নবনীতা কে আমি চিনতাম। ঠিক চিনতাম বললে ভুল হবে। আয়নায় বহুবার নিজেকে দেখার চেষ্টা করেছি, বার বার ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছি খোলস দেখে, মানুষটাকে দেখা হয়নি। সেই অর্থ নবনীতারও খোলস দেখেছি। একটা মানুষের মত। মানুষ বটে তবে মেয়ে মানুষের মত। মাথায় দীঘল কালো কেশের বাড়াবাড়ি কোমর ছাড়িয়ে ভারী নিতম্ব অব্দি। অনেকটা পঞ্চভুজ আকৃতির একটা ছোট্ট কপাল তার নিচে কুচকে যাওয়ার জোঁকের মতো বাঁকানো এক জোড়া ভ্রু। যেখানে কোমল হাতের স্পর্শ আছে। তার নীচে ঘন কালো গভীর খাদের মতো এক জোড়া চোখ। স্বচ্ছ দীঘির জলের চারিপাশে ঘন জঙ্গলের মতো আচ্ছন্ন করে রেখেছে চোখের পাপড়ির দল। দুই জলাধারের মাঝখান দিয়ে লম্বা সুউচ্চ নাসিকা তার দু পাশে তুলতুল কপোল। সেখানে কালো কৃষ্ণ তিলক আছে, হাঁটলে টল টলে হয়ে উঠে। আরো আছে হাসির প্রতিক্রিয়ার আধ-মাখা মন্ড, ময়রার হাতে মাখানো।
কপোল ছাড়িয়ে নিচের দিকে নামতেই দুটো পথ অনেকটা জোরেশোরেই এক সাথে মিশে গিয়ে পথের ইতি ঘটিয়েছে। এরপর অনেক গভীর গিরিখাতের মত গ্রীবা। হ্যা আমি তাকে দেখেছি এ পর্যন্তই কিংবা তার চাইতে বেশী। রক্তাভ টকটকে নেশা ধরা মাদকতাময় তার সোনারং শরীর। কিশোরী থেকে চরম চটুল মেয়েটার উচ্ছলতায় চারিদিকে হৈ-রৈ পড়ে যেত। আর যৌবন সে তো পথ হারানোর এক নিমগ্ন কারিগর। এরপর ভর যৌবনের মৌ বনে অহর্নিশ মধুকর কলকাকলীতে ভরে উঠলেও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যস্ততা একসময় বাস্তবতা উঠে উঠতে থাকে।
রিজেন্সীর মালিকের সাথে কন্ট্রাক্টটা ডিল করতেই হবে। হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। যদি সফল হতে পারে তাহলে নবনীতার ডিরেক্টরশীপ, গাড়ি কোম্পানী থেকে একটা ফ্লাটের মালিকানা আর একটা তাপমাত্রা সুনিয়ন্ত্রিত গাড়ি। পাতলা ফিনফিনে জামাটাও গরমে ভিজে উঠে হিমেল হাওয়া পাওয়ার জন্য। সি-প্যলেসের ডাবল স্যুটটার অনেক গুরুত্ব। মানুষের জীবনকে কত সহজেই না ভু মন্ডল থেকে আকাশে উড়িয়ে নভোমণ্ডলে নিয়ে যেতে পারে। ভদ্রলোক মোটেও না করলেন না। গোলাপের মতো ফুটে থাকা অধর যুগলের আবদার উপেক্ষা করবে এমন অভদ্র পুরুষ কালে ভদ্রে জন্মায়।
নবনীতার শরীরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের প্রভাব পড়তে শুরু করে। শীতল শরীর থেকে মাদকতায় ভরা সুবাস বের হয়ে পুরো রুম মৌ মৌ করতে থাকে। ভদ্রলোকের হাত থেকে কলম পড়ে যায়। চোখ দুটি প্রথমেই স্থিতু হয় নবনীতার চোখের দিকে। যার চোখ জ্বল-জ্বল করছে, উত্তপ্ত নিশ্বাস দু ফুট দুর থেকে বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ঘন ঘন নিশ্বাসে বার বার ফুলে উঠছে নাকে বাঁশি। চোখ ছাড়িয়ে কপোল এরপর গোলাপের মত ঠোঁট, এরপর ক্রমশ শ্বেত শুভ্র গ্রীবাদেশ ছাড়িয়ে একেবারে বুকের ভাজে এসে থামে। নবনীতার মুখের কোন শব্দ কানে না গেলে বুকের ভিতরের ধরাস ধরাস করে যে ঘন্টা ধ্বনি বাজছে তা তার কান পেরিয়ে মগজের নিউরন গুলোকে আন্দোলিত করে। মুখটা অস্বাভাবিক ভাবে লম্বা হয়ে আসে। চোখের পলকে শরীরের সমস্ত জামা কাপড় মরা পাতার মতো পলকে খসে পড়ে। শরীরে লম্বা লম্বা পশম গজাতে শুরু করে, পেছনের দু পায়ের মাঝখানে একটা দন্ড থির থির করে কাঁপতে থাকে। কান গরম হয়ে নিচে দিকে ঝুলে পরে ক্রমশই বেরিয়ে আসা মুখ গহ্বরের জিহ্বার ডগা থেকে এক ফোটা রস নিঃসৃত হতেই নবনীতা চমকে উঠে।
চোখ ঝাপসা হয়ে আসে, খুলে যায় তার বক্ষবন্ধনীর সমস্ত দুয়ার। এক ঝাটকায় সদ্য লোমশ ধারণ করা ব্যক্তিটি স্তন খামচে ধরে। প্রচন্ড গতিতে বর্তুলাকার স্তনের আশে পাশে ঘুরতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে ত্রিভূজাকৃতির মখমলের উপর কারো অস্তিত্ব অনুভূত হতে থাকে। চোখ খুলেই লোমশ প্রাণীটির চেহারা পরিষ্কার হয়ে উঠে। বুকের উপর দুটি থেকে চারটি কিংবা ছয়টি স্তনের বোটা গজিয়ে গেছে। সঙ্গী কুকুরটি তার সাথে সাথে এক দুর্দান্ত রতি ক্রিয়ার লিপ্ত হয়ে গেছে। আবেশে ভঙ্গুর হতে হতে নিজের কাছে জানতে চাইছে সে তো মানুষই ছিল। এই কুকুরটার কি অসীম ক্ষমতা যে কিনা তাকে কুকুর বানিয়ে দিয়েছে।
-০-
No comments:
Post a Comment