম নিলাম বাওলিকে
আমার কাধে, বুকে, ঠোঁটে শেষবারের মত ।।
সোনালী প্রত্যুষের প্রতীক্ষায়
কে রয়
প্রতীক্ষায় পাহাড়ের গায়
আকাঙ্ক্ষিত
একটি সোনালী সকালের তরে
মেঘে
ঢাকা রয় লালচে আভায় সোনালী স্বপ্ন বাসরে
সাঁঝের
ক্লান্ত তারা দেয় আশা – ওরে দাড়া !
সময়
যায়নি হয়ে শেষ মেঘেরও আছে তাড়া
প্রতিটি
বিপ্লব প্রসবকালে ওঠে বিদীর্ণ যাতনা
এই
অলঙ্ঘিত নিয়ম মেনে বুকে বেধে আশা
তারুন্যের
সমাবেশ ঘটা যে মুখে নেই ভাষা
কি
প্লেটো , সক্রেটিস , কোপার্নিকাস , আইনস্টাইন , রবি ঠাকুর
ভাবলেশহীন
মৃত্তিকায় দিয়েছে ঢেলে সহস্র ধারা
তবেইনা
অবসান প্রতীক্ষার শত কোটি প্রহর
এনেছে
বিজয় মুক্ত সহজিয়া জীবন মানুষের ।।
শ্রাবণ ধারাপাতের শেষাঙ্কে
প্রেয়সী আসেনা বরষন মাথায় এলোকেশে
গুড়িগুড়ি মুক্তোর দানা শরীরে কাঁঠালিচাপা
আহা, আম্রভোজনে দ্বিপ্রহরের সৌরহীন দিবস
মন চাইছে বড্ড তোমায় সোঁদা বিছানায়
নিবিড় যৌনডোরে নিয়ে বেধে সরবে গরবে ।।
বিদায়ের বাঁশি
আমি
হন্যে হয়ে ঘুরেছি নগরে
তন্ন
তন্ন অনুসন্ধানে বরষার কদম পুস্প
আমি
কুঞ্জবাটিতে দীর্ঘবীথিতে
প্রহর
কাটিয়ে প্রমোদ হটিয়ে
পেয়েছি মুর্মূষু কদম শিশু
আমা আর
শ্রাবণ যৌথ রোদন
বাজাল
বিদায় বাঁশী ।।
ক্ষুব্ধ তারুণ্য
গঞ্জিত তরুন ত্যাজি অর্জন
প্রতীক্ষায় বঞ্চিত অরুন দ্বারে
পরিযায়ী পক্ষীশাবক পরিম্লান
তমসাবৃত চরাচরে অন্তহীন চলাচল
আসেনা অরুণ সপ্তপদী রঞ্জনে
তিমিরেই স্তব্ধ তারুণ্য তারণি রহিত সর্বাংশে ।।
সুর
গেল ছয়টি যুগ গৃহহীন আমি
ঘুরি ফিরি আপন বলয়ে
স্বাধিকারহীন ,নতজানু
নিজভুমে প্রতিকারহীন
উত্তাপময় জীবনযাপন
প্রতিরোধ আর প্রতিশোধে
কাটে অনন্ত সময় সশস্ত্র
যোদ্ধাদের সমাহারে ।
শত অনিয়ম আর হাজারো
অলঙ্ঘনীয় ললাট লেখাকে
মুছে ফেলে এখানেও জন্ম হয়
হয় মৃত্যু, চলে ভালোবাসা
জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার নিকেশ।
প্রতিদিন ভোরের রক্তিম আকাশকে
রেখে বায়ে দক্ষিনমুখী
হই নত সেজদাতে
দুহাত তুলে মাগি অবসান
এই বারুদ মাখা জীবনের,
বলি আর যেন হয়না
যেন বয়না কারো রক্তস্রোত
না যেন শুনি গুলির শব্দ
অ্যাম্বুলেন্সগুলো যেন থাকে থেমে
অপরান্হের ক্লান্তিমাখা অবসরে
একটি দিন, ঈশ্বর মাত্র একটি দিন
দাও ক্ষান্তি , ছেদ কাটো মায়ের
কোল খালি করার বীভৎস বাসনায়।
ঈশ্বর বধির , পক্ষপাতে দুষ্ট
ব্যাস্ত সাজাতে প্রথম পাঠানো কিতাবেরে।
রাস্তায় চলে শোকের মিছিল লাশ কাধে
বালকেরা মারে ছুড়ে পাথর
সাঁজোয়া যানে, নির্ভীক চিত্তে
হয়ে গেছে তা নিত্য দিনের খেলা,
জন্ম তাবুতে কাঁটাতারে ঘেরা
গোলার কানফাটা আওয়াজ
নিয়ে শিশুরা প্রথম চোখ তুলে দেখেছে
লাল ক্রস মাথার উপরে
নয় নীল আকাশ,শত বিড়ম্বনার
ভিতরেও মায়ের স্নেহদৃষ্টি, গোলাপী
ঠোটের স্পর্শ,দেখেছে কঠিন অবয়বের পিতাকে
একে-৪৭ ঝোলানো কাঁধে, ডাকছে
মুক্ত করার প্রলম্বিত পথে,স্বাধিকার আদায়ে।
কালো পাথরে চুমু খাওয়া তামাম কওম
এক নয় কখনো , বিচ্ছিন্ন হাজারো পথে
আমাদের পথে আমাদের সাথে নেই কেউ
একাকী লড়ি কঠিন সংগ্রামে,শত্রুর
আহারে উদরপূর্তি, কি নির্মম দয়ার
পুতুল হয়ে বেচে থাকা , মৃত্যুতে নির্ভয়
তাই বেধে নেই সবুজ পটি মস্তকে
হাতে তুলি অস্ত্র, উচ্চারিত হয় কালেমা
শরিক হই সদ্য শহীদানের
শোকের কাফেলায় , গেল ছয়টি যুগ ধরে ।।
No comments:
Post a Comment